ডেস্ক রিপোর্ট: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কোনো প্রকারের টেন্ডার ছাড়াই অর্ধকোটি টাকার সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর বাজার ও তেলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গাছকাটার সঙ্গে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিকের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসুদেবপুর বাজার হতে তেলিয়া গ্রামের প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে সামাজিক বনায়নের আওতায় রোপন করা প্রায় পনের শতাধিক গাছ টেন্ডার ছাড়াই কাটা হচ্ছে।
স্থানীয় গাছ ক্রেতা শাহিন মিয়া ও রকি মিয়া নামের দুই কাঠ ব্যবসায়ী জানান, চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান ও সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের সভাপতি সবুজ মিয়ার সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের থেকে এ গাছগুলো কেনা হয়েছে।
জানা গেছে, তালুককানুপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর তেলিয়া গ্রামের প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে সামাজিক বনায়নের আওতায় প্রায় ১৬/১৭ বছর আগে ইউক্লিপটার্সসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। গাছগুলো পরিপক্ক হওয়ায় কোনো প্রকার টেন্ডার ছাড়াই সুযোগ বুঝে এ সড়কের প্রায় ১৫ শতাধিক গাছ গত কয়েকদিন থেকে কাটা শুরু করেছে। নিয়ম না মেনে এ গাছগুলো কাটা হচ্ছে। নিয়মানুসারে ডিসির নির্দেশে সংশ্লিষ্ট ইউএনও পরিপক্ক গাছ বিক্রির জন্য টেন্ডার করার কথা। কিন্তু সরকারি এই নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গল দেখিয়ে এসব গাছ কাটার মহোৎসব চালাচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার এ খাত থেকে বিপুল পরিমান টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাসুদেবপুর এলাকার পূর্মিলা রানী নামের একজন বলেন, আমাদের কালিমন্দিরের সামনে একটি বড় ইউক্লিপটার্স গাছ ছিল সেটাও জোর পূর্বক তারা কেটে নিয়ে গেছে। এদিকে সরকারি নিয়মনীতি ছাড়া বিনা টেন্ডারে অবৈধভাবে এসব গাছ কাটা ও বিক্রির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে গাছ কাটা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।
ওই এলাকার হারুন বলেন, ‘ইউএনওকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু যারা গাছ কাটা বন্ধ করবেন, তাদেরই ম্যানেজ করে গাছগুলো কাটা হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের সভাপতি জহুরুল ইসলাম সবুজ বলেন, ৪৪২টি গাছ টেন্ডার করা হয়েছে। বাকি গাছগুলো টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করা হয়েছে। সেখানে ১ হাজার ২শ’ গাছ রয়েছে। এরমধ্যে ৪৪২টি গাছ ২৬ লাখ টাকা বিক্রি করা হয়েছে। গোপন করার কিছু নেই।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ ফরেষ্টার অফিসার মিজানুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই। তালুককানুপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমি একটু বাহিরে আছি। এ বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে পরে সাক্ষাতে কথা হবে।
গোবিন্দগঞ্জের ইউএনও রামকৃষ্ণ বর্মণ বলেন, আমি চেয়ারম্যানকে বলেছি কাগজপত্র দেখাতে। সেখানে শুধু গাছকাটার বিষয়ে রেজুলেশন করা হয়েছে। কিন্তু টেন্ডারের কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি। সরেজমিনে তদন্ত করে সেখানে যদি কোন অনিয়ম থাকে তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্র:ডেইলি বাংলাদেশ
আপনার মতামত লিখুন :