রাজেকুজ্জামান রতন
ঋণ খেলাপি আমাদের ব্যাংকিং ব্যাবস্থার জন্য একটি যুক্ত ক্ষত। জনগণের আমানত নিয়ে ব্যবসা করবে কিছু মানুষ। তারা জনগণের টাকা দিয়ে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাবেন, নিজেরা প্রতিষ্ঠিত হবেন, কিন্তু তারা তাদের ঋণ পরিশোধ করবেন না, উল্টো এই ঋণ আরো বাড়তেই থাকবে। যা আমাদের অর্থনীতিকে প্রচ-ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।
ইতিমধ্যে আমাদের দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১.৫ লক্ষ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আরও কিছু কথা আছে তা হচ্ছে, ব্যাবসায়ীদের ঋণ মাফ করে দেওয়া হয়। তার পরেও তার পরিমাণ ৮০ হাজার কোটি টাকার উপরে। তবে খেয়াল করার মত বিষয়, প্রভাবশালী ঋণ খেলাপিরা এখনো সরকারের আনুকূল্য পেয়েই যাচ্ছে।
৪০১ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি বলে আমাদের ১.৫ লক্ষ কৃষকের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়। আর সেখানে একজন মানুষই ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে সেটিকে তিনি মন্দ ঋণে পরিণত করে ফেলেন। আর এই সকল লোকদের সরকার এবং ব্যাংক বলে থাকে, তাদেরকে আরো ঋণ দিতে হবে যাতে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখতে পারে। ঋণ খেলাপি এবং ক্ষমতায় যাওয়া এই দুইটি শ্রেণি হাত ধরাধরি করে চলছে। ক্ষমতাশীনদের প্রশ্রয় আর আশির্বাদ ছাড়া কেউই ঋণ খেলাপি হতে পারবেনা। ক্ষমতশীনদের প্রশ্রয় নিয়ে ব্যাবসায়ীরা তাদের ঋণ আরো বাড়াতে থাকে।
তাহলে আমাদের অর্থনীতিকে এই খেলাপি ঋণ থেকে মুক্ত করতে চাইলে প্রথমত ক্ষমতাশীন এবং ঋণ খেলাপিদের যে সেতু বন্ধন রয়েছে তা আগে ভাঙ্গতে হবে।
যা দেশের ব্যাংকের গতিশিলতা দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এবং ব্যাংক ব্যাবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্যই তা জরুরি। দেশে বড় বড় ঋণ খেলাপি, তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের অনেকের পরিচিতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু তাদের এখন পর্যন্ত কোনোভাবেই আইনের আওতায় আনা হয়নি।
পরিচিতি : কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য, বাসদ/মতামত গ্রহণ : তাওসিফ মাইমুন/সম্পাদনা : রেজাউল আহসান
আপনার মতামত লিখুন :