কান্তা আইচ রায় : তরল বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা থাকলেও সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে কঠিন বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে ধলেশ্বরী নদীর তীরে খোলা জায়গায়। এতে নদী দূষণের পাশাপাশি তীব্র দুর্গন্ধে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে আশেপাশের বাসিন্দাদের। ট্যানারির কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবেশবান্ধব ডাম্পিং জোন করার কথা থাকলেও প্রকল্প শুরুর ১৩ বছরেও কিছুই করেনি বিসিক।
রাজধানীসহ সারাদেশ থেকে লবণ যুক্ত চামড়া সংগ্রহের পর এখন ট্যানারিগুলোতে শুরু হয়েছে প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ। এ জন্য প্রথমেই লেজ, কান, সিং সহ চামড়ার উচ্ছিষ্ট অংশ অপসারণে ব্যস্ত শ্রমিকরা। এরপর কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করা হয় ওয়েট ব্লু প্রক্রিয়া। আর এটি করতে গিয়ে কারখানাগুলোতে তৈরি হচ্ছে শত শত টন তরল ও কঠিন বর্জ্য।
তরল বর্জ্য ড্রেনের মাধ্যমে অপসারণ করা গেলেও কঠিন বর্জ্য বহনে ব্যবহার করতে হয় এই গাড়ি। বর্জ্য ফেলতে নির্ধারণ করা হয়েছে শিল্প নগরীর পশ্চিম প্রান্তে ধলেশ্বরী নদী তীরের উন্মুক্ত স্থানটিকে। শ্রমিকদের অভিযোগ, ট্যানারির বর্জ্যে ভরে উঠলে রাতে খুলে দেয়া হয় ভাগাড়ের নদী তীরবর্তী অংশ। এতে দূষিত আবর্জনার ঠিকানা হয় ধলেশ্বরী।
কেবল যে নদী দূষণ হচ্ছে তা নয়, দুর্গন্ধে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে আশেপাশের বাসিন্দাদের। তারা জানান, বর্ষা মৌসুম এলে পরিস্থিতি হয়ে ওঠে আরও ভয়াবহ।
এলাকাবাসীর একজন বলেন, বৃষ্টির সময় এখানে দুগর্ন্ধে টেকা যায় না। দূষিত পানি নদীতে যাচ্ছে, নদী দূষিত হচ্ছে।'
পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এখনই উদ্যোগী না হলে হাজারীবাগের মতো পরিণতি হবে সাভারেরও।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, ‘এত বড় একটা প্রকল্প, এখানে যে পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া উচিত তা দেয়া হয়েছে, তাহলে বাস্তবায়িত হল না কেন? সব চেয়ে বড় ব্যর্থতা বিসিকের।
আবর্জনার বিশাল এই স্তুপ দেখে কারোরই বোঝার উপায় নেই ,এটি এক সময়ের হাজারীবাগ নাকি সাভারের আধুনিক চামড়া শিল্প নগরী। বিসিকের মূল পরিকল্পনায় এখানে একটি ডাম্পিং জোন করার কথা থাকলেও তার কিছুই হয় নি। তারপরও সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা পরে আধুনিক পরিবেশ বান্ধব শিল্প নগরী গড়ার মাধ্যমে অক্ষুণ্ণ থাকবে চামড়া শিল্পের গৌরব; এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। সূত্র : সময় টিভি
আপনার মতামত লিখুন :