নূর মাজিদ: দেনা জর্জরিত ৭০ ভারতীয় কোম্পানির ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি রুপি। এমনকি এই বিপুল পরিমাণ ঋণ নেবার পর সময় মতো কিস্তি পরিশোধ করতেও ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানিগুলো। ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এই কোম্পানিগুলোকে সময়মত ঋণের কিস্তি সুদ সমেত পরিশোধে তাগাদা জোরদার করেছে। বিশেষ করে, দেশটির ব্যাংকিং খাতে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই এমন কঠোর অবস্থানে গেছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির ফেব্রুয়ারি মাসের ঋণ নীতিমালায় সময়মতো দেনা পরিশোধে ১৮০ দিন সময় দেবার কথা বলা হয়। এই সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের প্রদত্ত ঋণ আদায়ের নোটিশ পাঠাতে পারবে। ফলে ৩ লাখ ৬০ হাজার কোটি রুপি দেনা ঘাড়ে নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এমন ৭০ টি কোম্পানিকে দেওলিয়া ঘোষণা করবার সম্ভবনা সৃষ্টি হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের পূর্বে বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলো ঋণ পরিশোধে অনির্দিষ্টকাল সময় পেতো। তবে, নিজেদের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দেনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতীয় সরকার সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং খাত সংস্কারে মনোযোগী হলে এমন সিদ্ধান্ত নেয় আরবিআই।
এখন থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ কোম্পানিগুলোকে দেনা এবং দেওলিয়া আইনের আওতায় আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে। এই সকল পদক্ষেপের মাধ্যমে আরবিআই দেশটির ব্যাংকিং খাতের আনুষ্ঠানিক ১৪ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির দেনা কমিয়ে আনতে চাইছে। বিশেষ করে যখন উদীয়মান বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি বলে বিবেচিত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের ব্যাংকিং খাতের আনাদায়ী ঋণের পরিমাণ সবচাইতে নাজুক অবস্থানে রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আরবিআই অন্তত ৪০ টি কোম্পানিকে আদালতের দ্বারস্থ করবার নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন ঘোষণার প্রেক্ষপটেই টাটা ষ্টীল ৩৫ হাজার কোটি রুপি দেনার দায়ে ধুঁকতে থাকা ভূষণ স্টিল’কে কিনে নেয়। ভূষণ ষ্টীল নিজেকে দেওলিয়া ঘোষণা করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তাদের অনাদায়ী ঋণ পরিশোধ করে।
এই বিষয়ে বাজাজ গ্রুপের আর্থিক পরিচালক প্রবাল ব্যানার্জি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন দেনা আদায় কর্মসূচীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলারও সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে যদি এই নীতি ব্যর্থ হয়, তবে অসংখ্য ভারতীয় কোম্পানি তাদের বাজার হারাবে এবং জোরপূর্বক নিজেদের দেওলিয়া ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিৎ প্রকৃত দেনাগ্রস্থ কোম্পানিগুলোর জন্য সঠিক ও উপযুক্ত ক্রেতার সন্ধান করা। টাইমস অব ইন্ডিয়া
আপনার মতামত লিখুন :