মাহফুজ নান্টু: ও ফারজানারে তুই কই গেলিরে। কিয়ারে(কি জন্য) তুই গাঙ্গের পাড় গেলিরে। ও খোদারে তুমি আমার ফারজানারে ফিরাইয়া দিয়া যাও, ফারজানার বদলে আমারে লইয়া যাওরে। এমন মেয়ে হারা মায়ের আহাজারীতে ভারী হয়ে উঠেছে নগরীর কালিয়াজুড়ি পাক্কার মাথা এলাকার কবির হোসেনের বাড়ীতে। কবির হোসেন সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ফারজানার বাবা। মেয়ে হারিয়ে শোকে বিহ্বল বাবা কবির হোসেন। শোকে কোন কথাই বের হচ্ছিলো না বাবা কবির হোসেনের মুখ দিয়ে।
জানা যায়, গত পরশু মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে তিনটায় গোমতী নদীর বেড়ীবাদে বরযাত্রীবাহী গাড়ী বহরের একটি মাইক্রোবাস আরেকটিকে দ্রুত গতিতে ওভারটেকিংয়ের সময় বেড়ীবাদের পাশে দাড়ানো পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার (৭) কে ধাক্কা দেয়। এতে মারাত্বক আহত হলে স্থানীয়রা দ্রুত একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে গত পরশু রাত ১০ টায় ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গতকাল বুধবার বিকেল তিনটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে ফারজানা।
এদিকে আজ সন্ধ্যায় এ্যাম্বুল্যান্সে করে ফারজানার লাশ বাড়ীতে আসলে বদরপুর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আছে। ভাগ্নির এমন করুন মৃত্যুতে শোকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ফারজানা দু মামা। ফারজানার শোকে কাতর হয়ে যায় ফারজানার খেলার সাথীরা। খেলার সাথীরা বারবার নিহত ফারজানার মুখ-গাল ছুয়ে দেখছিলো। ফারজানার মরদেহের উপর আছড়ে পড়ে খেলার সাথীরা শোকে চিৎকার করে উঠে। এ সময় উপস্থিত এলাকাবাসীর চোখেও পানি দেখা যায়।
স্থানীয় জানা যায়,গত মঙ্গলবার ফারজানা দুপুরের পরে স্কুল থেকে বাড়ী ফিরে খেলার সাথীদের নিয়ে গোমতীর পাড় আসে। এ সময় বরযাত্রীবাহী গাড়িবহরের পেছন থেকে সামনের মাইক্রোবাসটিকে ওভারটেকিং করতে গিয়ে বেড়ীবাদের পাশে দাড়ানো শিশু ফারজানাকে সজোরে ধাক্কা মেরে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় জনতা আহত ফারজানাকে উদ্ধার করে নগরীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করান। তবে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন আহত শিশু ফারজানার অবস্থা আশংকাজনক। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। পরে গতকাল বিকেলে ঢাকায় চিকিসাধীন অবস্থায় ফারজানা শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করে।
আপনার মতামত লিখুন :