শোভন দত্ত : সাধারণ মানুষের বোঝার সুবিধার্থে এখন গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হবে বাংলায়। বিদ্যুৎখাতের উন্নয়নে সরকার যেসব কাজ করছে, তার সারসংক্ষেপও থাকবে ওই বিলে। স¤প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ওই আদেশে বলা হচ্ছে এক মাসের মধ্যে বিলিং ফরম্যাট বাংলায় করতে হবে। পাওয়ার সেলকে বিষয়টি সমন্বয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাকছুদা খাতুন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ বিলে ‘উদ্ভাবনী উদ্যোগ এবং শেখ হাসিনার উদ্যোগে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’-এর ব্র্যান্ডিং লোগো থাকতে হবে।
এখন গ্রাহকের কাছে যে বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয় তার কোনোটি পুরোটাই ইংরেজিতে, আবার কোনোটির ক্ষেত্রে আংশিক ইংরেজি এবং আংশিক বাংলা ভাষার প্রয়োগ করা হয়।এ কারণে সব বিতরণ কোম্পানির বিল অভিন্ন ফরম্যাটে করার নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড জানিয়েছে,দেশে শতভাগ মানুষের কাছেই বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে সরকার। আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ দেশের শতভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। চলতি বছরের মধ্যে প্রায় ৩১৯ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে। বাকি উপজেলাগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হবে আগামী বছরই।
গ্রামীণ জনপদের অধিকাংশ মানুষই ইংরেজি বোঝে না। ফলে তাদের জন্য বাংলায় বিল করা হলে বুঝতে সুবিধা হবে এই চিন্তা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ খাতের দ্রুত সম্প্রসারণের প্রকৃত অবস্থা সাধারণ মানুষের কাছে এই বিলের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
ছয় বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি কর্মকর্তারা বলছেন,সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎখাতের অগ্রগতির কথা খুব বেশি জানে না। নানা মাধ্যমে প্রচারণা চালানোর চেয়ে প্রতি মাসে যে বিলের কাগজ গ্রাহকের কাছে যায়, তাতে উন্নয়নের বিভিন্ন বর্ণনা দেওয়া যেতে পারে। এতে একই খরচে বিল আদায়ের সঙ্গে প্রচারণারও ব্যবস্থা হতে পারে। বিদ্যুৎ বিভাগ সংবাদপত্র, টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচারের পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালায়।
দেশে বিতরণ কোম্পানিগুলোতে এখন প্রায় আড়াই কোটি গ্রাহক রয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পাশাপাশি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো), নর্দান ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো), ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। এর মধ্যে সব বেশি গ্রাহক রয়েছে আরইবির। সংস্থাটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়। সমিতিগুলো নিজেরাই বিদ্যুৎ বিল আদায় করতে বিল প্রস্তুত করে থাকে।
এই নতুন বিদ্যুৎ বিলের আরেকটি সুফল বলা হচ্ছে, অভিন্ন ফরম্যাট হওয়াতে গ্রাহকের ওপর বিভিন্ন ধরনের চার্জও বিতরণ কোম্পানি চাপিয়ে দিতে পারবে না।এজন্য ফরম্যাটও বিদ্যুৎ বিভাগ তৈরি করে দেওয়া হবে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :