ডেস্ক রিপোর্ট : বরগুনার তালতলী উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের বাদুরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন দখল করে সভাপতি তার ধানের গুদাম বানিয়ে সেখানে ধান ও চাল মাড়াই করছেন। ধান ও চাল মাড়াই মেশিনের শব্দে এক মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে।
১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা পর ২০১৭ সালে বিদ্যালয়টির তৃতীয়তলা নতুন ভবন তৈরি করা হয়। নতুন ভবন হওয়া পর বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য ইছাহাক হাওলাদার জোরপূর্বক বিদ্যালয় ভবনের নিচতলার পুরো অংশ দখল করে সেখানে ধান রাখার গুদাম বানিয়েছেন। বিদ্যালয় ভবন দখল করে শুধু গুদাম বানিয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি। এখানেই আবার দুটি মেশিন বসিয়ে নিজের ধান-চাল ছাড়াও এলাকার লোকজনের ধান ও চাল মাড়াইয়ের ব্যবসা করছেন। বিদ্যালয়ের ক্লাসের সময় দুটি মেশিনের প্রচণ্ড শব্দের কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে মনোসংযোগ করতে পারেন না। নিরুপায় হয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যায়। শিক্ষকরা তখন অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। সভাপতির এ রকম আচরণের কারণে আউশ মৌসুমের ধান-চাল মাড়াইয়ের শব্দের কারণে ক্লাস চলে নামমাত্র। শব্দের কারণে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা না আসায় ক্লাস বন্ধ রাখতে বাধ্য হন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের এ রকম অবস্থা চলছে এক মাস ধরে। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া আকতার বলে, ক্লাস নেওয়া সময় মেশিনের প্রচণ্ড শব্দে আমরা স্যারদের পড়া বুঝতে পারি না। এতে লেখাপড়ায় অনেক সমস্যা হয়। তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী মো. ইমন বলে, মেশিনের শব্দে মাথাব্যথা করে। তাই বাড়ি চলে যাই। বাদুরগাছা গ্রামের অভিভাবক বশার সিকদার বলেন, স্কুল দখল করে সভাপতি ইছাহাক হাওলাদার তার ধান রাখার গুদাম বানিয়েছে। এতে শিশুদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। নিষেধ করা হলেও তিনি কথা শোনেন না। গ্রামের আরও অনেক অভিভাবক জানান, সভাপতি ইছাহাক হাওলাদার এর আগেও প্রভাব খাটিয়ে দোতলার একটি কক্ষ দখল করে তার নিজের বাংলো বানিয়ে ব্যবহার করতেন। তার কারণে নতুন ভবনের নান্দনিক দৃশ্য এখন মেশিনের ধোঁয়া আর ময়লায় ভরে গেছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতি মিজানুর রহমান জানান, বিদ্যালয় ভবন দখল করে এভাবে ধান রাখলে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হয়। দ্রুত ধান সরানোর ব্যবস্থা করা হবে।
অভিযুক্ত সভাপতি ইছাহাক হাওলাদার বলেন, নিচতলা খালি থাকায় ধান রেখে তা মাড়াই করে
শুকিয়ে চাল করে বাড়ি নেই। এতে দোষের কিছু নেই। মেশিন বসিয়ে ধান ও চাল মাড়াইয়ের ব্যবসা করার বিষয়ে বলেন, বৃষ্টির সময় জায়গা না থাকায় সেখানে মেশিন রেখেছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুনা লায়লা জানান, সভাপতিকে বিদ্যালয় ভবন দখল করে ধান ও মেশিন রাখার বিষয়ে নিষেধ করা সত্ত্বেও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক তিনি এ কাজটি করেছেন।
তালতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মনিরুজ্জামান রিপন বলেন, তদন্ত করে দ্রুত ধান এবং মেশিন সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র : সমকাল
আপনার মতামত লিখুন :