শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ০৬:৪৫ সকাল
আপডেট : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ০৬:৪৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পাহাড়ে শান্তি আসবে কবে?

ডেস্ক রিপোর্ট :  খাগড়াছড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে (ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপ সমর্থিত) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) খাগড়াছড়ি শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা ্ও এক পথচারীসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের গুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত তিনজনকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। গতকাল খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন ইউপিডিএফ সমর্থিত পিসিপি খাগড়াছড়ি শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা, সহ-সাধারণ সম্পাদক এলটন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুবফোরামের সহ-সভাপতি পলাশ চাকমা, মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী জীতায়ন চাকমা, রূপন চাকমা, খাগড়াছড়ি সদরের পেরাছড়া এলাকার বাসিন্দা শন কুমার চাকমা ও বিএসসি প্রকৌশলী পানছড়ি উপজেলার উল্টাছড়ি গ্রামের ধীরাজ চাকমা। আহতরা হলেন পিসিপি কর্মী সোহেল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কর্মী সমর চাকমা ও সখীধন চাকমা।

খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্বনির্ভর বাজারে ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা অফিস ও সিএনজি স্টেশন এলাকা থেকে হঠাৎ করে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। স্বনির্ভর বাজারের ইউপিডিএফ কার্যালয় ও আশপাশে থাকা কর্মীদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে ইউপিডিএফের লোকজনও গুলি ছোড়ে। খবর পেয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনের মরদেহ এবং ছয়জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে। আহতদের খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আরও তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাকি তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। স্বনির্ভর বাজারে হামলার সময় দৌড়াতে গিয়ে রাস্তার ওপর পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন শন কুমার চাকমা (৫৫)। দুপুরে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩টা ২৫ মিনিটে শন কুমার চাকমার মৃত্যু হয়। ডা. নয়নময় ত্রিপুরা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খাগড়াছড়ি সদর ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু জানান, শন কুমার পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান। স্বনির্ভর বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার পরপর পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা ও ব্যবসায়ীদের মঙ্গে আতঙ্ক বিরাজ করায় স্বনির্ভর বাজার বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যানবাহনগুলেয় তল্লাশি চালাচ্ছে। ঘটনার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এমএন লারমা ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিককে দায়ী করেছেন ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের সংগঠক মাইকেল চাকমা। ইউপিডিএফ মুখপাত্র নিরন চাকমা বলেন, সকালে সাংগঠনিক কাজে স্বনির্ভর বাজারের অফিসে অবস্থান করছিলেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় জেএসএস এম এন লারমা (ইউপিডিএফ) গণতান্ত্রিকের ১৫-২০ জনের সশস্ত্র দুটি গ্রুপ অফিসের সামনে ও আশপাশে ব্রাশফায়ার করে। এতে সংগঠনের তিন নেতাসহ সাতজন নিহত ও তিনজন আহত হন। খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নয়নময় ত্রিপুরা বলেন, গুলিবিদ্ধ নয়জনকে হাসপাতালে আনার পর ছয়জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকি তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। হাসপাতালের মর্গে নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসতা ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

পুলিশ ঘটনার প্রকৃতি রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে। এর আগে, ৪ মে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বেতছড়ি এলাকায় প্রতিপক্ষের ব্রাশফায়ারে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মাসহ পাঁচজন নিহত হন। ঘটনার জন্য জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপকে দায়ী করেছিল। ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর ইউপিডিএফ ভেঙে কিছু নেতা জেএসএস এম এন লারমা গ্রুপের সঙ্গে মিলে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে পাহাড়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষ শুরু হয়। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর আত্মপ্রকাশ করে চুক্তিবিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ। এর পর থেকে পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। উৎসঃ বিডি প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়