শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ০৫:৪৫ সকাল
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ০৫:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজনৈতিক দলগুলোর মত বিরোধ থাকলেও আলোচনায় ইভিএম

সাইদ রিপন: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পর বিরোধী মত রয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছে।অন্যদিকে আওয়ামী লীগেরনেতৃত্বাধীন মহাজোট ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে।

সম্প্রতি ‘নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে ইলেক্ট্রনিক ভোটিংমেশিন (ইভিএম) ক্রয়, সংরক্ষণও ব্যবহার’ শীর্ষক একটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।তবে প্রকল্পটির বেশ কিছু বিষয় স্পষ্টকরার জন্য পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ণ কমিটি (পিইসি) মতামত দিয়েছে। গত ১৯ আগস্ট পিইসির সভায় এ মতামত দেয়া হয়।

জাতীন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি)সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেছেন,৩০আগস্ট কমিশন সভায়আরপিও সংশোধন-সংক্রান্তবিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।তারপর সেটা ভেটিংয়ের(যাচাই-বাছাই) জন্য আইনমন্ত্রণালয়ে যাবে।আইন পাসহলে তার পরে রাজনৈতিকলগুলোর সঙ্গে কথা বলবেকমিশন। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়াহবে, সংস নির্বাচনে ইভিএমব্যবহার করা হবে কি হবে না।

তবে সংসদ নির্বাচনে ইভিএমব্যবহার করতে আরপিওসংশোধন করা হচ্ছে সে বিষয়েভিন্নমত পোষন করে একজন নির্বাচন কমিশনার ‘নোট আবডিসেন্ট’ দেওয়ার প্রস্তুতিনিচ্ছেন। তার নোটে বলেছেন, বিগত ২৬ আগস্ট আরপিওসংশোধনের জন্য কমিশনসভায় তিন ধরনের প্রস্তাবউপস্থাপন করেন সেদিন দুটিপ্রস্তাব বাদ দিয়ে কেবলএকাদশ সংসদ নির্বাচনেইভিএম ব্যবহারের বিষযটিআলোচনার সীমাবদ্ধ রাখা হয়।পরবর্তিতে ৩০ আগস্ট পর্যন্তকমিশন সভা মুলতবি করা হয়।স্থানীয় নির্বাচনগুলোতেইতমধ্যে ইভিএম ব্যবহার করাহচ্ছে । এতে রাজনৈতিক দলভোটাররে কাছ থেকে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। প্রধাননির্বাচন কশিমনার প্রথম থেকেবলে আসছেন রাজনৈতিক দলগুলো সম্মত হলে সংস নির্বাচনেইভিএম ব্যবহার হবে। সরকারেপক্ষ থেকে স্বাগত জানালেওবিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ থেকেবিরোধীতা করা হয়েছে। তাইএকাদশ সংসদ নির্বাচনেএভিএম সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধন্তগ্রহণের পূর্বে রাজনৈতিক রেরসঙ্গে অধিকতর আলোচনাকরার প্রয়োজন ছিল। তিনিবলেন, এর আগে ৫০ কোটিটাকার ইভিএম ক্রয়ের নথিতেআমি ভিন্নমত প্রকাশকরেছিলাম।

সম্প্রতি ইভিএমের জন্য যেপ্রকল্প তৈরি করা হয়েছে তাতেব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২১কোটি টাকা । কোন কোনরাজনৈতিক দলের বিরোধীতার মুখে আগামী সংস নির্বাচনইভিএম ব্যবহার যেখানেঅনিশ্চিত সেখানে এ বিপুলপরিমান অর্থ ব্যয় করে ক্রয়করা কতটা যৌক্তিক।

ইসি সূত্রে জানায়, ইসি যেচাহিদা পত্র দিয়েছে তাতেএকাদশ জাতীয় সংসদনির্বাচনের ৩০০ আসনে ইভিএমপ্রয়োজন ২ লাখ ৬৪ হাজার।ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রামসিটি করপোরেশনে একসঙ্গেভোটগ্রহণ করতে গেলে ইভিএমপ্রয়োজন ২৩ হাজার।একইভাবে দেশের ১১ সিটিতেএকসঙ্গে ভোটগ্রহণ করতেগেলে ইভিএম লাগবে ৩৫হাজার। ৩২৩ পৌরসভায় এপদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করতে হলেইভিএম লাগবে ৩৫ হাজার।

ইসির তথ্য অনুসারে, দেশেইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা ৪হাজার ৫৫৫টি। এসব ইউপিতেএকসঙ্গে ভোটগ্রহণ করতেইভিএম লাগবে ৩ লাখ ১৮হাজার ৫০০টি। তবে এ ক্ষেত্রেইসি ভিন্ন পরিকল্পনা করেছে।পর্যালোচনাপত্রে উল্লেখ করাহয়, ইউপি নির্বাচন কয়েক ধাপেঅনুষ্ঠিত হয়। ইতোপূর্বে প্রতিটিধাপে সর্বোচ্চ ৭৫০টির মতোইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিতহয়েছে। সে ক্ষেত্রে একেক ধাপেইভিএম প্রয়োজন ৫২ হাজার৫শ।

জানা গেছে, ‘নির্বাচন ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার প্রকল্পের’ সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা যায়, ভোট গ্র্হণ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত, বিশ্বাসযোগ্য ও আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর করা। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এক লাখ পঞ্চাশ হাজার (১,৫০,০০০) সেট ইলেকট্রোনিক ভোটিং মেশিন প্রচলনের মাধ্যমে নির্বাচনী ফলাফলে বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি।

প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে তিন হাজার ৮২৯ কোটি যা পুরোটাই বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে।প্রকল্পের বাস্তবাযনকাল মেয়াদ শেষ জুন ২০২৩।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানাগেছে, ১৯ আগস্টের সভাটিবিশেষ কিছু কারণে মূলতবিকরা হয়েছে। পিইসির সভায়প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইছাড়াই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছেমর্মে মতামত এসেছে।প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়েরপ্রয়োজনীয়তার ব্যাপারেআলোচনার তাগিদ দিয়েছেপিইসি। প্রকল্পে ২০৪ জনপরামর্শকের প্রয়োজনীয়তাজানতে চেয়েছে পিইসি।এক্ষেত্রে পরামর্শকের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও কর্মপরিধিডিপিপিতে উল্লেখের জন্য বলাহয়েছে। প্রকল্পে ৩১১০ জনেরপ্রশিক্ষণের কথা উল্লেখথাকলেও তারা কারা সে বিষয়েউল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া৩০জনকে বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রদানের কথা বলা হলেওতাদের পরিচয় জানানো হয়নিজানিয়ে এ ব্যপরে বিস্তারিত ডিপিপিতে উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে পরিকল্পনা কমিশন মতামত দিয়েছে।

গতকাল রাজধানীরআগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনভবনের নিজ কার্যালয়ে ইসিসচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানান, আগামীএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেঅনুষ্ঠিত হবে। জানুয়ারিতেনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ারসম্ভাবনা নেই। কারণ, নতুনবছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদেরস্কুল শুরু হয়ে যাবে। সে সময়নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদেরলেখাপড়ার ক্ষতি হবে। তা ছাড়াডিসেম্বরের শেষ দিকেশিক্ষার্থীদের ছুটি থাকে। ইসিসচিব বলেন, ডিসেম্বরের শেষসপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে অনুযায়ী নির্বাচনী সবপ্রস্তুতি গ্রহণ করে কাজ করেচলেছে ইসি। নির্বাচনকে ঘিরেএরই মধ্যে ৮০ ভাগের বেশিকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ইভিএম ব্যবহার করার আগেভিত্তিস্বরূপ আইন রকার। ৩০আগস্ট কমিশন সভায়আরপিও সংশোধন-সংক্রান্তবিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।তারপর সেটা ভেটিংয়ের(যাচাই-বাছাই) জন্য আইনমন্ত্রণালয়ে যাবে। হেলালুদ্দীনআহম আরো বলেন, আইন পাসহলে তার পরে রাজনৈতিকলগুলোর সঙ্গে কথা বলবেকমিশন। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়াহবে, সংস নির্বাচনে ইভিএমব্যবহার করা হবে কি হবে না।আর তা ছাড়া জাতীয়নির্বাচনের পরেই সারা দেশেরসব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঅনুষ্ঠিত হবে, সেখানেওইভিএম ব্যবহার করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়