মো. ফিরোজ মিয়া : অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বিলাসবহুল জীবন যাপনে অধিকতর আকৃষ্ট হয়। মনে জন্ম নেয় অধিকতর পাওয়ার নেশা, লোভ-লালসা, যা চরিতার্থ করার জন্য স্বাভাবিকভাবেই মানুষ দুর্নীতির প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হয়।
এ কারণে প্রতিটি সভ্য গণতান্ত্রিক দেশই অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে দুর্নীতিবিরোধী আইনকে কঠোর থেকে কঠোরতর করে। কারণ দুর্নীতি দ্বারা যে পরিমাণ লাভবান হওয়া যায়, শাস্তির পরিমাণ যদি তুলনামূলকভাবে তার চেয়ে কম হয়, তাহলে দুর্নীতি বন্ধ না হয়ে দুর্নীতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
এছাড়া দুর্নীতি দমনের চেয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ অনেক কম ব্যয়বহুল ও সহজসাধ্য হওয়ার কারণেও দুর্নীতির জন্য কঠোর শাস্তির বিধান করে দুর্নীতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হয়। কঠোর শাস্তির বিধান দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তির মনে একধরনের ভীতির সঞ্চার করে দুর্নীতি প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকারি কর্মচারীদের সহায়তা বা সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হয়। এছাড়া কিছুসংখ্যক সরকারি কর্মচারী নিজেরাও সরাসরি আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির পেছনে যেসব কারণ বিদ্যমান তার মধ্যে অন্যতম হল অপর্যাপ্ত বেতন কাঠামো, লোভ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, দুর্নীতির সুযোগ, দুর্নীতিবিরোধী দুর্বল আইন-কাঠামো ইত্যাদি।
বর্তমান বেতন কাঠামো সরকারি চাকরিজীবীদের জীবন ধারণের জন্য অপর্যাপ্ত এটা বলার কোনো সুযোগ নেই। এখন কোনো কর্মচারীর জীবন ধারণের জন্য দুর্নীতি করার প্রয়োজন হয় না। তা সত্ত্বেও যদি কোনো কর্মচারী দুর্নীতি করে, তার পেছনে কারণ হতে পারে অত্যধিক লোভ লালসা বা অধিকতর বিলাসবহুল জীবন যাপনের আকক্সক্ষা।
জীবন ধারণের জন্য উপযোগী বেতন কাঠামো প্রদানের পর সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধে বিদ্যমান বিধিবিধান আরও কঠোর হবে, এটাই সাধারণ জনমনে ধারণা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এর উল্টো চিত্র। দুর্নীতিবিরোধী বিধিবিধানকে আরও নমনীয় ও শিথিল করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে গত এপ্রিলে জারিকৃত সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এবং অতি সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত সরকারি চাকরি আইনের উল্লেখ করা যায়।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য বর্তমান শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা ২০১৮-এর পূর্বে ১৯৮৫ সালের শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা প্রযোজ্য ছিল। ওই বিধিমালায় কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ওপর বাধ্যতামূলক অবসর, চাকরি থেকে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত- এর নিচে কোনো দণ্ড আরোপের সুযোগ ছিল না।
অর্থাৎ দুর্নীতিপরায়ণ কোনো সরকারি কর্মচারীকে চাকরিতে বহাল রাখার কোনো সুযোগ ছিল না। তবে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়ে পেনশন প্রদানের সুযোগ ছিল। অবশ্য এ বিধানটিও ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সেন্ট্রাল সার্ভিসের কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য বিধানের চেয়ে অনেক নমনীয় ও শিথিল।
ভারতের সেন্ট্রাল সার্ভিস কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য বিধিমালায় দুর্নীতির জন্য কর্মচারীর ওপর চাকরি থেকে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত দণ্ড আরোপের বিধান বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করে পেনশন প্রদানের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ ২০১৮ সালে জারিকৃত বিধিমালায় সন্নিবেশিত বিধান ১৯৮৫ সালের বিধিমালার বিধানের চেয়ে অনেক নমনীয় ও শিথিল।
বর্তমান বিধিমালায় দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীকে চাকরিতে বহাল রাখার সুযোগই কেবল রাখা করা হয়নি, বরঞ্চ পদোন্নতি প্রদান, সসম্মানে অবসরে যাওয়ার এবং পেনশন সুবিধাদি পাওয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে। এমনকি বিধিমালায় দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি অর্থাৎ একাধিকবার দুর্নীতি করারও সুযোগ রাখা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সরাসরি ঘুষ গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ঘুষ গ্রহণকে এই বিধিমালায় দুর্নীতির সংজ্ঞাভুক্ত করা হয়নি।
আরও অবাক করার বিষয় হল, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কোনো কর্মচারী যদি বিভাগীয় মামলার প্রক্রিয়াকে কৌশলে বা প্রভাব খাটিয়ে প্রলম্বিত করে অবসর গ্রহণের বয়স পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে অথবা বিভাগীয় মামলা চলাকালীন স্বেচ্ছায় অবসরে যায়, তাহলে তার ওপর বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী কোনোরূপ দণ্ডই প্রয়োগ করা যাবে না।
অথচ ষাট দিনের বেশি কোনো কর্মচারী কর্মে অনুপস্থিত থাকলে তার অবসর গ্রহণের পরও তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তসহ যে কোনো দণ্ড প্রদান করা যাবে। অর্থাৎ এই বিধিমালার বিধান অনুযায়ী কর্মে সাময়িক অনুপস্থিতির চেয়ে দুর্নীতি কম গুরুতর অপরাধ।
যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য পৃথক শৃঙ্খলা বিধিমালা বিদ্যমান আছে, তাদের ক্ষেত্রে ২০১৮ সালের বিধিমালাটি প্রযোজ্য না হওয়ার কারণে একই প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মধ্যে দণ্ডের বিধানের ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে।
যেমন, প্রতিরক্ষা বিভাগে কর্মরত বেসামরিক সরকারি কর্মচারী এবং রেলওয়ের সংস্থাপন কোড প্রযোজ্য এমন কর্মচারী, যাদের ক্ষেত্রে দুর্নীতির জন্য গুরুদণ্ড প্রদানের বিধান এখনও বিদ্যমান। ফলে একই সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ক্যাডার কর্মচারীর দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পরও নামমাত্র দণ্ড দিয়ে তাকে চাকরিতে বহাল রাখার সুযোগ থাকছে। অপরদিকে নন-ক্যাডার কর্মচারীর দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার ক্ষেত্রে তাকে চাকরিতে বহাল রাখার কোনো সুযোগ থাকছে না।
একইরূপ দুর্নীতির অপরাধের জন্য একই প্রতিষ্ঠানের সরকারি কর্মচারীর একাংশের ওপর কঠোর দণ্ড এবং অপর অংশের জন্য নমনীয় দণ্ড, এটা কখনও কাম্য হতে পারে না। এছাড়া বিধিমালাটিতে এমন কতগুলো ক্রটি ও অসঙ্গতি বিদ্যমান, যার কারণে কোনো সরকারি কর্মচারীকে দণ্ড প্রদান করা হলেও আদালতে সেই দণ্ড বহাল রাখা দুরুহ হবে।
শৃঙ্খলামূলক বিধির অধীনে প্রদত্ত দণ্ড অধিকাংশ সময়েই আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এ কারণে শৃঙ্খলামূলক বিধি জারির ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়, যাতে বিধিমালাটি ক্রটিমুক্ত থাকে। কিন্তু ২০১৮ সালের বিধিমালাটি জারির ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে বলে মনে হয় না।
বিধিমালাটি জারিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি, সরকারি কর্ম কমিশন, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয় সম্পৃক্ত ছিল। এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরীক্ষা-নিরীক্ষান্তে জারিকৃত বিধিমালায় ক্রটি ও অসঙ্গতিসহ দুর্নীতির জন্য এমন নমনীয় দণ্ডের বিধানের সন্নিবেশ কেবল হতাশার সৃষ্টি করে।
সম্প্রতি সরকারি চাকরি আইন মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাভ করেছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে আইনটি সম্পর্কে যেটুকু ধারণা পাওয়া যায়, তা কোনোক্রমেই দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য ইতিবাচক বলে মনে হয় না।
আইনটিতে দুর্নীতির অপরাধে অভিযুক্ত কোনো কর্মচারীকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অনুমোদনের বিধানটি দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন না করে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীদের দুর্নীতি করার ক্ষেত্রে আরও সাহসী করে তুলবে এবং দুর্নীতির প্রসার ঘটাবে। এছাড়া প্রস্তাবিত আইনে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অনুমোদনের বিধান সংযোজন করা হলে তা দুদকের কর্মক্ষমতাকে আরও দুর্বল করে দেবে বলে সাধারণের ধারণা।
কোনো একজন সরকারি কর্মচারীর পক্ষে এককভাবে দুর্নীতি করা প্রায় অসম্ভব। সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির সঙ্গে অধিকাংশ সময়ই প্রতিষ্ঠানের একাধিক স্তরের কর্মচারীরা জড়িত থাকে। কোনো দুর্নীতির সঙ্গে যদি প্রতিষ্ঠানের উপরের স্তর জড়িত থাকে, সেক্ষেত্রে গ্রেফতারের অনুমতি পাওয়া কি খুব সহজ হবে! সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় প্রস্তাবিত আইনে গ্রেফতারের অনুমোদনের ক্ষমতা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ওপরও অর্পণ করা হয়েছে। ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ রাষ্ট্রপতি হওয়ায় তাদের ক্ষেত্রে গ্রেফতারের অনুমোদনের প্রক্রিয়াটি কি আদৌ সহজ?
দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীরা এত ধূর্ত হয় যে, তাদের দুর্নীতি প্রমাণ করে শাস্তি প্রদান অত্যন্ত দুরূহ এবং অনেক ক্ষেত্রেই প্রায় অসম্ভব। এছাড়া তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের প্রক্রিয়াটিও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এসব কারণে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীদের গ্রেফতারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে তারা সহজেই দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ ও দলিলাদি বিনষ্ট করার সহজ সুযোগ পাবে।
দুদক কর্তৃক ফাঁদ পেতে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীদের গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় আনার কার্যক্রম সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। ফাঁদ পেতে দুর্নীতি ধরার বিধানটি বড় বড় দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক দুর্নীতি বন্ধে অকার্যকর হলেও সরকারি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধে অনেকটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হওয়ায় সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে সেবা প্রত্যাশীরা অনেক ক্ষেত্রে এর সুফল পায়।
দুদক ফাঁদ পেতে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের ধরার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা দেখাতে পেরেছে বলে অনেকেই বিশ্বাস করে না। কারণ কিছু কিছু সার্ভিস সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণা থাকলেও দুদক সেসব সার্ভিসের ক্ষেত্রে ফাঁদ পেতে দুর্নীতি ধরার কার্যক্রমে সফলতা দেখাতে পারেনি।
জনমনে ধারণা, ওইসব সার্ভিসে অপারেশন পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা দুদকের নেই। দুদক কিভাবে তাদের এসব দুর্বলতা কাটাতে পারে, সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অনুমোদনের বিধান সংযোজনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির দ্বারা দুদক কর্তৃক ফাঁদ পেতে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীদের গ্রেফতারের ক্ষমতা খর্ব করা হলে প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেন হলেও তা প্রতিহত করার কোনো সুযোগ থাকবে না। ফলে ঘুষ-দুর্নীতির প্রসার যে বাড়বে তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকারি সেবা প্রত্যাশী জনসাধারণ।
অনেকে সরকারি কর্মচারীদের সুরক্ষার জন্য গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অনুমোদন গ্রহণের বিধানটি সংযোজনের পক্ষে যুক্তি দেখান। সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সুরক্ষার প্রশ্ন তখনই দেখা দেয়, যখন গ্রেফতারের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ঘটে। দুদক একটি স্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান, এর কর্মচারীরাও সরকারি কর্মচারী। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি কি গ্রেফতারের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছে? যদি না করে থাকে, তাহলে সুরক্ষার প্রশ্ন আসে কেন? আর যদি ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে থাকে, তাহলে ক্ষমতার অপপ্রয়োগকারী কর্মচারীদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে না কেন, এ প্রশ্নও দেখা দেয়াটা স্বাভাবিক।
সংবাদ মাধ্যমে আরও জানা যায়, সরকারি চাকরি আইনে ফৌজদারি অপরাধে এক বছর পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীকে কয়েকটি লঘু দণ্ড প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু কোনো সরকারি কর্মচারীকে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক যে মাত্রারই সাজা দেয়া হোক না কেন, তাকে লঘু দণ্ড আরোপ করে চাকরিতে বহাল রাখা কি আদৌ যুক্তিযুক্ত হবে?
জারিকৃত শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা এবং মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত সরকারি কর্মচারী আইনের বিতর্কিত বিধানের দ্বারা কতিপয় দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারী লাভবান হলেও সাধারণ কর্মচারীরা সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সমাজে তাদের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়া ছাড়াও জনমনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হতে পারে, যা সুশাসনের জন্য কখনও কাম্য হতে পারে না। এসব বিবেচনায় নিয়ে সরকার অতি শিগগির শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালাটি পুনঃপর্যালোচনাপূর্বক সংশোধনের উদ্যোগ নেবে এবং সরকারি চাকরি আইনটি জারির আগে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও আরও কোনো বিতর্কিত, ক্রটি ও অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয় আছে কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জারি করবে, এটাই কাম্য।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব, চাকরি ও আইন সংক্রান্ত গ্রন্থের লেখক
(লেখাটি যুগান্তর থেকে সংগৃহীত)
আপনার মতামত লিখুন :