শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:০০ সকাল
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারই হতে যাচ্ছে অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র!

সুজন কৈরী : রাজধানীতে অবস্থিত পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগার এবং তার আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে।  সরকার এ নিয়ে এক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এতে কারাগারটির সাথে জড়িত সকল প্রকার ঐতিহাসিক স্থাপনা তথা ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও কারাগারের ইতিহাস সংরক্ষণের পাশাপাশি পুরাণ ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ হবে।

প্রকল্পে বিশাল সবুজে ঘেরা পুরো এলাকার মাঝেও থাকবে বিশাল জলাধার ও আধুনিক নির্মাণ শৈলীর জাদুঘর থেকে শুরু করে সুইমিং পুল, জিমনেশিয়াম, নাটকের মঞ্চ, আধুনিক কার পার্কিং সমৃদ্ধ সিনেপ্লেক্সযুক্ত মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
শতকরা ৭০ ভাগ সবুজে ঘেরা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে পুরাতন ঢাকার একমাত্র বৃহত্তম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে পুরাণ ঢাকার বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়নে তৈরী করা হবে এলাকার সবচেয়ে বড় উদ্যান ও পার্ক।

সম্পূর্ণ সরকারী অর্থায়নে প্রায় ৬০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২০ এর ডিসেম্বরে। প্রায় চল্লিশ একর জমিতে স্থাপিত পুরণো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার মধ্যে ২১ দশমিক ৯০ একর জমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ স্থানটিতেই পুরণো মূল কারাগারটি তৈরী করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে পাল্টে যাওয়ার পর দেশ বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ জানতে ও স্বচক্ষে দেখতে আসবেন রাজধানী ঢাকা তথা পরাধীন বাংলার ঘৃন্য ও মুক্তিকামী লক্ষ কোটি মানুষের বঞ্চনার ও কারাবরণের নানা ইতিহাস। কেন্দ্রীয় কারাগারটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনকারী দেশপ্রেমিক অসংখ্য বাঙালির ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত স্থান। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন হতে শুরু করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত আন্দোলনকারী অসংখ্য দেশপ্রেমীক এই কারাগারে কারাবরণ করেছেন। কাটিয়ে দিয়েছেন জীবন যৌবনের মূল্যবান সময়। পুরণো কারাগারের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভবন তথা স্থাপনা দেখে ও তার ইতিহাস পড়ে জানতে পারবেন ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে সর্বশেষ মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতায় অবদান রাখা বীর বাঙ্গালীদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে কারাগারে আটক হওয়া রাজবন্দীদের ইতিহাস। নবাব সিরাউদ্দৌল্লাহর পতনের পর ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনামলে ১৭৮৮ সালে একটি ক্রিমিনাল ওয়ার্ড স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ কারাগারটির প্রায় ২৩০ বছর সমৃদ্ধ ও প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে।

প্রকল্পে বর্তমানের সকল ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণ করা হবে বলে জানা গেছে। একইসাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা কারাগারের রোজনামচা বইয়ে উল্লেখিত সকল পুরণো স্থাপনাই সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়া ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সকল স্থাপনা সংরক্ষণ করা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উদ্যোগে তিন পর্বে গ্রহণ করা এ প্রকল্পটির প্রথম পর্বের মূল কাজ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা ঢাকা সেনানিবাস কতৃপক্ষ। এর পাশপাশি সহযোগীতায় থাকবে কারা অধিদপ্তর, ইএনসিজ ব্রাঞ্চ ও ওয়ার্ক ডাইরেক্টরেট। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। তবে নির্মাণের পর সার্বিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে প্রকল্পের অবকাঠামো বুঝিয়ে দেয়া হবে।

জানতে চাইলে কারামহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেনায় পুরণো ঢাকার পুরণো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জমিটির সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য সরকার একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই কারা এলাকাটিকে ঘিরে পুরাণ ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার পাশপাশি বসবাসকারী নাগরিকগণসহ সমস্ত ঢাকাবাসীর বিনোদনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে। তাই এ কারাগারটির সাথে জড়িত সকল প্রকার ঐতিহাসিক স্থাপনা তথা ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও কারাগারের ইতিহাস সংরক্ষণের পাশাপাশি পুরাণ ঢাকার ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে সরকার মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। মোট জমির ৭০ ভাগ সবুজে ঘেরা এ প্রকল্প এলাকার মাঝে থাকবে বিশাল জলাধার ও আধুনিক নির্মাণ শৈলীর বঙ্গবন্ধু যাদুঘর ও জাতীয় চার নেতা কারা স্মৃতি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। এছাড়া থেকে শুরু করে সুইমিং পুল, সকাল সন্ধ্যা হাটার জন্য প্রায় ২৭ হাজার বর্গমিটার ওয়াকওয়ে তৈরী করা হবে। এর বাইরে জিমনেশিয়াম, নাটকের মঞ্চ, আধুনিক কার পার্কিং সমৃদ্ধ সিনেপ্লেক্সযুক্ত মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্স, পুরণো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের বিশাল ফুডকোর্ট সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও কারা কর্মকর্তা কর্মচারী ও এলাকাবাসীর সন্তানদের সুবিধার্থে অতি উন্নত মানসম্পন্ন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও দুটি মসজিদ নির্মাণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়