শোভন দত্ত: কোরবানির ঈদ উপলক্ষে পর্যটকদের উপচে পরা ভিড় নেমেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। ঈদের পূর্বদিন (মঙ্গলবার) এবং ঈদের দিন অল্পসংখ্যক পর্যটক এলেও বৃহস্পতিবার এসেছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক। ফলে মুখরিত আছে এখানকার হোটেল-মোটেল, গেস্ট ও রেস্টহাউসগুলো। পদচারণা বেড়েছে সৈকতে। বছরের অন্যসময় রুমভাড়ায় কিছুটা ছাড় দেয়া হলেও ঈদ উপলক্ষে তারকা হোটেলসহ সকল আবাসিক প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত মূল্যেই রুম ভাড়া দিয়েছে। এরপরও ভ্রমণপিপাসুরা রুম বুকিং দেয়ায় কোথাও কক্ষ খালি নেই।
সৈকত ছাড়াও জেলার পর্যটন স্পট ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, হিমছড়ি, ইনানী ও রামুর বৌদ্ধপল্লীতেও ভ্রমনপিপাসুদের ভিড় জমছে। তবে এসব পর্যটকদের মাঝে স্থানীয়দের সংখ্যা বেশি। যাদের মাঝে চট্টগ্রাম ও আশপাশের পর্যটকও রয়েছে। সবমিলিয়ে বর্ষার বিদায় লগ্নেও প্রাঞ্জল পর্যটন স্পট ও সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে চালু হয়নি দেশের প্রসিদ্ধ প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন নৌ-রুটের জাহাজগুলো।
পর্যটকদের সমুদ্রস্নান ও পর্যটন স্পটে নিরাপদে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন, লাইফ গার্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশ। এ ক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন মানতে পর্যটকদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র মতে, ঈদের ছুটিতে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে কক্সবাজারে। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটছে। কিন্তু বর্ষার শেষ সময় হওয়ায় অন্য বছরের ন্যায় উপচেপড়া ভিড় নেই। আগেই কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট ও রেস্টহাউসের অধিকাংশ রুম বুকিং গিয়েছিল।
হোটেল-মোটেল মালিকরা বলছেন, পর্যটকরা কক্সবাজার এলে কেবল শহরের সমুদ্রসৈকতেই ঘুরে বেড়ান না; পাশাপাশি ইনানীর পাথুরে সৈকত, হিমছড়ির পাহাড়ি ঝরনা ও দরিয়ানগর পর্যটনপল্লী, টেকনাফের মাথিনকূপ, কুদুমগুহা, নেচার পার্ক, নাফ নদীর জালিয়াদ্বীপ, মিয়ানমার সীমান্ত, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, রামুর বৌদ্ধপল্লিসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে যান।
পর্যটকদের সমুদ্রদর্শনের জন্য সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে চেয়ার ও ছাতাগুলো সাজিয়ে বসানো হয়েছে। পর্যটকরা সমুদ্র দর্শনের জন্য চেয়ারে বসলে হকার কিংবা বখাটেরা যাতে উৎপাত না করে, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হবে। পর্যটকের সঙ্গে ভালো আচরণ করার জন্য কর্মচারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলে জানান সৈকতের চেয়ার-ছাতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) সদস্য ইয়ার মুহাম্মদ জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটক আগমন বেড়েছে। সরগরম উঠেছে হোটেল, মোটেল, রেস্তোর্রা, চা দোকানসহ দর্শনীয় স্থানগুলো।
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, ঈদের বাড়তি আনন্দ উপভোগ করতে প্রিয়জনের সাথে নিয়ে ঈদের দ্বিতীয দিন কক্সবাজারে এসেছে প্রায় ৫০ হাজার পর্যটক। তাদের মাঝে জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং আশপাশের জেলা ও উপজেলা এসেছে আরও ২০-২৫ হাজার ভ্রমণপিপাসু।
আপনার মতামত লিখুন :