শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ১০:৩৫ দুপুর
আপডেট : ২৫ আগস্ট, ২০১৮, ১০:৩৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কদর নেই মহিষের গাড়ির!

ডেস্ক রিপোর্ট : সোনালী শ্যামল বাংলায় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে রয়েছে নানা রকমের জিনিষের গুরুত্ব। এক সময় গ্রাম বাংলার মানুষের যাতায়াতের বাহনই ছিলো গরু-মহিষের গাড়ি। কালের বিবর্তনে এখন গরু-মহিষের গাড়ি প্রায় বিলুপ্তির পথে। এক সময় গরুর গাড়িতে বিয়ে, বরযাত্রী, মালামাল পরিবহন, নাইওর আনা নেয়া ইত্যাদি হতো খুব জাঁকজমকের মধ্য দিয়ে।

এছাড়া প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় শোভা পেতো কাঠ-বাঁশের তৈরি দুই চাকার গাড়িটি। কুষ্টিয়ায়ও একসময় দেখা যেত এই গরু-মহিষের গাড়ি। এখন আর চোখে পড়ে না এই গাড়ি। নেই আর গরু-মহিষের গাড়ির চাকার ক্যাচ ক্যাচ শব্দ।

গরু-মহিষের হাম্বা অথবা গলায় ঝোলানো ঘণ্টার টুং টাং আওয়াজ। নেই গাড়িয়ালের গাড়ি তাড়ানোর সেই শব্দ। গ্রামীন ঐতিহ্যের এই গাড়িকে নিয়ে অনেক লেখক গানও রচনা করেছেন। তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন কৃষকদের এ ঐতিহ্য।

গরু-মহিষের গাড়ির কদর আর না থাকায় বংশ পরম্পরায় গাড়িয়ালরা (চালক) জীবন জীবিকার তাগিদে পরিবর্তন করেছেন এ পেশা। এদের কেউ শহরে মজুর খাটছেন, আবার কেউবা রিকশার হ্যান্ডেল ধরেছেন, কেউ অন্য কোনো পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি এলাকার সোহরাব আলী সর্দার বলেন, বাবার হাত ধরে মহিষের গাড়ি চালানো শিখেছি। নিজেদের জমি-জমার ফসল মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য এই মহিষের গাড়ি ব্যবহার করতাম। নদীতে যখন এক হাঁটু পানি থাকতো তখন মহিষের গাড়ি নদীর ভেতর দিয়েই পার করতাম। এছাড়া একটা গরুর গাড়িও ছিলো। সেটা দিয়ে বরযাত্রী, নাইওরি আনা নেয়া এবং কোথাও গেলে নিয়ে যেতাম।

তিনি আরো বলেন, প্রায় ৪০ বছর এই হাতে মহিষের গাড়ি চালিয়েছি। এখন আর সে অবস্থা নেই। এলাকায় মহিষের গাড়িই নেই। তাই আমিও কয়েক বছর আগে গাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছি।

মিরপুর উপজেলার কচুবাড়ীয়া গ্রামের গাড়োয়ান দুলাল বলেন, এখন আর মহিষের গাড়ি চলে না। যন্ত্রের গাড়ির কাছে মহিষের গাড়ির কোনো পাত্তা নেই। তাই মহিষের গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছি। এখন কৃষি কাজ করছি।

সামসুল নামের আরেক গাড়োয়ান বলেন, একসময় মাঠের ফসল কৃষকের বাড়িতে আনার জন্য একমাত্র বাহন ছিলো গরু-মহিষের গাড়ি। এখন নিত্য-নতুন কত গাড়ি হয়েছে। ইদানিং তো দেখছি এক মেশিনেই ধান কাটা, মাড়াই হচ্ছে। মহিষের গাড়ি চালিয়ে আর পেট চলে না। তাই আমিও বিক্রি করে দিয়েছি।
তবে প্রাচীন এই গাড়িকে এখনো ধরে রেখেছেন একই এলাকার লিয়াকত আলী।

তিনি জানান, মহিষ দু’টোর মায়া ছাড়তে পারিনা। সবাই মহিষের গাড়ি বাদ দিয়ে দিতে বলে। নিজেরও ইচ্ছা হয় গাড়ি বিক্রি করে দিতে। কিন্তু প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বংশ পরম্পরায় আজো এটাকে ধরে রেখেছি।

মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান কামারুল আরেফিন বলেন, গরু-মহিষের গাড়ি আমাদের গ্রামীন ঐতিহ্য। কালের বিবর্তনে এটা প্রায় বিলুপ্তি পথে। ছেলে-মেয়েদের এই গাড়ি সম্পর্কে জানাতে এবং গ্রামীন বাঙালি ঐতিহ্যকে সবার সামনে তুলে ধরতে প্রায় প্রতিবছরই মিরপুর উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে গরু-মহিষের গাড়ির শোভাযাত্রা বের করি।-বাংলানিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়