তরিকুল ইসলাম সুমন : নৌযানের নবায়ন সনদপেতে নৌযান মালিকদের নানানভাবে হয়রানী হতে হচ্ছে। এ হয়রানী রোধে নৌযান মালিকদের ঘরে ঘরে সার্ভে সনদ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নৌ-পরিবহণ অধিদপ্তর। এতে করে অনলাইনে আবদেন করার পরেই দ্রুত সময়ের মধ্যে নৌযান মালিকদের কাছে সনদ পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম।
একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, নৌযান নিবন্ধনের পরে প্রতি বছর এর হালনাগাদ সনদ নেওয়ার বিধান রয়েছে। একারণে প্রায় সময়েই এ সংস্থার অফিসে নৌযান মালিকদের ভিড় লেগে থাকে। ফলে দ্রুত সনদ নেওয়ারও প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। অনৈতিক লেনদেনেরও খবর রয়েছে। একদিকে নৌযান মালিকদের কষ্ট করে অফিসে এসে সনদের আবেদন করা, সিরিয়াল পাওয়া, সার্ভেয়ার বা জরিপকারীকে নিয়ে যাওয়া বিষয় জড়িত রয়েছে। অনেক সময় ইচ্ছে থাকার পরেও সনদ দিতে সময় বেশি লাগে। একারণেই ঘরে বসে সনদ পাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ জন্য তিনি প্রথমে নিজ উদ্যোগে মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সেমিনার করেছেন। এ বিষয়টি উপর মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার তৈরিসহ প্রয়োজনীয় সকল কাজ শেষ করেছেন। সম্প্রতি এ বিষয়টিকে অনুমোদন দিয়েছেন নৌ মন্ত্রী শাহাজান খান।
সৈয়দ আরিফুল ইসলাম আরো বলেন, কারো নৌযানের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে আনলাইনে আবেদন করতে হবে। পরবর্তীতে আবেদন যাচাই বাছাই করে নৌ যান সার্ভে করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার জাহাজ জরিপকারকদের মাধ্যমে জাহাজ জরিপ করাতে হবে। এর কিছু দিনের মধ্যেই সনদ তৈরি হয়ে যাবে। এর পরে মালিক নিজের ইচ্ছে মতো সনদ ঘরে বসেই প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
তিনি জানান, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে নৌযানের সংখ্যা দেশে প্রায় ছোট বড় মিলিয়ে ৫ লাখ নৌযান রয়েছে। কিন্তু এ গুলোর মধ্যে ১৫ হাজারের মতো নৌযান নিবন্ধন করতে পেরেছে এই সংস্থাটি। তবে এতো কম সংখ্যক সার্ভেয়ার দিয়ে এসব নৌ যান সার্ভে করা সম্ভব নয়। এজন্য দ্রুত সার্ভেয়ার নিয়োগ করা ও জরুরী। এই প্রক্রিয়াটি কাল (আজ) নৌ মন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ১২ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে।
অপরদিকে সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মার্সেন্ট শিপিং অধ্যাদেশ ১৯৮৩ অনুযায়ী সমুদ্র ও উপক‚লীয় এলাকার সমুদ্রগামী জাহাজ ৩৬, কোস্টোর ৮৩, যাত্রীবাহী ১৫, ট্যাংকার ৯৫ টি, মাছ ধরা ট্রলার ৬৭৫১টি, মাল পরিবহণ নৌযান ২৫৪৭টি এবং অন্যন্য ১৯৮টি মিলে ৯৭২৫ টি নিবন্ধর করা হয়েছ। অন্যক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নৌ অধ্যাদেশ ১৯৭৬ অনুযায়ী যাত্রীবাহী ২১২৬, মালবাহী ২০৮৮, ফেরী ৯৪ টি, ট্যাংকার ১৬০টি, ডাম্পবার্জ ১৬৭৪, মাছ ধরা নৌকা ৭০, ড্রেজার, বালুবাহী নৌযান, ওয়ার্ক বোট ৫০৬০টি মিলে মোট ১১৩০৮ টি নৌ যানের নিবন্ধন রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :