সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের টাঙ্গন নদীর মাঝে অসহায় ৫০ পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ধর্মপুর-১ ও ২ গুচ্ছ গ্রাম। গেল একমাস আগে এই পরিবারগুলো ঘরে উঠে তাপদাহে নাকাল হয়েছে আর চলতি বর্ষায় বন্যায় ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় পরিবার গুলো। নদীর বালু উত্তোলন করে উচু করা আর গুচ্ছগ্রামের নির্মাণ কাজ শেষ না করে পরিবারগুলোর কাছে দেয়ায় ভোগান্তিতে তারা। নদীর মাধ্যখানে গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে দ্বিমত ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতামত গ্রহণ না করায় প্রকল্পের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিশিষ্টজনদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে টাঙ্গন নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরে নির্মাণ করা হয় ৫০ অসহায় পরিবারের জন্য গুচ্ছ গ্রাম। ওই নদীর দুই পাশ থেকে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করে উচু করা হয়। আর সেই বালুর উপরেই নির্মাণ করা হয় দেড় লাখ টাকার ব্যয়ের একটি করে টিনের ঘর। সাথে দেয়া হয় একটি করে বন্ধু চুলা আর ওই এলাকায় ৬টি নলকুপ। গেল একমাস আগে পরিবারগুলো ঘর উঠেই পরে তাপদাহে কবলে। প্রখর রোদ, টিনের গরম আর দগ্ধ বালুর উত্তাপে ঘর ছাড়া হয় তারা। আর চলতি বর্ষার পানিতে ধুয়ে নদীতে চলে যাচ্ছে চারপাশের বালু আর বন্যার আশঙ্কায় দু:চিন্তায় পরেছে অসহায় এই পরিবার গুলো। তাদের অভিযোগ, প্রতিপরিবারের কাছে ঘরের দলিল হস্তান্তরের জন্য সংশ্লিষ্টরা আদায় করছে ৭শ টাকা করে। আর ঘরের ভিতরে পার্টিশন না থাকায় এক রুমেই ৬-৭জন সদস্য নিয়ে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে তাদের। বিশিষ্টজনরাও এই গুচ্ছগ্রাম নিয়ে ব্যক্ত করেছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
নদীর মাঝে গুচ্ছগ্রাম নির্মানের স্থান নির্বাচনে ভুল মন্তব্য করে উপজেলা চেয়াম্যান তৈমুর রহমান বলেছেন, বন্যায় ঘর তলিয়ে যাওয়া ও প্রাণহানি আশংকা রয়েছে। আর এই গ্রামটি নির্মাণের সার্বিক দায়িত্বে থাকা সদস্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসলাম মোল্লা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতামতে এখানে বন্যার কোন আশঙ্কা নেই আর স্থান নির্বাচনে নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে যান তিনি। তবে ওই নদীতে গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণে পানি উন্নয়নের বোর্ডের কাছে কোন মতামত চাওয়া হয়নি বলে জানান পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে ধর্মপুর গ্রামের টাঙ্গন নদীর চরে নির্মাণ কাজ শুরু হয় গুচ্ছ গ্রামটি। ২৯মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফরে এলে ৩৭টি প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধনের মধ্যে ছিল এই গুচ্ছ গ্রাম। ৫০টি ঘর নির্মাণে ৭৫লাখ টাকা বরাদ্দ হয় প্রকল্প বাস্তবায়নে।
আপনার মতামত লিখুন :