ফাহিম আহমাদ বিজয় : বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে স¦চ্ছল দেশ নয়। নির্বাচন সুষ্ঠু এবং পরিচ্ছন্ন করার লক্ষে যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদের সাথে সংলাপে আসা গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ নেয়নি নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের আগ মূহুর্তে এসে নতুন করে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আগে যদিও বলেছিলো, যদি সব রাজনৈতিক দল না চায় তাহলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না।
আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি বা কারিগরি সামর্থ্যও গড়ে উঠেনি এখন পর্যন্ত। সেখানে আরপিও সংশোধনীর প্রস্তাব পাঠানোর আগে কিভাবে ৩৮২৯ কোটি টাকার দেড় লাখ ইভিএম কেনার প্রকল্প হাতে নেয় নির্বাচন কমিশন? আমরা এখনো স্বল্প উন্নত দেশ। তাই আমাদের অর্থনীতিকে এটি সাপোর্ট করে না। এদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো ইভিএম ব্যবহার হোক তা চায় না। এদেশের মানুষের মাঝেও ইভিএম নিয়ে সংশয় রয়েছে যে, যেহেতু আমরা এটির সঠিক ব্যবহার জানি না সেক্ষেত্রে আমরা হয়তো সঠিক ফলাফল নাও পেতে পারি। যেহেতু অধিকাংশ জনমত ইভিএম এর বিপক্ষে তাই ইভিএম এর পক্ষে অবস্থান নেয়ার সুযোগ নেই। এটি যদি করা হয় তাহলে জনগণের অর্থের অপচয় হবে এবং জনস্বার্থের জন্য হানীকর হবে।
সম্প্রতি পাচঁটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিলো। তাতেই কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছিলো। সেখানে ৩০০ আসনে প্রায় ভোট কক্ষ আছে ২ লাখ ২০ হাজার। ৩০০ আসনে ইভিএম দরকার হবে ২ লাখ ৬৪ হাজার। ১৫০ আসনে হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ইভিএম প্রয়োজন হবে। এগুলো সামাল দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন কতটা প্রস্তুত? জনগণের স্বার্থের পরিপন্থি, জনগণের স্বার্থের প্রতিকূলে, জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নির্বাচন কমিশনের নেই। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশন এমন কোন সিদ্ধান্ত নিবে না যেটি জনস্বার্থের জন্য হানীকর এবং জনস্বার্থের প্রতিকূলে।
পরিচিতি : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক/ সম্পাদনা : মেহেদি হাসান
আপনার মতামত লিখুন :