শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ০৩:৩৪ রাত
আপডেট : ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ০৩:৩৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাংবাদিক সুবর্ণা হত্যায় খন্ডিত নয়, চাই সমাজবদ্ধ প্রতিবাদ

কাকন রেজা : একজন নারী সংবাদকর্মী নিহত হয়েছেন, আমরা যারা সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে জড়িত তারা নড়েচড়ে উঠেছি। প্রতিবাদ জানাচ্ছি, লিখে এবং মুখে। যেহেতু আমাদের গোত্রীয় একজন নিহত হয়ছেন, তাই আমাদের এমন আহাজারি। কিন্তু নিহত সুবর্ণা নদী যদি সংবাদকর্মী না হতেন, একজন সাধারণ গৃহিনী হতেন, একজন মা হতেন তাহলে কি আমাদের প্রতিবাদের ধরণ এমন হতো, হতো না। সমস্যা এখানেই। আমরা এমন ঘটনাগুলোকে ভাগ করে ফেলেছি, বিভক্ত হয়েছি ধর্ম, বর্ণ, গোত্র আর কাজের ধরণে। আর এই বিভক্তির ফাঁক দিয়েই অপরাধের হন্তারক হাত ঢুকে পড়েছে বা পড়ছে। কথাটা হয়তো অনেকের ভালো লাগবে না, না লাগারই কথা। কিন্তু একটু ভেবে দেখুন তো, সুবর্ণার খুনের প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে কতজন দাঁড়াবেনÑ বিশ, পঞ্চাশ, পাঁচশ’র বেশি তো নয়। যারা দাঁড়াবেন তারা সবাই গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট। প্রশ্ন করুন তো, সুবর্ণার মৃত্যুর কারণ কী সংবাদ সংশ্লিষ্ট, নাকি অন্য কিছু। যতদূর জানা গেছে তার সাবেক স্বামীকে খুনের জন্য দায়ী করা হয়েছে পরিবারের তরফ থেকে। এমন কারণে অনেক সুবর্ণার মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু তখন কী কোনো সংবাদকর্মী নিজ গোত্রের পরিচয়ের বাইরে এসে প্রতিবাদ করেছেন, ব্যতিক্রম ব্যতিত এমন ঘটনার উদাহরণ নেই। এই যে বিভক্তি এটাই ন্যায়বিচার আকাঙ্খা ও প্রাপ্তি ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। সমাজ কাকে বলে, এর সোজা উত্তর, সমাজ হলো সকল মানুষের সমষ্টি। একজন সংবাদকর্মী, একজন গৃহবধূর মৃত্যুর ধরণ যখন এক হয়, তখন সমষ্টিগত বিষয়টি, সমাজবদ্ধতার ব্যাপারটি বোধে আসার কথা। মৃত মানুষের কোনো জাত থাকে না, জাত অনুযায়ী মৃত্যুর ধরণও আলাদা হয় না, মৃত্যু মানে মৃত্যু, এছাড়া আর কিছু নয়। অথচ আমরা মৃত্যুকেও গোত্রে বিভক্ত করে ফেলি, সামাজিক ঐক্য খন্ডিত হয়, সঙ্গত প্রতিবাদও হয় খন্ডিত। এই খন্ডিত ঐক্য দিয়ে আর যাই হোক প্রতিবাদ, প্রতিরোধ হয় না। সমাজ বিরোধী প্রতিটি অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্যই প্রতিরোধের একমাত্র উপায়।

একইভাবে সকল অপরাধ, এমনকি শোষণ, জুলুমের প্রতিবাদেও সামাজিক ঐক্যের বিকল্প নেই। সে আমার গোত্রভুক্ত নয়, আমি কেন প্রতিবাদ করব, এমন চিন্তা যারা করেন, তারা নিজের পায়ে কুড়াল নয়, কুড়ালের উপর নিজের পা রাখছেন। বিপদ ওর, আমার কী? এমন যারা ভাবেন তারা এক সময় দেখবেন, ‘দেয়ার ওয়াজ নো ওয়ান লেফট টু স্পিক’, কার জন্য, আপনার জন্য, আমার জন্য। এমনটা হওয়ার আগে, আপনার-আমার পক্ষে কথা বলার কেউ না থাকার আগেই সবাই সমাজবদ্ধ হই, ঐক্যবদ্ধ হই। চলুন ‘নদী’দের হত্যার প্রতিবাদ জানাই সমাজবদ্ধ মানুষ হিসাবে।

লেখক : কলামিস্ট ও সিনিয়র সাংবাদিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়