ঢাবি প্রতিনিধি : আগামী বছরের মার্চ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের লক্ষ্য ঠিক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ জন্য অক্টোবরে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে আলোচনা শেষে এমন পরিকল্পনার কথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, আমরা টার্গেট মেনেই ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২০১৯ সালের মার্চে ডাকসুর নির্বাচন হবে। আগামী মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ হবে।
‘কোনো হটকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন করা যাবে না। ছাত্র সংগঠনের নেতারা কেউ বলেছে অক্টোবরে নির্বাচনের আয়োজন করতে। কেউ বলেছে জাতীয় নির্বাচনের পরে দিতে। আমরা আমাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা করবো।’
সবগুলো সক্রিয় ছাত্র সংগঠন যেন ক্যাম্পাসে অবস্থান করে রাজনীতি করতে পারে সে বিষয়ে প্রভোস্ট কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়ে। কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না হয় সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
প্রায় চারঘণ্টার আলোচনা শেষে উপাচার্য বলেন, ছাত্র সংগঠনগুলো মধুর ক্যান্টিনে আসবে এ বিষয়ে প্রশাসনিক কোনো বাধা নেই।
রোববার সকাল পৌনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় সংলগ্ন আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এ সভা শুরু হয়।
আলোচনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহম্মদ সামাদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড.একেএম গোলাম রব্বানী।
ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, ছাত্রদলের পক্ষে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান, ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকি উপস্থিত ছিলেন।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব বাম দলগুলোর নেতারা মিটিং শুরুর প্রায় ৩০ মিনিট পর সেখানে উপস্থিত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা। জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্রমৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টসহ বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রদলের প্রতিনিধি দলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা দিয়ে আলোচনা সভাস্থলে নিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন সহকারী প্রক্টর।
প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচনের পর বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেই নির্বাচন আর হয়নি।
ছয় বছর আগের একটি রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে এবছরের ১৭ জানুয়ারি এক রায়ে হাইকোর্ট ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়।
কিন্তু সাত মাসেও নির্বাচনের কোনো উদ্যেগ দৃশ্যমান না হওয়ায় গত ৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উকিল নোটিস পাঠান রিটকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
জবাব না পেয়ে গত বুধবার তিনি হাই কোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয় উপাচার্যসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় ১৬ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কার্যালয় সংলগ্ন একটি কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :