শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০১৮, ০৩:৫১ রাত
আপডেট : ২৬ আগস্ট, ২০১৮, ০৩:৫১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাবার লাইব্রেরিতে কাটানো কিছু সময়

সুফিয়ান ফারাবী: দেশ থেকে এসে প্রথম যেদিন উমরার জন্য ঢুকলাম বাদশা ফাহাদ গেটের ডানপাশে লেখা দোখলাম ‘মাকতাবাতুল হারাম’। দলবদ্ধ থাকার কারণে সেদিন মাকতাবায় ঢুকতে পারি নি। দলবদ্ধ থাকার এই এক অসুবিধা। নিজের মন মত কিছুই করা যায় না। সবকিছু করতে হয় আমীরের কথা মত। অন্যথায় দশজনের কথা শুনতে হয়। ভেবেছিলাম, উমরা করে এসে ঢুকবো। কিন্তু উমরার পর শরীর এতোটাই ক্লান্ত ছিল যে, হেটে হোটেলে যাওয়াই দায় হয়ে পড়েছিল।

সৌদিতে চলাচলের দুই ব্যবস্থা। ১. হেঁটে ২. টেক্সি করে। অন্য কোনো অপশন নেই। বাংলাদেশ বা ভারতের মত রিকশা, অটোর ব্যবহার এদেশে এখনো শুরু হয় নি। বাধ্য হেঁটে হেঁটে হোটেলে গিয়ে উঠলাম। কিন্তু মন পড়ে রইল সেই লেখাটির উপর। “মাকতাবাতুল হারাম”। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফজরের জামাতে শরীক হলাম। বিভিন্ন আমল শেশে বাদশা ফাহাদ গেটের কাছে গিয়ে একজনকে আরবিতে জিজ্ঞেস করলাম, মাকতাবায় যাওয়ার পথ কোনটি?

সে আমার কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝলো না। আবার জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি সৌদি নাগরিক? তিনি বুক ফুলিয়ে বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। বুঝলাম তাকে বইয়ের ভাষা বললে কিছুই বুঝবে না। শুধু এটুকু বললাম, মাকতাবা। সে ইশারায় দেখিয়ে দিলেন দোতলায়। আর হাসলো। আমি তার হাসির কোনো মানে খুঁজে পেলাম না। হাসার দরকার ছিল আমার। সৌদিয়ান অথচ বিশুদ্ধ আরবি জানে না। আবার গর্বের সাথে বলে জি, অবশ্যই!

সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলাম। চার তলায় মাকতাবা। হেরেম শরিফের ১ম তলা ২য় তলা ঠাহর করা কঠিন ব্যাপার। সবই মনে হয় নিচতলা আবার সবই মনে হয় দ্বিতীয় তলা। মাকতাবায় ঢুকলাম। বিশাল লাইব্রেরি। কামাজকম একলক্ষ কিতাবের সমারহ। সবই সৌদি ছাপা। হিন্দুস্তানি ছাপা অস্পষ্টতায় ভরপুর। সৌদি ছাপায় কোনো অস্পষ্টতা নেই। লেখা একদম ঝরঝরে। এপর্যন্ত যত আরবি কিতাব পড়ছি সবই দেখলাম আছে। কোনোটাই বাদ পড়ে নি।

কিন্তু দেখলাম একশো ভাগের একভাগ কিতাবও পড়া হয় নি। তাতে আমার জ্ঞানের পরিধি বুঝলাম। নফসকে বললাম, নিকেকে তো অনেক বড় পড়ুয়া মনে করো অথচ একটা লাইব্রেরির কিতাবও তুমি শেষ করতে পার নি। সবচেয়ে আকর্ষণ করেছে শরহুল বিকায়া কিতাবের নুসখাটি। এতো সুন্দর ছাপা!

হিন্দুস্তানি নুসখায় নামাজের ওয়াক্তের বর্ণনা বুঝে আসে নি। কিন্তু এই নুসখায় অনেকটা পানির মতো পরিস্কার হয়ে গেল। আশাকরি এখন ঘড়ি ছাড়াও নামাজের ওয়াক্ত বলে দিতে পারবো। কোন সমস্যা হবে না। আরেকটি কিতাবের শরাহ দেখলাম। নাম ঠিক মনে করতে পারছি না। মাকামাতে হারিরির শরাহ। সানাবিয়া উলয়ায় মাকামাতের যে শরাহটি পড়েছিলাম সেটি ছিলো মাওলানা আহমদ মাইমূন সাহেবের।

বাংলা ভাষায় হলেও প্রথম প্রথম বুঝতে খুবই কষ্ট হতো। কিন্তু মাকামাতের এই আররি শরাহটি এতোটাই সুন্দর ও সহজ, যে কেউ বুঝবে আশা করি। প্রায় দুঘন্টা শুধু এই শরাহটিই মুতায়ালা করেছি। আরবি শরাহ সহজপাঠ্য এটা জানতাম এবং সবসময় আরবি শরাহই মুতায়ালা করতাম। কিন্তু আরবি শরাহ এতোটা সহজ ও আসান সেটা জানতাম না। ইচ্ছে করছিল, শরাহটি কিনে ফেলি। কিন্তু আশেপাশে কোনো লাইব্রেরিতে শরাহটি পেলাম না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়