সাইদ রিপন : নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে আইন পাস, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতসহ সবকিছু ঠিক থাকলে জাতীয় নির্বাচনের এক-তৃতীয়াংশ আসনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা আছে ইসির।
মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সচিব এ কথা জানান। হেলালুদ্দীন বলেন, আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জানুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের স্কুল শুরু হয়ে যাবে। সে সময় নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি হবে। তাছাড়া ডিসেম্বরের শেষ দিকে শিক্ষার্থীদের ছুটি থাকে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সে অনুযায়ী নির্বাচনী সব প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে ইসি। নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে ৮০ ভাগের বেশি কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সচিব বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার পরিকল্পনা আছে ইসির।সে লক্ষ্যে দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। তবে ইভিএম ব্যবহার করার আগে এর আইনটি সংশোধন করা দরকার। বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) কমিশন সভায় আরপিও সংশোধন-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তারপর সেটা ভোটিংয়ের (যাচাই-বাছাই) জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আইন পাস হলে তারপরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলবে কমিশন। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে কি হবে না। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনের পরেই সারাদেশের সব উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানেও ইভিএম ব্যবহার করার চিন্তা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে আপত্তি করলেও ৩ হাজার ৮২৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে ইসি। দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য একটি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রকল্পটি নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না দেখাতে পারায় এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। এর আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে প্রায় সব দলই ইভিএমের বিপক্ষে মত দেয়। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট শুরু থেকেই ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে নির্বাচনে এই পদ্ধতির প্রয়োগ হবে না বলে আশ্বস্ত করেছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। সিইসি বলেছিলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সুযোগ নেই। কিন্তু কতিপয় উৎসাহি কর্মকর্তার কারণে ইসি আবার ইভিএমের দিকে ঝুঁকছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এখন এই ইভিএম ব্যবহার করতে গণপ্রতিধিত্ব অধ্যাদেশে সংশোধনী আনারও উদ্যোগ নিয়েছে ইসি।
আপনার মতামত লিখুন :