শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:১৮ সকাল
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ০৯:১৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কমিটি ধরে ধরেই মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা।সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ ছাড়া উত্তরায় থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের আরেক অধ্যাপক ড. মোরশেদ হাসান খান ও প্রকৌশলী আ ন হ আকতার হোসেনের বিরুদ্ধেও একই থানায় মামলা করা হয়েছে।

রাজনীতিতে এতটা সক্রিয় না থাকলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নাম থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান হজ পালন করে যেদিন দেশে ফেরেন, সেদিনই তার ঢাকার বাসায় অভিযানে যায় পুলিশ। তার ছেলে খায়রুল ইসলাম সজীব পুলিশকে জানান, হজ করে তার বাবা আজই দেশে ফিরেছেন। এ কথা বলে দরজায় এগিয়ে এলে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সারা দেশে প্রায় একই চিত্র। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি, ঢাকা মহানগর বিএনপি, কেন্দ্রীয় অঙ্গসংগঠনের কমিটিসহ মহানগর, জেলা-উপজেলা এমনকি ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি ধরে মামলা দিচ্ছে পুলিশ। বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বলা হয়, সম্প্রতি তিন হাজার মামলায় নতুনভাবে দুই লাখ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। আবার পুরনো মামলাগুলোও সচল করা হচ্ছে। এর আগে ৭৭ হাজার মামলায় ১৮ লাখ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। ঈদের পর থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে। তবে গ্রেফতার এড়িয়ে চলার নির্দেশনা রয়েছে বিএনপির হাইকমান্ডের। তাই বিভিন্ন কর্মসূচিতে ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ দলের মধ্যম সারির নেতারা কৌশলী ভূমিকায় অংশ নেন। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরা কাউকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করি না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গ্রেফতার নিয়ে বিএনপির অভিযোগ মিথ্যা। বিএনপির যেসব ব্যক্তি গ্রেফতার হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে। এসব অভিযোগের ভিডিওচিত্র রয়েছে। তিনি বলেন, তারা যদি কোনোটি নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন, তাহলে আমরা পরিষ্কার করে বলতে পারব, কী অভিযোগে ধরা হয়েছে। নিরপরাধ কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ হয়েও বিছানায় শুয়ে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামও হলেন নাশকতা মামলার আসামি। সম্প্রতি পল্টন থানায় তিনিসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আসামী করে মামলা দেয় পুলিশ।

এছাড়া গাজীপুর জেলা বিএনপি নেতা কাজী সাইয়েদুল আলম ছেলের চিকিৎসার জন্য গত সোমবার সকাল ৮টায় সিঙ্গাপুর যান। ওইদিন বেলা ১১টায় শহরে বিএনপির মানববন্ধনে লাঠিপেটা করে পুলিশ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যানবাহন ভাঙচুর করে নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় রাতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। এ মামলায় আসামি করা হয় সাইয়েদুল আলমকে। জেলার শ্রীপুরেও এমন মামলার ঘটনা রয়েছে। সেখানে আসামি করা হয়েছে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজ কাইয়াকে। অথচ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর বগুড়ার ধুনট থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে নাশকতার মামলা করে পুলিশ। এতে আবদুল খালেক সরকার (৮৬) নামের পক্ষাঘাতের রোগীকে আসামি করা হয়। তার বয়স দেখানো হয় ৩৮। আবদুল খালেক সরকার উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের নান্দিয়ারপাড়া গ্রামের মৃত মোবারক আলী সরকারের ছেলে। ওই মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। আবদুল খালেকের পরিবার জানায়, তিনি পক্ষাঘাতে ভুগছেন, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩১ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসা নেন তিনি। বগুড়ায় গত এক সপ্তাহে ছয় উপজেলায় পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীর নামে ১১টি মামলা হয়েছে। সমসংখ্যক আসামিকে অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে। গত সোমবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ এনে ১০ দিনের মধ্যে চার মামলায় ১৯২ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা দেয় পুলিশ। যে ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তখন আসামিদের কেউ ওই এলাকায় ছিলেন না।

এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, মুস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দিপু, মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, জেলা ছাত্রদল নেতা আমিরুল ইসলাম ইমনকে আসামি করা হয়। এই চার মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদের গ্রেফতার করার জন্য বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে পুলিশ। ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম কনফারেন্সে পুলিশের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অতি আত্মবিশ্বাসী না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত বিএনপিসহ বিরোধী দল-মতের নেতা-কর্মীদের নামে থাকা মামলায় গ্রেফতার অভিযান ও পরোয়ানাভুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতি রাতে এই অভিযান অব্যাহত রাখতে বলা হয়। এ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে পরিকল্পিতভাবে সরকারের নির্দেশনায় পুলিশ মামলা ও গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে। দেশের বাইরে থাকা এমনকি অসুস্থ রোগীও এখন মামলার আসামি হচ্ছেন। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়