শিরোনাম
◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল

প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:০০ সকাল
আপডেট : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামবাসীর প্রথম পছন্দ ‘লাল বিরিষ’

ডেস্ক রিপোর্ট : কোরবানি ঈদে চট্টগ্রামবাসীর প্রথম পছন্দ ‘রেড চিটাগাং ক্যাটেল’। এই গরুকে চট্টগ্রামের বিশেষ জাতের ‘লাল বিরিষ’ও বলা হয়। কেউ কেউ ‘অষ্টমুখী লাল গরু’ বলে থাকেন। আকারে ছোট হলেও গরুগুলো দেখতে সুন্দর এবং সতেজ। এসব গরুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো লাল বর্ণের। তবে সবার পছন্দের এই গরু সাম্প্রতিককালে বাজারে মেলে কম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশি-বিদেশি নানা জাতের গরুর ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের একমাত্র জাত ‘রেড চিটাগাং ক্যাটেল’। খামারি ও গৃহস্থদের অসচেতনতায় রেড চিটাগাং ক্যাটেলের সঙ্গে দেশি-বিদেশি জাতের বীজের সংকরায়নে ক্রমেই হারিয়ে যেতে বসেছে এগুলো। তবে কিছু কিছু খামারি ও কৃষক এখনো রেড চিটাগাং ক্যাটেল মোটাতাজা করে থাকেন। এবার চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার কিছু খামারি-কৃষক রেড চিটাগাং মোটাতাজা করেছেন বলে জানা গেছে। তবে সুখবর হলো চট্টগ্রামের বিশুদ্ধ এ জাতকে টিকিয়ে রাখার জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আইডিএফ-এর মাধ্যমে সাতকানিয়া, চন্দনাইশসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় রেড চিটাগাং ক্যাটেলের প্রদর্শনী খামার করা হয়েছে।

সাতকানিয়া পৌরসভার ছিটুয়াপাড়ার বাসিন্দা ও খামারি আবদুল মান্নান বলেন, ‘আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলক্ষে মোট ১৪টি গরু মোটাতাজা করেছি। এর মধ্যে একটি রেড চিটাগাং ক্যাটেল রয়েছে।’

সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকার আবদুর রহিম বলেন, ‘রেড চিটাগাং ক্যাটেল নামের গরু দেখতে খুব সুন্দর। এই জাতের গরুর মাংসে চর্বি তুলনামূলক কম। মাংস সুস্বাদু হওয়ায় সবাই খেতেও চায়। ফলে কোরবানিতে আমার প্রথম পছন্দ রেড চিটাগাং।’

সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের দুর্লভের পাড়ায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আইডিএফ পরিচালিত রেড চিটাগাং ক্যাটেল প্রদর্শনী খামারের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম জানান, রেড চিটাগাং ক্যাটেল পালনে অনেক সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-এগুলোর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, মাংসে চর্বি কম হওয়ায় সবাই খেতে পারে। অনান্য জাতের গরুর তুলনায় মাংসের স্বাদ বেশি, লালন পালনে খরচ কম, শারীরিকভাবে বেশ শক্তিশালী, সহজে পোষ মানানো যায়, রোগ বালাই কম, আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, বাড়তি কোনো যত্ন নিতে হয় না। তিনি বলেন, ‘রেড চিটাগাং ক্যাটেল জাতের গাভি অন্যান্য যেকোনো জাতের গাভির চেয়ে অধিকবার বাচ্চা দেয়। এ জাতের গাভির দুধে চর্বি অনেক বেশি।’

সাতকানিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আরিফ উদ্দিন বলেন, ‘রেড চিটাগাং ক্যাটেল হলো চট্টগ্রামের আদি এবং একমাত্র জাত। এ জাতের গরু মাঝারি আকৃতির হয়। গরুর রং, চোখ, চোখের ভ্রু, নাক, শিং, ক্ষুর, লেজ ও প্রজনন অঙ্গ লাল রঙের হয়। গরুর শিং তুলনামূলক ছোট ও পাতলা হয়। এ গরু দেখতে খুব সুন্দর ও শক্তিশালী হওয়ায় পছন্দের তালিকায় সবার শীর্ষে। বিশেষ করে কোরবানির বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকে। কিন্তু ওই জাতের গরু বাজারে খুব কম পাওয়া যায়।’

আমাদের দেশের খামারি ও কৃষকদের অসচেতনতার কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ দেশি-বিদেশি নানা জাতের ষাঁড় ও বীজের মাধ্যমে সংকরায়নের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে চট্টগ্রামের বিশেষ জাতের এ গরু। এগুলো এখন আগের মতো খুব বেশি নেই। মূল উৎপত্তিস্থল চট্টগ্রামেই খুব বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট রেড চিটাগাং ক্যাটেল উন্নয়ন ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, পটিয়া ও আনোয়ারাসহ বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রদর্শনী খামার করা হয়েছে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আইডিএফ এসব প্রদর্শনী খামারের মাধ্যমে রেড চিটাগাং ক্যাটেলকে উৎপত্তিস্থল চট্টগ্রাম এবং বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, ‘রেড চিটাগাং ক্যাটেল চট্টগ্রামের মানুষের কাছে কোরবানির জন্য খুবই পছন্দের। কিন্তু এ জাতের গরু এখন আর খুব বেশি পাওয়া যায় না। পুরো চট্টগ্রামের মধ্যে সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে এ জাতের গরু অন্যান্য উপজেলার চেয়ে বেশি রয়েছে। বাঁশখালী, লোহাগাড়া, পটিয়া, আনোয়ারাসহ জেলার অন্যান্য উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে কিছু গরু রয়েছে। তবে সংখ্যায় খুবই কম।’
সূত্র : কালের কন্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়