শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ২০ আগস্ট, ২০১৮, ০৩:৪১ রাত
আপডেট : ২০ আগস্ট, ২০১৮, ০৩:৪১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অফিস-গাড়ি সবই আছে নেই মাদক উদ্ধার!

তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযান থাকলেও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদকবিরোধী অভিযানে মাদক উদ্ধারের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। সরকারি অফিস আর বিলাসবহুল গাড়ি থাকলেও অধিদপ্তরটি লোকজন কি কারণে সীমান্তবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মাদক উদ্ধার করতে পারছেন না এরকম অজানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাঁচ্ছে অনেকের মনে।

আবার কেউ কেউ অভিযোগ করে বলছেন, তারা মাদক উদ্ধার করলেও এগুলো অধিদপ্তরে অফিসের দরজা পর্যন্ত আসে না। মাদক ব্যবসায়ী আর সোর্সের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে অজানা গন্তব্যে। এছাড়া সোর্সের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার বিষয়টিও অভিযোগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে অনেকে।

কথা হয় জনৈক সোর্সের সাথে সে বলেন, কিছুদিন আগে সিঙ্গারবিল কাশিমনগর মেম্বারের লোকের পিকআপ গাড়ি ২৫ কেজি গাঁজাসহ ধরেছেন মাদক অফিসের লোকজন। তারপর সোর্স বাবুলের মাধ্যমে মাদক কর্মচারির বাসায় দেড় লক্ষাধিক টাকা পৌঁছিয়ে দেওয়া হয়। এর পর গাড়িসহ মাদক উদ্ধার দেখানো হলেও আসল আসামিকে আড়াল কৌশলে অন্য আরেকজনকে আসামি দেখানো হয় মামলাতে।

এছাড়া সে আরো জানায়, বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর জনৈক চেয়ারম্যানের লোককে ১০০০ পিছ ইয়াবাসহ আটক করা হলে পঞ্চাশ হাজার লেনদেনের মার্ধ্যমে তা ১০০ পিছ ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে বাকি ৯০০ পিছ অজানা গন্তব্যে চলে যায়।

আরেক সোর্স জানায়, বিগত দুই মাসে তারা বেশ কয়েকটি স্হান থেকে মাদক ধরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়ে এসেছেন।এখানকার সবাই সারাদিন টাকা কামানো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আবার সোর্সের মার্ধ্যমেও মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া পৈরতলা বাসষ্ট্যান্ডের এক লোককে তারা সোর্স হিসেবে কাজ দিয়েছে। তার বাড়ি কসবার দিকে। সে সোর্সের কাজ করেও কিভাবে হ্যান্ডকাপ নিয়ে ঘুরাঘুরি আমরা বুঝি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশকয়েকজন বলেন, দামী সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে তারা ভাড়াটিয়া বাসা থেকে অফিসে আসা- যাওয়া আর ব্যক্তিগত কাজে সারাদিন তেল পোঁড়ানো ছাড়া মাদক উদ্ধারের তাদের কোন খবর নেই।

এদিকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আমাদের সমাজের মাদকাসক্ত সংখ্যা আর তারা মাদক ধরেও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছেন। রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে সমাজ আর মাদক আসা রোধ করবে কে ?

এক পরিসংখানে দেখা যায়, দেশের সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি জেলা। শহরের বিশ থেকে ত্রিরিশ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে পাশ্ববর্তী ভারতের গাঁডাশা জেলার তিনটি উপজেলা। তাই সীমান্তবর্তী উপজেলা দিয়ে প্রতিদিন দেদারসে ঢুকছে মাদক। এই মাদক জেলার সব জায়গায় ছড়িয়ে চিটিয়ে সিন্ডিকেট ভিত্তিক বিক্রি হচ্ছে। আর সিন্ডিকেট ভিত্তিক মাদক ব্যবসায়ীরা সীমান্ত দিয়ে জেলার ভিতরে ঢুকা মাদকের বেশির ভাগ অংশ কৌশলে সড়ক ও নৌপথ ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়েছে যাচ্ছে।

অন্যদিকে র‍্যাব, পুলিশ ও বিজিবিও তাদের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রতিনিয়ত উদ্ধার করছেন লাখ লাখ টাকার ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহ বিদেশি মদের মত মাদক। গ্রেফতার করছেন মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারিদের। মামলা দিয়ে জেলহাজতে ঢুকাচ্ছেন। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় চলতি বছরের গত জুন-জুলাই এই দুই মাসে সদর মডেল থানার পুলিশের চৌকস মাদকবিরোধী অভিযানে উদ্ধার হয় ইয়াবা ৪৪০০পিছ, গাঁজা ৮৫ কেজি আর ফেন্সিডিল ও স্কপ সিরাপ ২০০ বোতল। যার আনুমানিক বাজার
মূল্য সাড়ে ১২ লাখ টাকার।

অন্যদিকে জেলার নবীনগরে থানার পুলিশের মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে ইয়াবা ১৬০০পিছ, চোলাই মদ ৬৫ কেজি, গাঁজা উদ্ধার হয়েছে ২০ কেজির মত, মামলা হয়েছে ৩১টি আর মাদক মামলার আসামি ধরা হয়েছে ৩৭ জনকে।আবার পাশ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর থানার পুলিশের অভিযানে ইয়াবা ২৫,০০০ হাজার পিছ, ফেন্সিডিল ১১৪০ বোতল আর বিয়ার ৬০০ ক্যান মত উদ্ধার হয়। মামলা হয়েছে ১২ টির মত।মাদক মামলার আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জন।

এদিকে জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যারা দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় মাদক উদ্ধার নিয়ে কাজ করেন তাদের নিজস্ব অভিযানে দেখা যায় চলতি বছরের জুন-জুলাই এই দুই মাসে তারা উদ্ধার করেন ইয়াবা ৪৫০ পিছ, গাঁজা ৮৬ কেজি, ফেন্সিডিল ৪০ বোতল আর স্কাফ সিরাপ ২০ বোতল।মামলা হয়েছে ১১ টি। উপরে উল্লেখিত তিন থানার মাদক উদ্ধারের হিসাবে জেলা মাদক দ্রব্য অফিসের মাদক উদ্ধারের হিসাব অতি নগন্ন।

এ ব্যাপারে জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: বাহাব উদ্দিন বলেন, লোক সংকটের কারণে অভিযান চালাতে পারছি না। অফিসের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার নিষেধ। অফিসের কেউ যদি মাদক ব্যবসায়ী কাছ থেকে অর্থ নেন বা ছেড়ে দেন তা প্রমাণ পেলে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়