শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ১০:০৬ দুপুর
আপডেট : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ১০:০৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে লক্ষ্মীপুরে কোরবানীর পশুর হাট

জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর: ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। এরই মাঝে লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন উপজেলায় জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। প্রতিদিন জেলার স্থানীয় পশুরহাট গুলোতে প্রচুর গরু ওঠতে দেখা গেছে। প্রতিটি হাটে ব্যাপক পরিমাণ দেশী গরু আধিপত্য দেখা গেছে। পাশা-পাশি রয়েছে বিদেশী গরুও।

বিক্রেতারা জানান, এবার কোরবানীর জন্য ভারত, মিয়ানমার, ভূটান থেকে দেশে গরু-মহিষ আসতে পারছেনা। ফলে এবার কোরবানীর বাজার পুরোপুরি দেশীয় পশু নির্ভর হতে যাচ্ছে। ঈদ পর্যন্ত হাট গুলোতে বিদেশী গরুর আসতে না পারলে এবার দেশীয় গরুর খামারীরা লাভবান হতে পারবেন। এতে আগামী দিনে খামারীরা গরু পালনে আরো উৎসাহী হবে। লোকসানের মুখে পড়তে হবেনা স্থানীয় খামারীদের।

এছাড়া বিক্রেতারা জানান, গো-খাদ্যের দাম বেশী হওয়ায় গরু দাম কিছুটা বেশী। অপর দিকে ক্রেতারা জানান, গত বছরের চেয়ে এবার গরু ও খাসীর দাম প্রায় দ্বিগুন। পশুর এমন উচ্চ মূল্যের কারণে অনেক ক্রেতাই হতাশ।

এদিকে জেলায় নদীপথে গরু আসার একমাত্র রুট মেঘনা নদীর মজুচৌধুরীর হাট ঘাট এলাকা। গরুর ব্যপারীরা জানান, মজুচৌধুরী ঘাট এলাকায় তাদেরকে গরু আনতে চাঁদা দিতে হচ্ছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের থেকে চাঁদা আদায় করছে। এ ছাড়া সড়ক ও নদীপথে গরু আনতে প্রতিটি পয়েন্টে চাঁদা দিতে হয় তাদের, এতেও করে গরুর দাম কিছুটা বেশী।

লক্ষ্মীপুর পৌর গরুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পছন্দের পশুটি কিনতে অনেকেই এসেছেন হাটে, কেউ একা এসেছেন, কেউ এসেছেন দলবেঁধে। যেন তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী এ হাটটিতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের এই উপস্থিতি যেন ঈদ উৎসবেরই অংশ। শুধু পৌর গরুর বাজার নয় জেলার প্রতিটি হাটেই পছন্দের কোরবানীর পশু কিনতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল লক্ষ্যনীয়।

দাম যাই হোক শেষ পর্যন্ত পছন্দের পশুটি কিনে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা, আবার অনেকেই দাম বেশির কারনে আগামী হাট পর্যন্ত অপেক্ষা করার চিন্তা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। অপরদিকে গো-খাদ্যের সংকটের কারণে অনেক ক্রেতাই এখন গরু কিনছেনা তাদের মতে ঈদের দু-এক দিন আগে গরু ক্রয় করবেন তারা।

লক্ষ্মীপুর পৌর গরুর বাজারে গরু ক্রয় করাতে আসা হাবিব উল্যা, মোসলে উদ্দিন ও হোসেন মিয়সহ অনেক ক্রেতা জানান, গত বছরের চেয়ে গরুর দাম এ বছর আরো বেড়েছে, গতবার একটা মাঝারী গরু ক্রয় করতে ৬৫-৭০ হাজার টাকা লাগলেও এ বছর সেই গরু কেনার জন্য ৮৫-৯০ হাজার টাকা লাগছে।

লক্ষ্মীপুরে প্রতিটি উপজেলায় কোরবানীর পশুর হাট বসেছে। এই সব পশুরহাটে স্থানীয় পাইকার ও ব্যাপারীরা ছাড়াও দেশের দূর-দূরান্ত থেকে বহু পাইকার ও ব্যাপারীরা গরু ও খাসী এনে বিক্রি করে থাকেন। হাট গুলোর নিরাপত্তার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি নজরধারীর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের পৌর পশুর হাট কর্তৃপক্ষ জানান, এবার লক্ষ্মীপুর পৌর পশুর হাটে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে গরু কিনলে টোল (খাজনা) ধরা হায়েছে ৬‘শ টাকা, ১ লাখ টাকার মধ্যে গরু কিনলে টোল (খাজনা) ধরা হয়েছে ১ হাজার ২‘শ টাকা ও একলাখ টাকার উপরে গরু কিনলে টোল (খাজনা) ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫‘শ টাকা। এছাড়া এখানে ছিনতাই-চাঁদাবাজী ঠেকাতে ও হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার আ স ম মাহতাব উদ্দিন জানান, হাট গুলোর নিরাপত্তার জন্য পুলিশের মোবাইল টিম কাজ করবে। জাল নোট ঠেকানোর জন্য পুলিশের নজরধারী রয়েছে। এ ছাড়া মজুচৌধুরীর হাট ঘাট এলাকায় গরু আনার ক্ষেত্রেও পুলিশের বাড়তি নজরধারী রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়