নূর মাজিদ : জন-অসন্তোষের মুখে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ে বন্ধ হয়ে গেছে ইউরেনিয়াম উত্তোলন কার্যক্রম। রাজ্যের অধিবাসীদের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে সেখানে সকল ইউরেনিয়াম উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে মেঘালয় রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের চাপ স্বত্বেও ভারতের রাষ্ট্রায়াত্ব কোম্পানি ইউরেনিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডকে (ইউসিআইএল) সকল প্রকার খনি উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে, গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটি মেঘালয়ে তাদের স্থানীয় অফিস বন্ধ করবার ঘোষণা দিয়ে কর্মচারী এবং শ্রমিকদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল করেছে।
ঝারখন্ড এবং অন্ধ্র প্রদেশের পরেই সমগ্র ভারতে ইউরেনিয়াম মজুদের দিক দিয়ে মেঘালয়ের অবস্থান উল্লেখযোগ্য। সমগ্র ভারতের প্রমাণিত ইউরেনিয়াম মজুদের মধ্যে ১৬ শতাংশ ইউরেনিয়ামই রয়েছে মেঘালয়ে। গত ১৫ বছর ধরে ইউসিআইএল মেঘালয়ে বড় পরিসরে খনিজ ইউরেনিয়াম উত্তোলনের কার্যক্রম শুরু করবার প্রয়াস চালিয়েছে। তবে, স্থানীয় সরকার পাহাড়ি পরিবেশ এবং বাস্তুসংস্থানের বিপর্যয়ের আশংকায় কখনই বৃহৎ পরিসরে খনি সম্প্রসারণের অনুমতি দেয়নি। যদিও অসংখ্য বোর মাইনিং এবং প্রাথমিক খনি স্থাপনের মধ্যে দিয়ে ইউরেনিয়াম উত্তোলন অব্যাহত রাখে ইউসিআইএল। তবে স্থানীয় অধিবাসী এবং পরিবেশবাদিদের দাবী রাষ্ট্রায়াত্ব কোম্পানিটির স্বল্প পরিসরের কাঠামোও ইতোমধ্যে স্থানীয় পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতি করেছে। বিশেষ করে, অপরিশোধিত ইউরেনিয়ামের দূষণে বিষিয়ে গেছে অনেক পাহাড়ি নদীর পানি। দূষিত নদীগুলো হয়ে পড়েছে মাছশূন্য। এছাড়াও, অপরিকল্পিত ইউরেনিয়াম অনুসন্ধান কার্যক্রম বর্ষাকালে পাহাড় ধ্বসের জন্যও দায়ী।
সম্প্রতি পরিস্থিতি এতটাই জটিল আকার ধারণ করে যে, জনরোষ মোকাবেলার শঙ্কা থেকেই মেঘালয় সরকার ইউসিআইএল’কে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেবার অনুরোধ করে। অবশ্য এরপরেও কোম্পানিটি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলো। উত্তেজিত স্থানীয় জনগণ এই নিয়ে কোম্পানিটির কর্তাদের ওপর আক্রমণও করে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করেই ইউরেনিয়াম কর্পোরেশন মেঘালয়ে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেবার ঘোষণা দেয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সিলেট সীমানা সংলগ্ন ভারতের দুটি জেলায় কোম্পানিটির কার্যক্রম বেশী বিস্তৃত ছিল। এখানেই রয়েছে রাজ্যের অধিকাংশ ইউরেনিয়ামের মজুদ। দ্য মাইনিং উইকলি
আপনার মতামত লিখুন :