ডেস্ক রিপোর্ট : মিয়ানমারে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য তৃতীয় দফায় ত্রাণ সহায়তা পাঠাচ্ছে ভারত। এবারের ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ১১ লাখ লিটারেরও বেশি সুপার কেরোসিন তেল ও ২০ হাজার কেরোসিন স্টোভ চুলা। বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা আগামীকাল সোমবার কক্সবাজারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর করবেন। সেদিনই তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন।
সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত বছরের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গা ঢল শুরুর পর এটিই হবে ভারতীয় হাইকমিশনারের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে প্রথম সফর। আর একে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত মাসে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতেও আলোচনা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে ভারত আগামীকাল যে মানবিক সহায়তার তৃতীয় চালান তুলে দেবে।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেছেন, গত বছরের আগস্টের দিকে ভারতের যে অবস্থান ছিল তার তুলনায় এখন অনেক বদলেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের অবস্থান এখন বাংলাদেশের অবস্থানের অনেক কাছাকাছি। বিশেষ করে, ভারত মনে করে যে রোহিঙ্গাদের রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাওয়ার মধ্য দিয়েই এ সংকটের সমাধান সম্ভব।
তিনি আরো বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ সৃষ্টিসহ বাড়িঘর নির্মাণে ভারত মিয়ানমারকে সহায়তা দিচ্ছে। মিয়ানমার এ পর্যন্ত যে সব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলোর পেছনে ভারতসহ এ অঞ্চলের প্রভাবশালী দেশগুলোর চাপ কাজ করেছে। ভারত রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান চায়। কারণ এ সংকটের সমাধান না হলে তার প্রভাব পুরো অঞ্চলে পড়বে।
জানা গেছে, গত এক বছরে জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভারত ভোট দেয়নি। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ভারতের কাছে আরো জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করে।
রোহিঙ্গাদের জন্য ভারত তার ‘অপারেশন ইনসানিয়াতের’ আওতায় গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ৯৮১ মেট্রিক টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছিল। ওই চালানে চাল, ডাল, চিনি, লবণ, ভোজ্য তেল, চা, তাৎক্ষণিক খাওয়ার উপযোগী নুডুলস, বিস্কুট, মশারি ইত্যাদি ছিল। গত মে মাসে ভারত দ্বিতীয় দফায় ৩৭৩ মেট্রিক ট্রন ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ছিল ১০৪ মেট্রিক টন গুঁড়ো দুধ, ১০২ মেট্রিক টন শুকনো মাছ, ৬১ মেট্রিক টন শিশু খাদ্য এবং বিশেষভাবে বর্ষা মৌসুমের জন্য অর্ধ লাখ রেইনকোট ও অর্ধ লাখ গামবুট। ওই দুই দফা চালানই ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের কাছে চট্টগ্রামে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
সূত্র : কালের কন্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :