মিঠুন মিয়া : বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য, ‘স্যার সামনের নির্বাচনের আগেই সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা সম্পন্ন হলে ভালো হত। কারণ নির্বাচনের আগে ও পরে কি হয় বলা যায় না! কাজেই নির্বাচনের আগে পরীক্ষা হলে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যেত।’ আরেক শিক্ষার্থীর বক্তব্য,‘স্যার এবারের নির্বাচনও কি আমাদেরকে ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে বিরত রাখবে।’ এ বছরের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে জনজীবনে এক ধরনের প্রভাব পড়তে শুরু হয়েছে। সবার লক্ষ্য নির্বাচনের আগেই অনেক কিছুই সম্পন্ন করা চাই। যেন নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতি কিংবা ঝামেলায় পড়তে না হয়। মোটকথা নির্বাচনকে ঘিরে এখন থেকেই কমবেশি সবার মাঝে এক ধরনের জনউদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা লক্ষণীয়। কর্মব্যস্ততা, নতুন পরিকল্পনা, টার্গেট পূর্ণ করা কিংবা ঢেলে সাজানো অনেক কিছুই। লক্ষ্য নির্বাচন। কারো কারো মাঝে উঁকি দিচ্ছে ভয়-ভীতি কিংবা আতঙ্কও। নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রাণসস্বরূপ। ভালো গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু সেই নির্বাচন নিয়ে কেন এতো ভাবনা, উৎকণ্ঠা কিংবা দুঃশ্চিন্তা? নিসন্দেহে বলা যায় মানুষের মাঝে এমন জনউদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা জন্ম দিয়েছে গত নির্বাচনগুলো। বিগত নির্বাচনে মানুষে মাঝে যে অস্থিতিশীল, সহিংস তিক্ত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার সঞ্চয় হয়েছে, সেই বিষয়গুলো এমনও উঁকি দেয়। মানুষকে ভাবায়।
নির্বাচনের আগেও হামলা সংঘর্ষসহ এক ভয়াবহ রাজনীতি বিরাজ করে। বর্তমান সরকার সেই সহিংস রাজনীতি দৃঢ় হাতে দমন করে দেশকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসে। কাজেই আগামীর নির্বাচনও কি সেই দূর সময়ের রাজনীতির পুরাবৃত্তি ঘটাবে? সেই ভাবনা জনমনে জন্ম নেওয়া অস্বাভাবিক কিছুই নয়। কাজেই সবার প্রত্যাশা আগামী একাদশ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু রাজনীতির দ্বার উন্মোচন করবে। নির্বাচন মানেই হত্যা কিংবা ধ্বংসযজ্ঞ নয়। নয় ভয়ভীতি, মানুষের জানমালের ক্ষতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধা না হওয়া। এবারের নির্বাচন জনমনে উৎসবের আমেজ বয়ে আনুক এমনটিই কাম্য। লেখক : শিক্ষক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :