শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৩:৫৭ রাত
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৩:৫৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নকল ওষুধ বন্ধে সরকার কী করছে?

হাসান হামিদ : শুরুতেই গল্প। এক ডাক্তার অনেক আশা নিয়ে আমেরিকায় গিয়ে অনেক চাকরী খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে নিজেই একটি চেম্বার খুলে বসেন। সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন; এখানে সর্বরোগের চিকিৎসা করা হয় মাত্র ২০ ডলারে। বিফলে ১০০ ডলার রোগীকে দেয়া হয়। সাইনবোর্ড দেখে এক আইনজীবী বুদ্ধি আঁটে, এই ডাক্তারের কাছ থেকে কিছু ডলার খসিয়ে নেবে।
ডাক্তারের কাছে গিয়ে আইনজীবী বলে, আজকাল কোন কিছুর স্বাদ পাইনা। কী যে করি ডক্টর! ডাক্তার এক ডোজ কড়া বিস্বাদ ওষুধ খাইয়ে দেয়।
আইনজীবী চিৎকার করে, কী বাজে স্বাদ এই ওষুধের!
ডাক্তার বলে, এই তো স্বাদ ফিরে পেয়েছেন। এবার দিন ২০ ডলার।
আইনজীবী বাধ্য হয়ে ২০ ডলার দেয়।
বুদ্ধি এঁটে কিছুদিন পর আবার ফিরে এসে বলে, ডক্টর আজকাল কিছুই মনে রাখতে পারিনা। কী যে করি!
ডাক্তার আবার ওষুধ দেয়। আইনজীবী খেয়ে চেঁচিয়ে ওঠে, এ যে দেখছি সেই একই বাজে টেস্টের ওষুধ; গত সপ্তাহেই দিয়েছিলেন।
ডাক্তার বলে, এই তো স্মৃতিশক্তি ফিরে পেয়েছেন; এবার দিন ২০ ডলার।
আইনজীবী এবার মরিয়া হয়ে যায়। সে এক সপ্তাহ পরে ফিরে এসে বলে, ডক্টর আমি আজকাল চোখে কিছুই দেখতে পাই না।
ডাক্তার আইনজীবীকে বলে, এই নিন ১০০ ডলার; এ রোগের চিকিৎসা এখানে নেই।
আইনজীবী বলে, এ যে ১ ডলারের নোট; ১০০ ডলার কই?
ডাক্তার বলে, এই তো দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন। এবার দিন ২০ ডলার।
ডাক্তার হলেন আমাদের সবচেয়ে প্রিয় নিজের শরীর ভালো রাখার পার্থিব কারিগর; তাকে উপেক্ষা করে লাভবান হবার চিন্তা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ডাক্তারের কাছে আমরা যাই নিজেকে আরও একটু ভালো রাখতে; আর সেকারণেই আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট ও জাগতিক ভালো-মন্দ থাকার এই ভালোবাসাময় পেশাটি গুরুত্বপূর্ণ।

এখানে ভালো থাকার সাথে মন্দ শব্দটি সচেতন ভাবেই যোগ করেছি। কেননা, মহান এই পেশার কিছু মানুষ; হয়তো সংখ্যায় তারা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অপেশাদার কিছু আচরণ করছেন। আর এ কারণেই তাদের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতায় এদেশে গড়ে ওঠেছে নকল কিছু কোম্পানি। এই ওষুধ কোম্পানিগুলো টিকে আছে কারণ তারা এসবের ওষুধ (নকল) আমাদের প্রেসক্রিপশনে লিখছেন। বিনিময় তারা যাই পান, তা আমাদের সুস্থ জীবনের চেয়ে বেশি নিশ্চয়ই নয়। তবে একথা সত্য যে, এসব কোম্পানির দায় যতটা না হাতে গোনা কিছু অসাধু ডাক্তারের, তারচে হাজারগুণ বেশি দায় অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীদের।

পরশু আনন্দবাজার পত্রিকায় পড়লাম, ভারতের বাজারে জনপ্রিয় ৩২৮ ওষুধ নিষিদ্ধ করেছে তাদের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিষিদ্ধ ওষুধের মধ্যে রয়েছে পিরামলের বানানো স্যারিডন, অ্যালকেম ল্যাবরেটরির ট্যাক্সিম এ-জেড এবং ম্যাকলয়েড ফার্মার প্যানডার্ম প্লাস মলম। অবিলম্বে এ ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে বিভিন্ন কোম্পানিকে বাজার থেকে অন্তত ছয় হাজার ব্র্যান্ডের ওষুধ তুলে নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নিষিদ্ধ ওষুধগুলো ফিক্সড ডোজ কম্বিনেশন (এফডিসি) ওষুধ। অর্থাৎ, দুই বা তিনটি ওষুধ নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে যে ওষুধ তৈরি হয়। আমি জানি না, এসব ওষুধের কতটি আমাদের দেশে আসে। আর তা খেয়ে এখানে কতজন শরীরকে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে নিয়ে যাচ্ছেন না জেনেই।

আমাদের দেশে মানহীন ওষুধ তৈরির দায়ে এভার্ট ফার্মার উৎপাদন ২০১১ সালে বন্ধ করে দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করে উৎপাদন অনুমতি ফিরে পায় কোম্পানিটি। পরে সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে এভার্ট ফার্মার লাইসেন্সই বাতিল করে অধিদপ্তর। তার পরও বন্ধ হয়নি উৎপাদন। নকল ওষুধ তৈরির প্লান্ট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে সাভারের এভার্ট ফার্মার কারখানাটি।

সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হলো, বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মধ্যেই দেদার বিক্রি হচ্ছে এসব নকল ওষুধ। রাজধানীতে ওষুধের বড় বাজার মিটফোর্ডও এর বাইরে নয়। প্রায় সব ধরনের নকল ওষুধই এখানকার বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে। তবে কাটতি বেশি থাকায় অ্যাসিডিটির ওষুধের আধিক্য বেশি। নকল ও ভেজাল ওষুধের উৎপাদন প্লান্ট হিসেবে এভার্ট ফার্মা, টুডে ফার্মা, ন্যাশনাল ড্রাগ ফার্মা, সুনিপুণ ফার্মা, ইউনিভার্সেল ফার্মা, নর্থ বেঙ্গল ফার্মা, ড্রাগল্যান্ড লিমিটেড, ডলফিন ফার্মা, জালফা ল্যাবরেটরিজ, রিড ফার্মা, রেমো কেমিক্যালস (ফার্মা ডিভিশন), কাফমা ফার্মা, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ, মেডিকো ফার্মা, এক্সিম ফার্মা, বিকল্প ফার্মা, স্পার্ক ফার্মা, স্টার ফার্মা, ট্রপিক্যাল ফার্মা ও স্কাইল্যাব ফার্মা উল্লেখযোগ্য। অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধেও নির্দেশনা রয়েছে আলকাদ, বেলসেন, বেঙ্গল ড্রাগস অ্যান্ড কেমিক্যালস, ব্রিস্টল, ক্রিস্টাল, ইন্দো-বাংলা, মিল্লাত, এমএসটি, অরবিট, ফার্মিক, ফিনিক্স কেমিক্যাল, রাসা ও সেভ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ওপর।
পত্রিকা অনুসন্ধানে জেনেছি, বিভিন্ন ধরনের ওষুধ কম-বেশি নকল হলেও সবচেয়ে বেশি হচ্ছে অ্যাসিডিটির ওষুধ। এর মধ্যে আছে সেকলো, নিউটেক ও রেনিটিডিন। এর বাইরে নকল হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক, মাল্টিভিটামিন ও ব্যথানাশক ওষুধও।

উৎপাদিত এসব নকল ওষুধ বিপণনও হচ্ছে অত্যন্ত কৌশলে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সিগারেটের প্যাকেটে ভরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দোকানে দোকানে সরবরাহ করা হয় এগুলো। কখনো আবার মোটরসাইকেলে, কখনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা এমনকি রিকশায় করেও বাবুবাজার ও মিটফোর্ড এলাকায় এসব ওষুধ পৌঁছে দেয়া হয়। বোঝাই যাচ্ছে, ওধুষ শিল্পে ভয়াবহ অরাজকতা বিরাজ করছে। মানুষের জীবনের অত্যাবশ্যকীয় এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের ভেজাল দেখলে গা শিউরে ওঠে। ভেজালকারীরা এতটাই বেপরোয়া যে, মানুষের জীবন সংহারের মতো ওষুধ দেশের আনাচেকানাচে অনুমোদনবিহীন ফার্মেসিগুলোতে সরবরাহ করে চলেছে।

খারাপ লাগে একটি বিষয় ভেবে যে, ভেজাল ওষুধে বেশি ক্ষতির শিকার হয় গ্রামের সহজ-সরল সাধারণ মানুষ। ভেজালকারী এবং লাইসেন্সবিহীন ওষুধের বড় চালানগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রির জন্য তারা মূলত টার্গেট করে থাকে। তবে শহরের অনেক দোকানেও মানহীন এবং ভেজাল ওষুধ রাখার খবর পাওয়া যায়। সাধারণ একটা উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ভেজালকারীরা এসএমসির ওর-স্যালাইন নকল এবং মানহীন অবস্থায় দেশের মুদি দোকানগুলোতে পর্যন্ত সয়লাব করে ফেলেছে। এগুলো বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে তৈরি করে অবিকল এসএমসির প্যাকেটের মতো মোড়কে তারা বাজারজাত করছে।

তবে আশার কথা হলো, সরকার ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ ও ভেজাল ওষুধ তৈরি, মজুত, বিক্রি এবং আমদানি-রফতানিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। দেশের ৯৮ শতাংশ ওষুধের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ১৬০টি দেশে এখন ওষুধ রফতানি করছে বাংলাদেশ। অ্যালোপ্যাথিক আইটেমের ২০৮টি ওষুধ কোম্পানি ৩ হাজার ৫৮৮ জেনেরিকের প্রায় ৩০ হাজার ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ওষুধ বাজারজাত করছে। আবার খোলাবাজারে কোটি কোটি টাকার নকল এবং ভেজাল ওষুধও রয়েছে। যার প্রমাণ মিটফোর্ড থেকে ধরা পড়া প্রায় ২০ কোটি টাকার ওষুধের চালান। বিদেশে ওষুধ রফতানি করে দেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। কিন্তু দেশে এতদিন শুধু একটা নীতিমালা দিয়ে ওষুধ বাণিজ্য চলত। তাতে ছিল নানা রকমের জটিলতা। তাই সরকার ওষুধে ভেজাল, অবৈধ মজুত রাখলে বা প্রদর্শন করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড করারও বিধান করে আইনের খসড়া প্রণয়ন করেছে। অচিরেই তা আইনে পরিণত হবে। জালিয়াতকারীরা মফস্বল জেলাগুলোতে কারখানা তৈরি করে সেখানে অ্যান্টিবায়োটিকের মতো মানুষের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওষুধেরও ভেজাল তৈরি করছে।

ওষুধ হলো রোগব্যাধিতে জীবন রক্ষার অন্যতম উপাদান। আর তা নিয়ে যারা খেলা করেন, বিত্তবৈভবের মালিক হন, তাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া চলবে না। এসব জঘন্য প্রতারককে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। জেনে অবাক হতে হয়, এমন ওষুধ রয়েছে হারবালের- যার মূল্য তালিকা গায়ে লেখা সাড়ে ৩০০ টাকা। তাতে বিক্রেতার কমিশনই ২৫০ টাকা। এসব বিক্রেতার কোনো লাইসেন্স নেই। মফস্বলে কখনো অভিযান চালানো হলেই তারা ফার্মেসি বন্ধ করে কেটে পড়ে। মাঝেমধ্যে দুয়েকজন ধরাও পড়ে। আর বর্তমানে ওষুধ নীতিমালাটি আইনের খসড়া অবস্থায় রয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধ আমদানির বিষয়টি যদি সহজ করা হয়, তাহলে সরকার রাজস্ব পাবে। অনেক সময় দেখা যায়, দেশের কোম্পানির ওষুধই চাহিদামাফিক পাওয়া যায় না।

ফার্মেসির মালিকদেরই তা বাড়তি দামে কিনতে হয়। আর বিক্রি করতে হয় নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি। সেখানে চাহিদাপূর্ণ বিদেশি ওষুধের জন্য নিয়মনীতির মাধমে আমদানির সহজ পথ তৈরি না করলে সেই ওষুধই দ্বিগুণ-তিনগুণ মূল্যে মানুষকে কিনতে হবে। তাতে দেশের রোগীরা সবচেয়ে বেশি বিপদের মুখে পড়বে। নতুন খসড়ায় কোনো ডাক্তার আমদানিকৃত ওষুধের নাম লিখতে পারবেন না বলে উল্লেখ আছে।

এখন অতি জরুরি ওষুধটি কীভাবে সংগ্রহ করা হবে। তবে দেশে যে ওষুধ পাওয়া যায়, সেই ওষুধ ব্যবহারেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের আগে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দেশে যে ওষুধ পাওয়া যাবে না তা উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

ওষুধ শিল্পের অগ্রগতি সাধনে বিশ্বের অনেক দেশের স্বীকৃতি সনদ মিলেছে বাংলাদেশের। বিশ্ব বাজারে টিকে থাকতে হলে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ রাখা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তবে আশার কথা হচ্ছে, এবার ওষুধ আইনে সরকারের প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবছর একবার ওষুধের দাম হালনাগাদ করতে পারবে। আর বিষয়টি অধিদফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে বিধায় ক্রেতারা দামের ব্যাপারে ইচ্ছা করলেই ওয়াকিবহাল হতে পারবে। দেশে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের সংখ্যা হবে ২৮৫টি। ইউনানি ওষুধ ২২৩ এবং আয়ুর্বেদিক ওষুধ থাকবে ৩৭০টি। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ থাকছে ৩৯টি। তবে আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক এবং ইউনানি ওষুধকেও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে মোট উৎপাদিত ওষুধের অন্তত দুই শতাংশ অর্থাৎ প্রতিবছর ৩০০ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ অর্থের ভেজাল, নকল এবং নিম্নমানের ওষুধ তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, কেবল রোগী নয়, অনেক সময় চিকিৎসকদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়, কোনটি ভেজাল ওষুধ । ফলে ঐসব প্রতিষ্ঠানের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ অল্পই রয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন বন্ধের মূল দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। কারণ সেটি মালিকদের সমিতি কিংবা বিশেষজ্ঞদের কাজ নয়। আর ভেজাল বন্ধে সচেতন না হলে সাধারণ মানুষ হয়ত আবারো আমদানি করা ওষুধের ওপর নির্ভর করতে শুরু করবেন। তাতে দেশের ১৬ হাজার কোটি টাকার ঔষধের বাজার ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। সেজন্য সরকারকে এখুনি কঠোর নজরদারি নিশ্চিত এবং মান নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।

শুরু হয়েছিল গল্পে, লেখাটি শেষও করছি একটি গল্প বলে।

সাতাশি বছরের এক বৃদ্ধ বিয়ে করলেন সতের বছরের এক তরুণীকে। বৃদ্ধ বউকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেন। পরামর্শ চাইলেন, কীভাবে তাদের সন্তান হবে।
ডাক্তার তাকে একটি গল্প শোনালেন।

এক শিকারি একদিন বনে গেল বাঘ শিকার মারতে। বনে গিয়ে সে দেখল, বন্দুকের বদলে ভুল করে ছাতা নিয়ে এসেছে। হঠাৎ একটা বাঘ এল সামনে। ছাতা দিয়েই সে গুলি করল। গুলি খেয়ে বাঘটা সঙ্গে সঙ্গে মারা গেলো।
বৃদ্ধ বললো, অসম্ভব, এ হতেই পারে না।
: তাহলে কী হতে পারে?
: হয়তো অন্য কেউ বাঘটিকে গুলি করেছিল।
: আপনি ঠিক ধরেছেন।

(লেখক- তরুণ কবি ও গবেষক)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়