ডেস্ক রিপোর্ট : কুমিল্লা উত্তর জেলার মধ্যবর্তী থানা মুরাদনগর। আশপাশের পাঁচ থানার মদ্যপায়ীরা বিভিন্ন যানযোগে সহসাই আসতে পারে এই থানায়। ফলে দিনের পর দিন মদ্যপায়ীদের ভিড় বাড়তে থাকে এখানে। এতে লাভজনক হয়ে ওঠে মদের ব্যবসা। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেদারছে মদ বিক্রি চলছে মুরাদনগরে।
একাদিকবার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিপুল পরিমাণ মদসহ আটক করলেও কোনও না কোনওভাবে ব্যবসা তাদের থেমে নেই। গতকাল রবিবার রাতেও কুমিল্লা জেলার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. এমদাদুল্লাহর নেতৃত্বে ১৩ আনসার ব্যাটালিয়নের একটি দল মদ বিক্রেতা গনেশ রবি দাসকে পুনরায় বিপুল পরিমাণ মদসহ আটক করে তার নিজ বাড়ি থেকে। আটক গনেশ (৫৫) উপজেলার শিবানিপুর গ্রামের মৃত শ্যামল রবি দাসের ছেলে।
কুমিল্লা জেলার মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. এমদাদুল্লাহ বলেন, ১৩ আনসার ব্যাটালিয়নের একটি দল নিয়ে গনেশের বাড়ি রেইড দিয়ে পাঁচ গ্যালন মদসহ তাকে আটক করেছি। মাদক আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ২০ বছরে বহুবার আইনশৃঙ্খলা বাহির হাতে আটক হয়েছেন গনেশ। তিনি আটক হলে পরিবারের কেউ না কেউ চুপিসারে বিক্রি করে মদ। আবার গনেশ ছাড়া পেলে প্রকাশ্যেই বিক্রি চলে। এই স্থান থেকে দেবিদ্বার, নবীনগর ও ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলা থেকে এসে মদ পান করে মদ্যপায়ীরা।
এ ছাড়া মুরাদনগর উপজেলায় আরো চারটি স্থান রয়েছে মদের। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার রামচন্দ্রপুর বাজার এলাকায় রয়েছে তিনটি মদের স্থান। এগুলো শুকলাল, জাপানী বাড়ি এবং জগা বাড়ি নামে পরিচিত। এই তিন স্থানেই জেলার হোমনা, বাঞ্চারামপুর ও নবীনগর থানার একাংশের মদ্যপায়ীরা এসে মদ পান করে।
উপজেলা সদরে থানার তিন শ গজের মধ্যেই সরকারি হাইস্কুল ঘেঁষেই মুচি বাড়ি। তারা দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে নিজেদের জন্য মদ তৈরি করলেও এখন বাইরের লোকজনের কাছে মদ বিক্রি করছে দেদারছে। মদের গন্ধ ছড়িয়ে থাকে হাইস্কুলসহ আশপাশের এলাকায়। নাক চেপে ধরে পথচারীরা আসা-যাওয়া করে। কিন্তু তার চেয়ে বড় বিষয় হলো পাশের ডি আর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্বিষহ অবস্থা নিয়ে শ্রেণীকক্ষে বসতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মদ্যপায়ী বলেন, "দিন শেষে বিকেলে মুরাদনগর মুচি বাড়ি থেকে ৩০ টাকা দিয়ে এক গ্লাস মদ খেলে ভালোই পিনিক (এক ধরনের অনুভূতি) হয়। এত অল্প দামে এবং ঝামেলা ছাড়া আর কোনও মাদক পাওয়া যায় না বর্তমানে। তাই বেশি না, 'এক গ্লাস' হলেই আমার পিনিক চলে আসে।"
উপজেলার বি সার্কেল মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।' সূত্র : কালের কণ্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :