এম.ইউছুপ রেজা, চট্টগ্রাম : প্রধানমন্ত্রীর অর্থ সাহায্য ফিরিয়ে দেওয়া একাত্তরের বীরাঙ্গনা বোয়ালখালীর রমা চৌধুরী জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) আইসিউতে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের আইসিউতে স্থানান্তর করানো হয় তাকে।
শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তিনি। রয়েছে ডায়বেটিসও। শরীরের রক্তচাপ কোনভাবে নিয়ন্ত্রনে রাখা যাচ্ছে না। কখনো কমছে আবার কখনো বাড়ছে-এমনটি জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বাসায় পড়ে গিয়ে কোমরে ফ্রাকচার হয় রমা চৌধুরীর। ওইদিনই তাকে নগরীর মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে একটানা অসুস্থ ছিলেন তিনি। পরে গত ১৭ জানুয়ারি তাকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিলে গত ২৫ মার্চ তিনি গ্রামের বাড়ী বোয়ালখালীতে চলে যান।
কিছুদিন ভালো থাকার পর আবারও তার রক্তবমি হলে ফের ভর্তি করা হয় চমেক হাসপাতালে। সেই থেকে তিনি চমেক হাসপাতালের চতুর্থ তলায় মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে ছিলেন।
সাহিত্যিক রমা চৌধুরীকে সার্বক্ষনিক দেখভাল করেন তাঁরই বইয়ের প্রকাশক আলাউদ্দীন আহমদ খোকন বলেন, রমা চৌধুরীর রক্তচাপ উঠানামা করছে। শরীরের অনেকাংশে ফুলে গেছে। রক্তশূন্যতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস সমস্যাও দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। সেগুলোর রিপোর্ট পেলে চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা জানাবেন।
১৯৪১ সালে বোয়ালখালীর পোপাদিয়া গ্রামে জন্ম হয় রমা চৌধুরীর। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৩ মে নিজবাড়িতে পাক বাহিনীর দোসরদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন সাহিত্যিক রমা চৌধুরী।
প্রবন্ধ উপন্যাস ও কবিতা মিলে এপর্যন্ত ১৯টি গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে তাঁর। দেশ স্বাধীনের পর হারিয়েছেন তিন ছেলে। সন্তান হারানোর বেদনা আর সীমাহীন দারিদ্র ও দু:খ কষ্টকে সাথী করে কেটেছে তার জীবন।
রমা চৌধুরী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে চমেক হাসপাতালে দেখতে যান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া। এসময় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.মফিজুর রহমানসহ নেতৃবৃন্দ তার সাথে ছিলেন।
এছাড়াও দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবণা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি ও তাকে দেখতে যান এবং চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
আপনার মতামত লিখুন :