ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের নানা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিট করপোরেশন। এরই অংশ হিসেবে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জেব্রা ক্রসিং, রোড মার্কিং ও পথচারী পারাপারের নির্দেশনা সাইন স্থাপন শুরু হয়েছে। দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শনিবার (১৮ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর গণপরিবহন ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে বিজয় সরণী, ফার্মগেট, কাকরাইল, বাংলামটর, সোনারগাঁও হোটেলের মোড় হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত সড়ক পরিদর্শন করেছে। এসময় সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থার বিভিন্ন ত্রুটি খোঁজা হয়। পরে ডিএসসিসির নগরভবনে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা সূত্র জানিয়েছে, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাগাদা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সড়কগুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক উপযোগী কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেজন্য টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে রাজধানীর গণপরিবহন ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে স্বল্প সময়ে বাস্তবায়নযোগ্য বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় চলাচলের সময় সব গণপরিবহনের দরজা বন্ধ রাখা, নির্ধারিত স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করা, বাসের ভেতরে চালক ও হেলপারের বৃত্তান্ত প্রদর্শন, দূরপাল্লার বাসে চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্টের ব্যবস্থা রাখা, সড়কে জেব্রা ক্রসিং স্থাপন, রোড সাইন দৃশ্যমান করা, ফুটপাত হকার মুক্তরাখা, অবৈধ পার্কিং ও স্থাপনা উচ্ছেদ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সংক্রিয় ও রিমোট কন্ট্রোলড অটোমেটিক বৈদ্যুতিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করার মতো পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
রাজধানীতে সড়কে আঁকা হচ্ছে পথচারী পারাপার নির্দেশিকাঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এমন নির্দেশনা পেয়ে শনিবার সকাল থেকেই বাংলামটর থেকে সোনারগাঁও হোটেল, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, কাকরাইল মৎস্যভবন, কদম ফোয়ারা, প্রেসক্লাব, পল্টন ও জিরো পয়েন্ট হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত ১১টি জেব্রা ক্রসিং স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব এলাকার সড়কের দুই পাশে পথচারী পারাপারের নির্দেশনা সাইন স্থাপন করা হয়েছে। ফুটওভার ব্রিজগুলোকে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক সার্কেল) মো. আনিছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে আমরা গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই এই কাজগুলো শুরু করেছি। শনিবারও বেশ কয়েকটি স্থানে জেব্রা ক্রসিং, রোড সাইন, ফুটপাত পরিষ্কার করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আশা করি একাজ শেষ হবে।’
এদিকে, রাজধানীর কুর্মিটোলার শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের সামনে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার পর সেখানের সড়কে জেব্রা ক্রসিং ও স্পিডব্রেকার নির্মাণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গত বুধবার সকালে এ কাজ উদ্বোধন করেছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে আমরা সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জেব্রা ক্রসিং ও স্পিডব্রেকার নির্মাণ করবো। এরই মধ্যে অনেকগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাসগুলো ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের যেসব নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :