আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এবারই প্রথমবার আহমেদ ওবেইদ ঈদুল আজহার উৎসবের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেননি। চার সন্তান নিয়ে ইয়েমেনের আদেন প্রদেশের একটি শরণার্থী শিবিরের সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ওবেইদ জানান, এই বছর ঈদে আনন্দ করার মতো কোনও অবস্থাই তাদের নেই। তিনি বলেন, ‘এবার প্রিয়জনদের বাদ দিয়ে আমাকে ঈদ করতে হচ্ছে। যুদ্ধ গত বছরের মতো আমাদের বাড়ি থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ পালন করা থেকে বঞ্চিত করেছে।’
দে তেমন কোনও উদযাপন না থাকলেও হুথিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রাজধানী সানায় পশুর হাটে তবুও ভীড় করেছে ইয়েমেনিরা। সেখানকার পশুদের শরীরেও অপুষ্টির চিহ্ন স্পষ্ট। হাটে পশু কিনতে আসা হোসেন আল রাজাবি বলেন, তার পরিবার আরও ছয় প্রতিবেশির সঙ্গে মিলে ঈদে কোরবানি দিচ্ছে। তিনি ঝিনহুয়া’কে বলেন, গত বছর যে গরুর দাম ছিল সাড়ে তিন লাখ ইয়েমেনি রিয়াল (৫৩ হাজার টাকার বেশি), এবার তা হয়েছে ১০ লাখ রিয়াল (দেড় লাখ টাকা)।
আরেক ক্রেতা সাইফ মোহাম্মেদ অভিযোগ করেছেন গবাদি পশুর দাম গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে উচ্চ মূল্য, যুদ্ধ, অবরোধে ভুগছি তার ওপর আমাদের ওপর ত্রিশুলের আঘাত সইছি।’ তবে পশু বিক্রেতা মোহাম্মেদ আল ফিরসি বলেন, খাদ্য, পানি ও জ্বালানির ঊর্ধ্বগতির কারণে পশুর দাম এমন বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ, পুরো অবরোধ ও ইয়েমেনি রিয়ালের বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ায় গত বছরের চেয়ে এবার ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে।’
২০১৫ সালের মার্চে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের উপর্যুপরি বিমান হামলায় বিপর্যয় নেমে আসে সাধারণ মানুষের জীবনে। গত মে মাসে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা মোকাবিলায় খাদ্যপণ্য খালাসের প্রক্রিয়া দ্রুততর করার তাগিদ দেয় জাতিসংঘ। সংস্থাটির জরুরি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রতি তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বন্দর দিয়ে আমদানি করা জ্বালানি ও খাদ্য দ্রুত ইয়েমেনে ঢুকতে দেওয়ার আহ্বান জানান। বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :