শিরোনাম
◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি

প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট, ২০১৮, ০৪:০৭ সকাল
আপডেট : ২৭ আগস্ট, ২০১৮, ০৪:০৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গ্রামে বিএনপি নীরব, আওয়ামী লীগ ভাগে ভাগে সরব

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : ঈদে গ্রামে ছিলাম। বোঝার চেষ্টা করেছি গ্রামের অবস্থা। রাজনীতি, দলগুলোর অবস্থা, কী ভাবছে দেশের মানুষ রাজনীতি নিয়ে ইত্যাদি। বিশেষত ক’মাস পরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ সংসদ নির্বাচন, সেই বিবেচনায় বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের চিন্তা-ভাবনার ছিটেফোঁটা বোঝার চেষ্টা। ঈদে বেশির ভাগ মানুষই কোরবানি নিয়েই ব্যস্ত ছিল। গরু কেনা, বেচা এবং কোরবানি নিয়ে। তারপরেও ফাঁকে ফাঁকে বোঝা গেল এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। জামায়াত সমর্থক পরিবারগুলো বাহ্যিকভাবে নিষ্ক্রিয় দেখলেও গোপনে তারা সক্রিয় আছে, দুশ্চিন্তাও আছে তাদের মধ্যে। আগে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা যতটা প্রকাশ্যে কথা বলত, হুমকিÑ ধামকি দিত এখন তাদের কৌশলে পরিবর্তন এসেছে। কিশোর-তরুণদের হাতছাড়া তারা করছে না, ধর্ম নিয়ে যারা ব্যস্ত থাকেন তাদের আড্ডাতেও জামায়াত শিবির সক্রিয় আছে। দৃশ্যত চুপচাপ আছে স্থানীয় বিত্রনপির নেতাকর্মীরা। কেন্দ্র থেকে তেমন কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় হাত গুটিয়ে বসে আছে। তেমন সংহতি নেই, জনে জনে বিভক্তি কমবেশি আছে। নেতারা উপজেলা, জেলা শহর এবং ঢাকায় বেশি থাকেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দৃশ্যত সক্রিয় থাকলেও সমস্যার অন্ত নেই। এমপির কাজকর্ম নিয়ে সবার মধ্যেই যৌক্তিক-অযৌক্তিক সমালোচনা আছে, অন্য নেতারাও মনোনয়ন প্রত্যাশী। স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে আছেন। তারাও ব্যস্ত যার যার চাওয়া পাওয়া নিয়ে। আওয়ামী লীগ টানা প্রায় দশ বছর ক্ষমতায় আছে। তাতে দল গুছিয়ে রাখার চেষ্টা খুব একটা হয়েছে বলে শুনিনি। এই সময়ে দলের পরীক্ষিত, আদর্শবান নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সংখ্যা কমেছে, দ্বন্দ্বে, স্ফীতি ঘটেছে আদর্শহীন, সুবিধাবাদী, এলাকার বিতর্কিত কর্মিদের। এদের কারও কারও অতীত রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক আছে। তাদের জীবন-যাপন, আচার আচরণ নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ আছে। শেখ হাসিনা গত ১০ বছর দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। কিন্তু মূত্রখোর এসব নেতা-নেত্রীর সাফল্যেও সুফল নিজেদের পকেটে ঢোকানোতে বেশি ব্যস্ত ছিল। রাজনীতি এদের কাছে অর্থ-টাকাপয়সা কামানোর ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কোনো বই-পুস্তক পড়ার এদের প্রয়োজন নেই। আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি গ্রাম পর্যায় কীভাবে নিয়ে যেতে হবে-সেই দীক্ষারও প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।

এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে তারা যে জনসমর্থন হারায় তা তারা কতটা বোঝেন, মানে তা নিয়ে বিস্মিত হয় কেউ তারা নিয়ন্ত্রণ মানে না, শোনে না যারা যার খুশি মতো এলাকায় দাপট দেখানোর চেষ্টা করে। এভাবেই চলছে বেশির ভাগ, অঞ্চলে। আসলে রাজনৈতিকবাবে সচেতন, পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মী ছাড়া তৃণমূল পর্যায় দলের ভাবমর্তি বাড়ার কোনো কারণ নেই। এই সমস্যা এখন আওয়ামী লীগে প্রকট, ২০০১-২০০৬ সাল বিএনপিতে ছিল। এ ধরনের নেতাকর্মীতে তৃণমূল ভরে গেছে ফলে দলের সমর্থন এরা নষ্ট করে চলছে। জানি না, আওয়ামী লীগ কীভাবে বিতর্কিত নেতা কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিবে। পরিচ্ছন্ন ইমেজ ছাড়া কাউকে প্রার্থী করে সাধারণ মানুষের ভোট টানা কতটা সম্ভব হবে জানি না। অনেক আসনেই রাজনীতিতে দিন বদলের স্লোগানকে নতুন বাস্তবতার বিবেচনায় নিতে হবে। সেক্ষেত্রে দলীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েই এগোতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে তার ইমেজ ভালো সেটিকে তিনি এগিয়ে নিতে কীভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। তা তাকেই ভাবতে হবে।

লেখক : অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, বাউবি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়