ডেস্ক রিপোর্ট : চাচা ও ভাতিজার যৌন লালসার শিকার টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী কন্যা সন্তানের মা হয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে সে কন্যা সন্তান প্রসব করে। হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাজমা খলিল এ অপারেশন সম্পন্ন করেন। বর্তমানে মা-মেয়ে উভয়ই সুস্থ আছেন। এর আগে শনিবার ভোর ৫টার দিকে প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর বেডে ভর্তি হয়। সরজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেডে ওই স্কুলছাত্রী মেয়েকে নিয়ে শুয়ে আছেন।
জন্ম নেয়া ওই শিশুর দেখভাল করছেন স্কুলছাত্রীর মা কমলা বেগম ও বড় বোন মরিয়ম। পাশেই নীরবে বসে আছেন বাবা আবুল হোসেন ও ভগ্নিপতি মোখলেছুর রহমান। তাদের চোখে-মুখে শুধুই হতাশার ছাপ। কথা হয় ছাত্রীর বাবা মো. আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার মেয়ে এমনিতেই শিশু তার মধ্যে আবার আরেক শিশুর মা হলো। এখন এ শিশুর দায়িত্ব নেবে কে? আর পিতৃপরিচয় কী? আমি এই মেয়েকে নিয়ে এখন কি করবো। আমি মামলা করার পরও মূল আসামি আনছের আলী ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা আমার মেয়েকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। আমি কী এর কোনো বিচার পাব না। না কি আমি গরিব বলে বিচার পাওয়ার অধিকার নাই? মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিহাতী থানার এসআই মো. মনির হোসেন বলেন, স্কুলছাত্রীর বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি আমি শুনেছি। মামলাটি একটু জটিল। ইতিমধ্যে মামলার এক আসামি শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ওই স্কুলছাত্রী ও শরিফুলের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান আসামি আনছের আলীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, দারিদ্র্যের কারণে কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের আনছের আলীর বাসায় কাজ করতো ওই স্কুলছাত্রী। কাজের সুবাদে আনছের আলী ওই স্কুলছাত্রীকে নিয়মিত ধর্ষণ করতো। ধর্ষণ করার সময় ঘটনাটি দেখে ফেলে তারই আপন বড় ভাই মুনসুর আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম। শরিফুল ঘটনাটি লোকজনের কাছে বলে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সেও ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে চাচা-ভাতিজা প্রায়ই তাকে ধর্ষণ করতো। ধর্ষণের ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে চাচা আনছের আলী ও ভাতিজা শরিফুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। গ্রেপ্তার করা হয় শরিফুলকে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় শরিফুল। ঢাকায় অবস্থান করায় ঘটনার মূলহোতা আনছের আলীকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ।
সূত্র : মানবজমিন
আপনার মতামত লিখুন :