শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:২৭ দুপুর
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:২৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘বিকাশে টাকা দিলে জায়গামতো পৌঁছে দেওয়া হয় ইয়াবা’

ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। তবুও থেমে নেই মাদকের বেচাকেনা। কৌশল পাল্টেছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। মোবাইল ফোনে খদ্দেরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন স্থানে গাঁজা বা ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে তারা। অথবা তাদের কথামতো নির্ধারিত স্থানে গিয়ে চাহিদা মতো মাদক কিনছে মাদকসেবীরা। তবে একটু পরপরই অবস্থান বদলাচ্ছেন মাদকের কারবারিরা। তাই নির্দিষ্ট স্থানে তাদের অবস্থান ট্রেস করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ ও কয়েকজন মাদকসেবীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, রাজধানীর সাত তলা বস্তিতে এক সময় মাদকের রমরমা ব্যবসা ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে সব মাদক স্পট ভেঙে দিয়েছে। এই বস্তিতে এক সময় যারা প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করতো, বর্তমানে তারা পলাতক থাকলেও বস্তির বাইরে মাদক ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছেন।

বেশ কয়েকজন মাদকসেবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘মাদক ব্যবসায়ীয়রা ভ্রাম্যমাণভাবে নেশাজাতদ্রব্য বিক্রি করছে। বিকাশে টাকা দিলে জায়গামতো পৌঁছে দেওয়া হয় ইয়াবা। ওরা কখনও এক জায়গায় বেশিক্ষণ অবস্থান করে না। এখন নির্দিষ্ট স্পটে নয়, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেই মাদক কেনাবেচা চলছে।’

সাত তলা বস্তির শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি বলেন, ‘এখন ইয়াবা কিনতে হলে মোবাইলে কল দিয়া বিকাশে ট্যাকা (টাকা) পাঠাইতে হয়, এরপর পাইটু (ছোট বাচ্চা/চেলা) আইসা মাল (ইয়াবা) দিয়া যায়। কে বেচে এইটা দেখা যাবে না, ট্যাকা দিলে ঘণ্টা খানেক পরে মাল পাওয়া যাইবো। তবে পরিচিত খোর ছাড়া কারও কাছে মাল বেচে না ওরা।’

ঘুরে ঘুরে স্থান পরিবর্তন করে চলছে মাদকের ব্যবসা

এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, রাজধানীর সাত তলা বস্তির চিহ্নিত ২৪ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে রিপন ওরফে গামাসি রিপন ও শাকিল বর্তমানে কারাগারে আছে। বাকি ২২ জন মাদক ব্যবসায়ী বর্তমানে পলাতক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে সাত তলা বস্তির ভেতরে মাদক ব্যবসায়ীরা প্রবেশ করতে পারে না। তবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাদকসেবীদের কাছে ইয়াবা বিক্রির করে বলে মহারাজা নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তথ্য আছে। বিকাশে টাকা পাঠানোর পর তার লোক মাদক সরবরাহ করে। ওর ১০-১২ জন পাইটু (ছোট বাচ্চা) আছে। মহারাজা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকাভুক্ত একজন মাদক ব্যবসায়ী। এর আগে মাদক বিক্রির অপরাধে একাধিকবার পুলিশের কাছে ধরা খেয়েছে। বারবার বের হয়ে সে আবারও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও তার তিন শ্যালক রাসেল, সালাম, মোখলেছ পলাতক থেকেই গোপনে মাদক বিক্রি করে।

মহাখালীর সাততলা বস্তির স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক  বলেন, ‘এখন সাত তলা বস্তিতে মাদকের কোনও স্পট নাই। পুলিশ সব উচ্ছেদ করে দিয়েছে। এখন এখানে মাদক ব্যবসায়ীরা ঢুকতে পারে না। র‌্যাব-পুলিশ প্রায় সময় এখানে টহল দেয়। বস্তিতে মাদক বেচাকেনা না হলেও বস্তির বাইরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাদক বিক্রি হয়।’

স্থানীয়রা বলছে, মহাখালীর সাত তলা বস্তি এলাকার বসবাস করতো মাদক ব্যবসায়ী সীমা ও রিমা। তাদের বাড়িতে প্রতিদিনেই মাদকসেবীদের আড্ডা বসতো। তবে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার এড়াতে এরা গা-ঢাকা দেয়। পরে পুলিশ ও প্রশাসন মিলে বস্তিতে থাকা তাদের দুই বাড়ির একটিতে ‘কমিউনিটি ডে-কেয়ার সেন্টার’ এবং অন্যটিতে ‘মসজিদ’ গড়ে তোলে। তবে মসজিদের কাজ এখনও চলমান রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনুদানে এই ‘ডে-কেয়ার সেন্টার’টি পরিচালিত হয়।

মাদকের আস্তানায় এখন ডে কেয়ার সেন্টার হয়েছে সাত তলা বস্তিতে

বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বোরহান উদ্দিন  বলেন, ‘সাত তলা বস্তিতে মাদকের কোনও স্পট নেই, কোনও মাদক বিক্রেতাও নেই। গোপনে কোথাও মাদক বিক্রি হচ্ছে এরকম তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেবো।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের (উত্তর) সহকারী পরিচালন খোরশেদ আলম বলেন, ‘চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের ফলে মাদকের সরবরাহ অনেকাংশে কমে গেছে। তবে একেবারে বন্ধ বলা যাবে না। তবে আগের মত প্রকাশ্যে কোনও প্রকার মাদক বিক্রি হচ্ছে না। আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে।’

প্রসঙ্গত, এর আগে এই বছরের ২৪ মে দিনগত রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামরুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়। নিহত কামরুল তেজগাঁও রেললাইন বস্তি এবং মহাখালী সাত তলা বস্তি এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। সে ১৫টির বেশি মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি ছিল। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়