স্পাের্টস ডেস্ক : ‘আর কোনো খেলা দেখতে আসবো না যদি এ ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। সবকিছু শেষ করে দেয়ার রাস্তা তৈরি করলো গোলরক্ষক সোহেল। এটা মানতে পারছি না’- বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের প্রেসবক্স লাগোয়া গ্যালারি থেকে ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন ক্ষুব্ধ এক দর্শক। ভাই আপনার নাম কী? কোথা থেকে খেলা খেতে এসেছেন? জানতে চাইলে উল্টো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন ৩০/৩২ বছর বয়সী ওই দর্শক। বললেন- ‘রাখেন আপনার নাম ঠিকানা। এভাবেই চলবে নাকি?’
আবাহনীর গোলরক্ষ শহীদুল আলম সোহেলের চরম ব্যর্থতায় ১-০ গোলে পিছিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সাফ সুজুকি কাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে কমপক্ষে ড্র করতে হবে বাংলাদেশকে; কিন্তু এমন গোল হজমের পর বাংলাদেশের সেই জ্বলন্ত ভাবটাও নিভে গেছে। গোলের পর নেপাল হয়ে উঠেছে আরও আগ্রাসী।
অথচ কি সুন্দর ফুটবলই না খেলছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ছোটছোট পাস, বিল্ডআপ ফুটবল। মাঝমাঠের কর্তৃত্ব। বল পজিশনেও এগিয়ে। প্রথমার্ধে বল পজিশন বাংলাদেশের ছিল সাড়ে ৫৬ শতাংশ, নেপালের সাড়ে ৪৩। অথচ নেপাল গোল পেয়ে গেলো খেলার ধারার বিপরীতে। পেয়ে গেলো মানে, পাইয়ে দিলেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল। যাকে একাদশে রাখার পর থেকেই বইছিল সমালোচনার ঝড়।
এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ যে ইতিহাস গড়লো তাতে অবদান ছিল এ মুহূর্তে দেশের এক নম্বর গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। অথচ তাকে একাদশের বাইরে রেখে কোচ জেমি ডে রাখলেন সোহেলকে। যিনি ছিলেন ক্যাম্পেরই বাইরে। ফুটবল দলের কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার ক্যাম্পে যে গোলরক্ষককে রাখেননি কোচ সেই সোহেল সরাসরি একাদশে নীলফামারীতে রাখা হয় শ্রীলংকার বিরুদ্ধে ফিফা ফেন্ডলি ম্যাচে। জঘন্য এক গোল খাওয়ার পর সোহেলকে খেলানো নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে তখন।
কিন্তু ইংলিশ কোচ জেমি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও তাকেই খেলিয়ে যাচ্ছেন। এবার সোহেল দিলেন ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় পরিচয়। বাংলাদেশ কখনো এমন জঘন্য গোল খেয়েছে কি-না তা স্মৃতি হাতড়ে বলতে পারলেন না কেউ। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে নেয়া দুর্বল ফ্রি-কিক হাতে নিতে পারলেও ধরে রাখতে পারেননি। সোহেলের মাথার উপর দিয়ে বল চলে যায় জালে।
গোলের পর থেকেই ফেসবুক সরব সোহেলকে খেলানোর বিরুদ্ধে। কেন এক নম্বর গোলরক্ষক রানাকে বাইরে রেখে তাকে নামানো হচ্ছে? এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে। জাতীয় দলের চেয়ে ক্লাব প্রীতি প্রাধান্য পেয়েছে কিনা চলছে সেই আলোচনা। সোহেল যে আবাহনীর গোলরক্ষক! জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্বেও আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু।
বাংলাদেশ হারলে সোহেল হয়তো বড়জোর ক্ষমা চাইবেন; কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবলে যে উম্মাদনা ফিরে এসেছিল এশিয়ান গেমসে ইতিহাস গড়া আর সাফের প্রথম ২ ম্যাচ জয়ের পর- তা যে স্তিমিত হয়ে যাবে সেমিফাইনালে উঠতে না পারলে। এ প্রতিবেদন তৈরি পর্যন্ত দ্বিতীয়ার্ধের ১৬ মিনিটের খেলা চলছিল। স্কোর সেই আগের মতোই নেপাল-১ : বাংলাদেশ-০। জাগােনিউজ
আপনার মতামত লিখুন :