ডেস্ক রিপোর্ট : জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী, বিশেষ কিছু পরিস্থিতি ছাড়া শুধু সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা ওড়ানো যাবে। কিন্তু খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তিন দিন ধরে দিন-রাত জাতীয় পতাকা উড়ছে। সঙ্গে উড়ছে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকাও।
খাগড়াছড়ি শহরের কলেজ সড়কে আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয় অবস্থিত। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত বুধবার সেখানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে ওড়ানো হয়। সঙ্গে ওড়ানো হয় আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা ও কালো পতাকাও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল সন্ধ্যায়ও পতাকাগুলো উড়ছিল।
দলীয় কার্যালয় হলেও ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর থেকে সেটি জেলা আওয়ামী লীগের সাময়িক বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম ও তাঁদের সমর্থকদের দখলে রয়েছে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁরা একবার তালা ভেঙে কার্যালয় দখল করেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে প্রশাসন তাঁদের বের করে দিয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক কর্মী জানান, ‘জাহেদুল আলম ও তাঁদের কিছু সমর্থক শোক দিবস উপলক্ষে গত বুধবার দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করে। এখন কেউ আর তা নামাচ্ছে না।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাতে জাতীয় পতাকা ওড়ানো একটি ‘অন্যায়’। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আরো দুটি বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী, শহীদ দিবস ও জাতীয় শোক দিবস ছাড়া সাধারণ কার্যদিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান নেই। কিন্তু জাতীয় শোক দিবস শেষ হওয়ার পরও পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া দুয়ের অধিক পতাকার সঙ্গে উত্তোলনকালে পতাকার সংখ্যা বিজোড় হলে বাংলাদেশের পতাকা থাকবে মাঝখানে। কিন্তু এখানে রাখা হয়েছে ডান পাশে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী নাজমুল হাসান বলেন, ‘এটি খুবই দায়িত্বহীনতার পরিচয়। জাতীয় পতাকার অবমাননাকারীদের আইনানুযায়ী বিচার হওয়া উচিত।’
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা জানান, ‘আমরা সেই দিন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর উদ্যোগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির বাসভবনসংলগ্ন দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা, দলীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন করেছি। কিন্তু দলীয় কার্যালয়টি বহিষ্কৃতদের দখলে। সেখানে কোনো ব্যতয় ঘটলে তার দায় জেলা আওয়ামী লীগ নেবে না। তবে জাতীয় পতাকার অবমাননা মেনে নেওয়া যায় না।’
এ ব্যাপারে জাহেদুল আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি।’ কালের কণ্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :