শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ০২:১৫ রাত
আপডেট : ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ০২:১৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রাম পোর্ট এক্সেস রোডের টোল আদায়ে নয়-ছয় কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

এম.ইউছুপ রেজা, চট্টগ্রাম : সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রাম পোর্ট এক্সেস রোডের টোল আদায়ে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ভাড়াটে টোল আদায়কারীরা নানা কৌশলে টোলের সিংহভাগ টাকা রাজস্ব খাতে জমা না দিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করে আসছে। যার ফলে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গত কয়েক বছরে এ টোলের আনুমানিক ৪০ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই মাশুল আদায় কার্যক্রমে চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ না করে বেসরকারী লোক নিয়োগ করেন। এমনকি অনুরূপ মাশুল আদায় কাজ পরিচালনার জন্য নিয়োজিত লোকবলের জন্য কোন সরকারী আদেশ নেই। তবে মাশুল আদায়ের সাথে জড়িত লোকবলের কোন প্রকার বেতন ভাতা এই বিভাগ থেকে প্রদান করা হয় না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপদ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. সালাউদ্দীন এর সাথে যোগাযোগ করে হলে তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করতে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপদ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন আরেকাংশের সভাপতি মানিক হোসেন এ বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না বলে জানান।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের অধীন পোর্ট এক্সেস রোডের টোল আদায়ের কার্যক্রম ওএন্ডএম (অপারেশন এন্ড মেন্টেইনেন্স) পদ্ধতিতে টোল আদায় করার জন্য ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর ‘মনিকো-এটিটি কনসর্টিয়াম’ কে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। যার মেয়াদ শেষ হয় ২০১৩ সালের ১৫ অক্টোবর। তৎপরবর্তীতে মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিভাগীয়ভাবে মাশুল আদায়ের কার্যক্রম শুরু করে সড়ক বিভাগ চট্টগ্রাম। যদিও কাগজে কলমে মাশুল আদায় করছে সড়ক বিভাগ চট্টগ্রাম, কিন্তু বাস্তবতা হল সম্পূর্ণ ভিন্ন। অভিযোগ আছে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ পুরো বিষয়টা আড়াল করে নিজের মনোনীত ব্যক্তিবর্গ দিয়ে টোল আদায় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যার কারণে সরকার টোল আদায়ের বিপুল অংকের রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রতিদিন নূন্যতম গড়ে ৬৫০০-৭৫০০ পর্যন্ত গাড়ি এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে যার বেশিরভাগই ট্যাঙ্কার, লরী, কাভারভ্যান, ট্রাক, পিকাপ। সেই হিসেবে এই টোল হতে দৈনিক আদায়কৃত মাশুলের পরিমাণ আনুমানিক ৪ লক্ষাধিক টাকার বেশি হলেও কার্যত গড়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দিচ্ছেন। এখানে চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের হিসেব অনুযায়ী অর্থ সাল ২০১৩-২০১৪ বিভাগীয় (২৭৫ দিন) এ আদায়কৃত মাশুল এর পরিমাণ দেখিয়েছেন ৩,০৭,৬৪,৫৮৯ টাকা। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এবং স্থানীয়দের হিসেবে অনুযায়ী বাস্তবে এতে কম করে হলে ১২-১৩ কোটি টাকার মাশুল আদায় হয়েছে। যার কারণে সরকার ১০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ২০১৪-২০১৫ সালে আদায়কৃত মাশুল এর পরিমাণ দেখিয়েছেন ৪,১৮,৯৯,০০০ টাকা এবং ২০১৬-২০১৭ সালে আদায়কৃত মাশুল এর পরিমাণ দেখিয়েছেন ৪,২১,৮১,০০০ টাকা । ২০১৪-২০১৫ ও ২০১৬-২০১৭ সালে সরকার কম করে হলেও ৩০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে এমন অভিযোগ আছে।
চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমদ জানান, পূর্বের টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠান ‘মনিকো-এটিটি কনসর্টিয়াম’ এর মেয়াদ ২০১৩ সালে শেষ হওয়ার পর বর্তমানে চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে টোল আদায় করা হচ্ছে। বর্তমানে টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলছে। খুব শীঘ্রই টেন্ডার আহবান করা হবে। বর্তমানে পোর্ট কানেটিং রোডে টোল আদায়ের দায়িত্বে রয়েছেন রাজু আহমেদ। তিনি পূর্বের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘মনিকো-এটিটি কনসর্টিয়াম’র ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে এই টোল প্লাজায় ২২ জন লোক কর্মরত রয়েছেন। এই ২২ জন লোকের বেতন-ভাতা মাষ্টার রোলে পরিশোধ করা হয় বলে তিনি জানান। প্রতিদিন গড়ে ৫-৭ হাজার ট্রাক ও লড়ি এ টোল প্লাজা দিয়ে আসা-যাওয়া করছে।

এ প্রসঙ্গে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মার্গানেট ওয়ান লি: এর সিও সৈয়দ আহমদ ফারুক জানান, অপারেশন এবং ম্যানটেইনাস সিস্টেম অনুযায়ী আমরা দরপত্রে অংশগ্রহন করি। সর্বনিম্ম দরদাতা ২ কোটি ৮৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় আমরা টোল আদায়ের কাজ পাই। পরবর্তীতে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে টোল আদায়ের কাজ বন্ধ করে রাখা হয়। কিন্তু বর্তমানে পূর্বের ইজারাদারের লোকজনই টোল আদায় করছে। ২০১৪ সালের টোল নীতিমালার ১৪ ধারা অনুযায়ী বিভাগীয় অর্থ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে টোল আদায়ের পদ্ধতি রয়েছে।

‘মনিকো-এটিটি কনসর্টিয়াম’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহবুব কবিরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়