ফয়সাল মেহেদী: তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের ৮০ শতাংশই নারী। এ খাতে তাদের অধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে কাজের মূল্যায়ন করার আহবান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর খাজান হোটেলে সিপিডি আয়োজিত ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়ের পোশাক খাত’ নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ আহ্বান জানান তিনি।
রেহমান সোবহান বলেন, রানা-প্লাজা দুর্ঘটনার পর পোশাক খাতে অনেক উন্নতি ঘটেছে। তবে এখনও লিঙ্গবৈষম্য রয়েছে। তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের ৮০ শতাংশই নারী। তাই এ খাতে তাদের অধিকার নিশ্চিতের মাধ্যমে কাজের মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি এ খাতে পুরুষের সংশ্লিষ্টতা বাড়ানো দরকার।
সিপিডির এই চেয়ারম্যান পোশাক খাত অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের রফতানি পোশাকের ওপর নির্ভয়শীল। আজকে পোশাক খাতের উন্নয়নের মূল কারিগর শ্রমিক সমাজ। শ্রমিকরা পশু নয়, তাদের মূল্যায়ন করুন। কারণ শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করেই তৈরি পোশাক রফতানিতে বিশ্ববাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ন্যায্য মজুরি দিয়ে শ্রমিকদের সম্মান করতে হবে।
তিনি বলেন, পোশাক খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ খাত উন্নয়নে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটাতে হবে। একসঙ্গে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিযোগিতার বিশ্বে বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে টিকে থাকতে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নীতি সহায়তা দিতে হবে।
আন্তপার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পোশাক খাতে রফতানি আয় ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর এ খাতে রফতানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে, যা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এটি অর্জনে আমাদের রফতানির গতি আরও বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে নিয়মনীতির পরিবর্তন করতে হবে।
বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু বলেন, পোশাক খাতে নামি-দামি কোম্পানির প্রবেশ ঘটেছে। শ্রমিকের উন্নয়ন, বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তাসহ গুণগত অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবে এ উন্নয়নের গতি আরও বাড়াতে হবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বড় ধাক্কা আসে রানা প্লাজার ট্র্যাজেডি। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় অনেক হতাহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনা আমাদের অনেক কিছু শিক্ষাও দিয়েছে। আর এ থেকে শিক্ষা পেয়ে পোশাক ক্রেতাজোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের জরিপ, শ্রমিক সেফটি, ফায়ার সেফটি, বিল্ডিং সেফটির মতো উন্নয়ন হয়েছে। এখন আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। আমরা মালিক-শ্রমিক মিলে মাথা আরও উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। একই সঙ্গে সরকারের ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে বড় ধরনের ভূমিকায় থাকতে চাই।
আপনার মতামত লিখুন :