শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ০২:০২ রাত
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০১৮, ০২:০২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রপ্তানি আয়ে চামড়া খাতের বিপর্যয়

ফয়সাল মেহেদী : চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বিশ্বব্যাপি বাড়ছে।তবে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে চামড়াজাত পণ্যের অবদান ক্রমেই কমছে। রপ্তানি আয়ের প্রধান ৮টি পণ্য খাতের মধ্যে থাকা চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের রপ্তানি আয় আগের অর্থবছরের তুলনায় সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১২.০৩ শতাংশ কমেছে। আর চলতি অর্থবছরের শুরুতে অর্থাৎ জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫.৫৫ শতাংশ কম।

চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, চামড়া খাতের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দরপতন চলছে। ফলে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় কমে গেছে। তারা বলেন, ক্রেতা না থাকায় আগের বছরের পুরাতন চামড়াও রয়ে গেছে। দেশে চামড়ার দর বর্তমানে সর্বনিম্ন হলেও লোকসানের ভয়ে কেউ কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি (বিসিক) সাভারে এখনো পরিবেশবান্ধব শিল্প নগরী গরে তুলতে পারেনি। সিটিপি প্লানও অকেজো। ফলে ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পণ্য কিনছে না। চীনের ক্রেতারাও পণ্য কিনছে কম। এর প্রভাব পড়ছে রপ্তানি আয়ে।

অ্যাপেক্স ট্যানারির নির্বাহী পরিচালক আবদুল মাজেদ বলেন, প্রায় কারখানায়ই পুরাতন চামড়া রয়ে গেছে। ভারতের ব্যবসায়ীরা সহজ শর্তে পর্যাপ্ত ব্যাংকঋণ পায়। বাংলাদেশে সে সুযোগ নাই। এমতাবস্থায় চাহিদার বেশি নতুন চামড়া কেনা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ক্রেতারা এখনো নতুন চুক্তি করছেন না। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ধাপে ধাপে চামড়া কেনা হবে।

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত চামড়ার পাশাপাশি চামড়া থেকে তৈরি জুতা, ব্যাগ, জ্যাকেট, হাতমোজা, ওয়ালেট, বেল্ট, মানিব্যাগসহ চামড়ার তৈরি হস্তশিল্প পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন সময়ে চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও চামড়ার পাদুকা রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৮ কোটি টাকা। তবে ওই সময়ে এ খাত থেকে ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ১০ হাজার টাকা রপ্তানি আয় করে বাংলাদেশ। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় যা ২১.৩৪ শতাংশ বা ২৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা কম।

এর আগের বছরের একই সময়ে (জুলাই’১৬-জুন’১৭) এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১২৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক অর্থবছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ১২.০৩ শতাংশ বা ১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সর্বশেষ অর্থবছরের মোট রপ্তানি আয়ে ২.৯৬ শতাংশ অবদান রেখেছে এই খাত।

এদিকে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ খাত থেকে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রথম মাসে অর্থাৎ জুলাইতে এ খাত থেকে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫.৫৫ শতাংশ কম আয় হয়েছে। আলোচ্য সময়ে চামড়া-চামড়াজাত পণ্য ও চামড়ার পাদুকা রপ্তানি করে ৯ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা রপ্তানি আয় হয়েছে। এর আগের অর্থবছরের জুলাইতে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১১ কোটি ৬৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাইতে রপ্তানি আয় কমেছে ২১.৭৩ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের জুলাই মাসের তুলনায় ২০১৮ সালের জুলাইতে চামড়া রপ্তানিতে রপ্তানি আয় কমেছে ২৪.৩২ শতাংশ; লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কমেছে ৩৬.২০ শতাংশ। আর চামড়াজাত পণ্যে রপ্তানি আয় কমেছে ৬১.৪৯ শতাংশ; লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কমেছে ৪৯.১৮ শতাংশ। অবশ্য চামড়ার পাদুকায় রপ্তানি আয় বেড়েছে ২.৫২ শতাংশ; লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে ২৮.৫৭ শতাংশ।

উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের নির্ধারিত রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। তবে অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার ৯৭.৭৮ শতাংশ অর্জন হয়েছে। এর আগের অর্থবছর ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা রপ্তানি আয় হয়। সেই হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫.৮১ বেশী রপ্তানি আয় হয়। চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়