রোকন সিদ্দিকী: মার্জিয়া নামের সেই মেয়েটি যার পরিবারের সকলেই টিউশনি করে অর্থাৎ এই পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয় শিক্ষা বিতরণ করে। মার্জিয়া নিজেও প্রতিদিন পাঁচটি টিউশনি করে। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের এই মেধাবী ছাত্রীটি যখন ক্লাস এইটে পড়তো তখন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। তাকে বারটি কেমো দিতে হয় চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করতে যেয়ে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেছে।
মেয়েটি দুই মাস আগে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে, বিভিন্ন পরীক্ষার পর ডাক্তার মহোদয় জানান যে মেয়েটি পুনরায় ক্যানসারে আক্রান্ত। পরিবারটি একেবারে ভেঙ্গে পড়ে একটি পয়সাও নাই চিকিৎসার জন্য।
এই ঘটনা আমি জানতে পারি আমার মেয়ের কাছ থেকে কারণ সে আমার মেয়ের সাথেই পড়ে। তখন এই মেয়েটির চিকিৎসার জন্য আমার বন্ধুদের কাছে সহযোগিতা চাই। আমার সকল বান্ধবী ও বন্ধুরা, বন্ধুর বোন, ভাগ্নি এগিয়ে আসে।
মেয়েটিকে ভাল চিকিৎসার দায়িত্ব আমার উপরে পড়ে। আমার ছোট বেলার বন্ধু ডাক্তার সফিকুল আলম এর কাছে পরামর্শ চাই, এই বিষয়ে দ্বিতীয় মত কোন ডাক্তারের কাছ থেকে নেওয়া যায়। সে সকল কাগজ পত্র দেখতে চাইলো এবং দেখে মুখটা কালো করে ফেললো আমি জানতে চাইলাম মেয়েটি বাঁচবে কি? কারণ আমার জানা ছিল দ্বিতীয় বার ক্যানসার হলে কেউ বাঁচে না। বন্ধু বললো ইনি বাংলাদেশের সব চাইতে বড় ডাক্তার, কষ্ট যখন করেছো তখন আর একটু কষ্ট করে ভারত পাঠাও। মেয়ের বাবা রাজি না, যে টাকা জোগাড় হয়েছে তাতে এখানে বারটা কেমো হয়ে যাবে। পাসপোর্ট নাই ভিসা নাই ভারতে যেয়ে যদি টাকা খরচ হয়ে যায় তাহলে চিকিৎসা হবে কিভাবে।
যেহেতু আমি বার বার অনুরোধ করছি এবং টাকা যোগাড়ের মূল লোক তাই ভদ্রলোক অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হলেন। শুরু হোল পাসপোর্ট ভিসা যোগাড় করা এবং সব কিছু হয়েও গেল। এখানকার ডাক্তার পীড়াপীড়ি করছিল এখান থেকেই একটা কেমো দিয়ে ভারত যান কিন্তু ডাক্তাদের পরামর্শ নেয়া হয়নি। ভারতে পরীক্ষার পর ডাক্তার জানালেন মেয়েটির শরীরে ক্যানসার নাই এবং কখনো ছিলও না। খবরটি শুনে চোখে পানি চলে আসলো অনেকক্ষণ অঝোর ধারায় কাঁদলাম। নিজেকে বাধা দিলাম না কেন যে কাঁদলাম বুঝলাম না হয়তো মেয়েটি এদেশের ডাক্তারের হাত থেকে বেঁচে গেল।
এদেশে আমরা বাঁচবো কিভাবে। আমাদের কি বাঁচার কোনই অধিকার নাই। ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে
আপনার মতামত লিখুন :