রাজেকুজ্জামান রতন : দেশের সড়কগুলো নির্মাণ কৌশল ও ত্রুটির কারণে এক একটি মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। মহাসড়ক গুলোতে দ্রুত ও স্বল্প গতির যান চলাচলের সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। যারা গাড়ি চালান তাদের গাড়ির ফিটনেসের বালাই নেই। ড্রাইভারদের যথাযথ প্রশিক্ষণ নেই। গাড়ি চালানোর নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা বেধেঁ দেওয়া নেই। একজন ড্রাইভার ১০ বা ১৫ ঘন্টা থেকে শুরু করে ১৮ ঘন্টা পর্যন্ত গাড়ি চালান।
সড়কের উপর গড়ে উঠে অনেক হাটবাজার। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, সড়ক-মহাসড়কে একটি বিজ্ঞানসম্মত গতিসীমা নির্ধারণ করতে। দুর্ঘটনার দায় প্রত্যক্ষভাবে আমরা যতটা পরিবহন শ্রমিকদের উপর চাপাই, দুর্ঘটনার অন্যান্য কারণগুলো ততটাই আড়ালে থেকে যায়। সড়ক নির্মাণের ত্রুটি একটি কারণ। অনিয়ন্ত্রিত মুনাফা লাভের আশায় ড্রাইভাররা ১৫-১৮ ঘন্টা গাড়ি চালাতে বাধ্য হয়। ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো যেভাবে রাস্তায় চলাচল করে এগুলো যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে শুধু ড্রাইভারদের শাস্তি দিয়ে এগুলো বন্ধ করা যাবে না। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনেকগুলো বিষয় আমাদেরকে উম্মোচন করে দিয়েছে। কিভাবে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলে? কিভাবে লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভার গাড়ি চালান? কিভাবে গাড়ি উল্টোপথে চলে? আমরা ভেবেছিলাম এই আন্দোলনের মাধ্যমে যে ত্রুটিগুলো চিহ্নিত হয়েছে সেগুলো দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সে উদ্যোগ আমরা খুব বেশি দেখছি না। প্রতি বছর যখন উৎসব আসে তখন মৃত্যুর মিছিলটা আরও দীর্ঘ হয়।
উৎসবের সময় ঢাকা থেকে ৪০-৪৫ লাখ মানুষ এলাকায় চলে যায়, ঈদের পরে আবারও তারা ফিরে আসে। ফলে সড়কের উপর যে প্রচ- চাপ পড়ে সে চাপ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিটাও থাকে না। ঈদ তো প্রতি বছর নিয়ম করেই আসে। ফলে সড়ক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত যারা তারা তো সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতেই পারেন। এ ব্যাপারে যদি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিটা নেওয়া হতো তাহলে হয়তো এতগুলো মানুষের জীবন অকালে ঝরে যেত না। গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বলা নিষিদ্ধ করা উচিত। আমাদের ড্রাইভার যারা আছেন তারা যদি গাড়ি চালায় আর ফোনে কথা বলে, আশেপাশের কারও সঙ্গে কথা বলে তাহলে তার মনো সংযোগের বিঘিœত ঘটে। যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। এটি খুবই দুঃখ জনক।
পরিচিতি: কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাসদ/মতামত গ্রহণ: ফাহিম আহমাদ বিজয়/সম্পাদনা: আশিক রহমান
আপনার মতামত লিখুন :