শিরোনাম
◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক

প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৪৭ সকাল
আপডেট : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৪৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইসলাম মধ্যপন্থার আদর্শ

দিলাওয়ার আহমদ কাসেমি: সর্বশেষ ঐশী ধর্ম ইসলাম মানুষকে চরমপন্থা পরিহার করে মধ্যপন্থা অবলম্বন করার ব্যাপারে জোড় তাগিদ দিয়েছে। ইসলাম কোন ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি যেমন পছন্দ করে না; তেমনি ইসলামের বিধি-বিধান পালনে ছাড়াছাড়িও সমর্থন করে না। ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো, মানুষ কোনো ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন না করে সর্বক্ষেত্রে ভারসম্য রক্ষা করে চলবে। কারণ আল্লাহ তায়ালা তো এই উম্মতকে মধ্যপন্থী উম্মত বানিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এমনিভাবে আমি তোমাদের মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি, যাতে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবজাতির জন্য এবং রাসুল সাক্ষ্যদাতা হন তোমাদের জন্য। (সুরা বাকারা: ১৪৩)

এই যে মধ্যপন্থা, সবকিছুর ঠিক মধ্যখানে অবস্থান করা এবং বিশেষ কোন এক দিকে ঝুঁকে না পড়া; উক্ত আয়াতে এ উম্মতের বৈশিষ্ট সাব্যস্ত করা হয়েছে। কিন্ত মানুষ যদি কোন একদিকে ঝুঁকে পড়ে এবং দোষ-গুণ কমিয়ে বাড়িয়ে বলে তাহলে ন্যায়বিচার সম্ভব হবে না। নির্দোষ ব্যক্তি দোষী সাব্যস্থ হবে, দোষী ব্যক্তি খালাস পেয়ে যাবে কিংবা লঘু দোষে গুরুদন্ড বা গুরুদোষে লঘুদন্ড হয়ে যায়। তখন সমাজে অন্যায়-অবিচার ও অশান্তির পথ খোলে যাবে। তাই নবীজি (সা.) সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন, ‘কথা ও কাজে সীমালঙ্ঘনকারী ধ্বংস হোক।’ (সহিহ মুসলিম: ২৬৭০)

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সাবধান তোমরা দীনের ভেতর বাড়াবাড়ি করো না। কেননা তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তারা দীনের ভেতর বাড়াবাড়ি করার কারণেই ধ্বংস হয়েছে। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩৮৭১) মানুষের পরম গন্তব্যে পৌঁছার মহাসড়ক হলো দীনে ইসলাম। এ দীন আদ্যোপান্ত দুই প্রান্তিকতার ঠিক মধ্যখানে অবস্থিত। কোন জায়গাতেই তা একচুলও সরে যায়নি। এ ছাড়া যত মত ও পথ আছে তা সবই প্রান্তিকতা দোষে দুষ্ট। তাবেয়ি মুতাররিফ ইবনে আব্দুল্লাহ (রহ.) তার পুত্রকে লক্ষ করে বলেছিলেন, বৎস! পূণ্য হচ্ছে দুই পাপের মধ্যখানে তথা শৈথিল্য ও বাড়াবাড়ি মাঝখানে। বর্ণিত আছে, ‘সকল কিছুর মধ্যপন্থাই উত্তম।

সেই গতি খুবই মন্দ, যার দ্রুততা বাহনকে ধ্বংস করে। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যে কেউ সাধ্যাতিত ইবাদতে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে দীনকে কঠিন করে তুলে দীন তাকে কাবু ও পরাস্থ করে ফেলে।’ (সহিহ বুখারি: ৩৯) একবার তিনজন সাহাবি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর স্ত্রীদের কাছে এসে তাঁর ইবাদত সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তাদেরকে যখন তা জানানো হলো তারা অবাক হলেন। কারণ তাঁর ইবাদতের পরিমাণ তাদের ধারণা অপেক্ষা অনেক কম ছিল। তাদের তো ধারণা ছিল, তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে দিন-রাত নামাজ-রোজাতেই কাটান। কখনও রাতে ঘুমান না। কোনদিন কামাই না দিয়ে রোজা রাখেন। পরক্ষণে তারা ভাবলেন, আল্লাহ তায়ালা তাঁকে নিষ্পাপ রেখেছেন। উপরন্তু তাঁর পূর্ব-পরের সব গোনাহ মাফ করে দিয়েছেন। অন্যরা তো তাঁর মতো নয়। তাদের অনেক গুনাহ হয়ে যায়। তাই তাদের বেশি বেশি ইবাদত করতে হবে। সেমতে একজন বললেন, আমি রাতভর নামাজ পড়ব, কখনও ঘুমাবো না। দ্বিতীয়জন বললেন, জীবনভর প্রতিদিন রোজা রাখব। তৃতীয়জন বললেন, নারীসঙ্গ পরিহার করে চলবো, কখন বিবাহ করব না। তাদের এ কথাবার্তা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কানে গেল। তিনি বললেন, তোমরা এই এই কথা বলেছ। শোন! আমি কিন্তু আল্লাহকে তোমাদের চেয়ে বেশি জানি। তাই তোমাদের চেয়ে ভয়ও বেশি করি, তারপরও আমি কোনদিন রোজা রাখি, কোনদিন রাখি না। আমি রাতে নামাজও পড়ি আবার ঘুমাই। আর আমি বিবাহও করেছি। (এটাই আমার সুন্নত ও রীতি-নীতি) যে ব্যক্তি আমার সুন্নত উপেক্ষা করে চলে, সে আমার দলের নয়।’ (সহিহ বুখারি: ৫০৬৩)

পরিশেষে এই বলে শেষ করতে চাই, আমারা যেন ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে গোঁড়ামি, উগ্র মনোভাব, চরমপন্থা ও বাড়াবাড়ির মতো নেতিবাচক দিকগুলো পরিহার করে চলার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়