শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৫৯ সকাল
আপডেট : ৩০ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৫৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘চল নিজের কথা ভাবি’

রিমা লিমা: আমরা অনেকেই নিজের সাজগোছ বা পরিপাটি থাকাটা শুধুমাত্র বয়ফ্রেন্ড বা স্বামীকে খুশী করার জন্য করে থাকি। একবার কি এভাবে ভেবে দেখেছি...... নিজে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একটু ভালোবেসে নিজেকে দেখি না। একটু কাজল দেই লিপস্টিক দিয়ে নিজেকে রাঙাই । মাসে একবার পার্লারে যাই না কেন শুধুই নিজের জন্য। প্রতিটি বয়সের একটা নিজস্ব সৌন্দর্য আছে । সেটাকে উপলব্ধি করে নিজের প্রতি যত্নশীল হতে ক্ষতি তো নাই। আমি স্ত্রী আমি মা আমি বউমা। আমার কাছে সবার অনেক চাওয়া। একটা সময় সন্তান তার নিজের পথ বেছে নেয়। সবাই পর হতে থাকে। সারাদিন খেটে যে সংসারটি আগলে রেখেছেন তার বিনিময়ে কি পাচ্ছেন? না আমি বলছিনা সংসার ধর্ম ত্যাগ করে স্বাধীনচেতা বা বিপ্লবী হতে। তবে নিজের প্রতি যত্নশীল না হওয়াটা এক ধরনের দাসত্ব ছাড়া আর কিছুই নয়।

এখন শহুরে জীবনে সেই আগের কঠিন জীবন নেই। আমার জানা অনেক গৃহিণী আছেন সন্তান স্কুলে যাবার পর ঘুম দেন। তারপর ঠিকা কাজের লোক এসে সব ঘুছিয়ে দিয়ে যায় তারপর কাজ করেন। আবার বাচ্চাকে স্কুল থেকে নিয়ে এসে খেয়ে দেয়ে আবার একটা শান্তির ঘুম। তারপর বিকেল থেকে সিরিয়াল দেখা শুরু। তারা এক টা গল্পের বই পড়েন না বা গান শুনেন না।  তারা শরৎচন্দ্র ,বিভূতিভূষন বা রবীন্দ্র নাথ, নজরুল কিংবা সেলিনা হোসেন পড়েন না। হা আমি সবার কথা নয় কিছু মায়েদের কথা বলছি। এদের সাথে না তার সন্তানদের সখ্যতা গড়ে উঠে না স্বামীর বা তার পরিবারের।

আমাকে ভুল বুঝবেন না আমি সবার কথা বলছি না। অনেকেই আমরা বাচ্চাদের পিছনে সময় দেই। তাদেরকে যত্নে লালন করি। বাচ্চার সিকিউরিটির কথা ভেবে বা স্কোপের অভাবে কাজ করি না কিন্তু সময় টা নস্ট করিনা। অনেকেই এখন লিখা লিখি করেন। তাদের একটা নিজস্ব পরিমন্ডল আছে; আছে নিজস্বতা। তাদের সুন্দর উপলব্ধিময় লিখা বা ভালোবাসার কাব্য পড়ে মনটা জুরিয়ে যায়। তারা তাদের ভেতরের আমিকে আবিষ্কার করতে জানে এবং মুল্যায়ন করতে জানে।

আবার অনেকেই আছেন যৌথ পরিবারের ঠেলা সামলাতেই জীবনপাত। সন্তান দেবর ননদ বা শ্বশুর শাশুড়ি আর তাদের খেদমত করতেই জীবন শেষ । তার স্বামী বা শাশুড়ি বা তার সন্তান কেউই তার খবর রাখেনা। কিন্তু নিজের খাবারটা সময়মত আমি কেন খেয়ে নিবো না? আমার স্বামীর বা সন্তানের পছন্দের খাবার আমি তাদের জন্য শুধু সাজিয়েই রাখব তাই বলে কি নিজের পছন্দের কোন খবর নিব না। নিজের অধিকার ছেড়ে দিতে দিতে একটা সময় তিনি ভুলেই যান আসলে কি হবার ছিল। আপনি কি লক্ষ করেছেন আপনি অসুস্থ হলে বা অপুষ্টিতে ভুগলে কারো বিন্দুমাত্র মাথাব্যাথা হবে না। হাজার হাজার উদাহারন আছে খুব অল্প বয়সে বিধবা মা তার সন্তান নিয়ে জীবন পার করে দেন। কিন্তু হাতে গুনে দু একটি বের হবে এমন স্বামী যিনি তার সন্তান নিয়ে জীবন পার করেছেন।

ছোট বেলায় মাকে দেখতাম ভাল খাবার সবাই একসাথে খেতে পারব তবুও নিজে খেতেন না এই ভেবে তার স্বামী বা সন্তান আবার খাবে।  এটাই নাকি নারীর চিরাচরিত ধর্ম। কিন্তু নিজেকে সারাজীবন শুধু বঞ্চিত করে যাব কেন? সন্তান কিন্তু না খেয়ে পরবর্তীতে মায়ের জন্য খাবার বাঁচিয়ে রাখে না। এমন মায়ের চেহারা থাকে ফ্যাকাশে কপালে অল্প বয়সেই পড়ে ভাজ। ষোল কলা পুরন তখন। হয়ত তার স্বামীটি থাকে দেখতে ইয়াং। কারন তিনি সবসময় পরিবারের ভাল জিনিষটা পান তাকে সন্তান গর্ভে রাখার মত কঠিন কাজটি করতে হয় না। ছেলেদের শারিরীক গঠন এমন তারা চল্লিশেও দিব্যি ফিট কিন্তু বেশিরভাগ চল্লিশের নারী অযত্নে অবেলায় পান বয়স্কা উপাধি। এভাবেই হিন্মন্যতার সূচনা। খাবার একটা বড় বিষয়।  মায়েরা সংসারের সব হিসাব করতে করতেই নিজের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির কথা ভুলে যান। অথচ সন্তান জন্মদাত্রী মায়ের দরকার বেশি ক্যালসিয়াম আর ক্যালরি যুক্ত খাবার। তা না হলে হবে কোমর ব্যাথা, হাতে পায়ে ব্যাথা সহ নানা জটিলতা যা তাকে অল্প বয়সেই বৃদ্ধা বানিয়ে দিবে। মায়ের অযত্ন অবহেলায় তার শরীর তিলে তিলে ক্ষয়ে যেতে থাকে। আর তার যত্নে পতিজি থাকেন শক্ত সবল আর সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী । অথচ একটু নিজের প্রতি যত্নবান হলে ক্ষতি তো নাই।

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওই খেলাটা একটু না হয় খেলি।  জিজ্ঞেস করি আমি দেখতে কেমন আয়না? নিজের দিকে তাকিয়ে একটু হাসি। তারপর যত্ন করে নিজের কফিটা বানাই। মাঝে মাঝে নিজের জন্য গান বাজাই। নিজেই নিজেকে উপহার দেই। নিজেকে প্রেজেন্টেবল রাখা স্মার্টনেসের অংশ।

আমার নানি একটা সময় পর গুজা হয়ে চলতেন। শুনেছি নয়টি সন্তান জন্ম দিয়েছেন কিন্তু নিজে যত্ন নিজেও করেননি আর পরিবার তো করেই না। তার কাছেই শুনেছি বিরাট সংসার রাখাল বাড়ির আশ্রিতা সবার জন্য অনেক রান্না হত। তার তদারকি করতেই তার সময় চলে যেত। মাঝে মাঝে খেতেই ভুলে যেতেন। আর সন্তান জন্ম নেবার পর মাত্র ৩০ দিন পেতেন ভারী কাজ থেকে অব্যহতি। আবার এই নানী দাদী রাই পরবর্তীতে অন্য একটি মেয়েকে যে কিনা ছেলের বউ বা ভাবী উদাহারন দিবে আমাদের সময় আমরা কত কাজ করতাম বা তোমার এত খাই খাই স্বভাব কেন? পরিবারের সবাই খেয়ে নিবে তারপর তুমি!!

মোটকথা আমি আমাকে ভালো না বাসলে অন্য দের কাছে আশা করি কিভাবে? তাই সবার আগে আমি আমার। আমার ভাল আমার খেয়াল আমি না রাখলে কে রাখবে। তাই আমরা আমাদের কথা ভাবি । এই জীবনটা অনেক বড় । তাই নিজেকে ভালোবাসো নিজের জন্য করো একটুখানি । নিজে অসুস্থ হয়ে বা বয়সে স্বামীর চেয়ে ছোট হয়েও বয়স্কা উপাধি নেয়ার মাঝে কোন কৃতিত্ব নাই।

আমরা মেয়েরা অনেকেই কেন জানি কারো ছত্রছায়া না হলে ভীষণ কষ্টে থাকি। হা একাকীত্ব বা একা জীবনটা অনেক কঠিন । আমি আমার পরিচিত সুপ্রতিষ্ঠিত বা উচ্চপদস্থ নারী কে দেখেছি কেন তার স্বামী তার সাথে নাই বা কেন তার প্রিয় মানুষটি তার সাথে নাই তার জন্য হা হুতাশ করতে। ফেসবুকে একের পর এক স্ট্যাটাস দিয়ে থাকেন তার কষ্টকর জীবনের তার নিঃসঙ্গতার করুন কাহিনীর ইতিবৃত্ত । হাঁ একাকী জীবন কারোই কাম্য নয়। এটা এক ধরনের দুর্ভাগ্যও বলা যেতে পারে। কিন্তু জীবনে এই অবস্থার মোকাবেলা কাউকে না কাউকে করতে হতেই পারে। যদি তেমন দিন আসে কেন নয় এভাবে ভাবি.....................
নিজেকে দেখা আর নিজেকে ভালোবাসা
সময়টা শুধুই নিজের জন্য...
নিজের সাথে নিজের কথা।
নেই কারো আবদার বা নেই কোন বাধ্যবাধকতা
আছে শুধুই স্বাধীনতা নেই কোন প্রতিবন্ধকতা ।।
একা থাকলে যখন খুশী প্রিয় বইটি পড়া ,
না হয় গলা ছেড়ে প্রিয় গানটি গাওয়া।
একা থাকলে ভাবনাগুলো প্রজাপতির মত মেলে পাখা,
হয় কল্পনায় প্রিয় মানুষটির সাথে দেখা।।
সপোনেতে যে তুমি আসো যাও, সে শুনে রাখে সব কথা ।
একা থাকলে নিজেকে ইচ্ছে রঙে রাঙাও,
মনের জগত খুলে দেখো সব ব্যকুলতা ।
একা একা নেই কোন দন্ধ ,নেই হিংসা বা বিদ্বেষ।
একাকীত্বে একাকার শুধুই ভালোবাসা অনিমেষ।।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়