শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ০৬:৫১ সকাল
আপডেট : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ০৬:৫১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মান নিশ্চিত হচ্ছে না, তবু কেন অনুমোদনের জোয়ারে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৩টি। এগুলোর মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে ৯৫টিতে। তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগেরই শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।মান নিশ্চিতে অনিয়ম করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ম অনুযায়ী চলতে বারবার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হচ্ছে। তবু কাজের কাজ তেমন হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও একের পর এক অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের।

জানা যায়, দেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরই স্থায়ী ক্যাম্পাস নেই। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ। কয়েকটিতে চলছে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব। সরকারের গৃহীত আইনি ব্যবস্থার বিপরীতে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে ক্যাম্পাস চলছে কোনও কোনোটির। এছাড়া অনিয়ম করা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে এরই মধ্যে বন্ধও ঘোষণা করা হয়েছে।

ইউজিসি বলছে, বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখতে তেমন কোনও কার্যক্রম পরিচালনা করে না। গবেষণার জন্য নেই তেমন অর্থ বরাদ্দ, লাইব্রেরিতে নেই পর্যাপ্ত বই, নেই ল্যাব সুবিধা,ক্লাসরুমের সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। এতে করে শিক্ষার মান নিশ্চিত হচ্ছে না।

এ বছরের শুরু থেকে গত পাঁচ মাসে সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জানুয়ারির শেষের দিকে অনুমোদন পেয়েছে জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস। এপ্রিলে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ১৭ এপ্রিল খুলনায় খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহীতে আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২৮ এপ্রিল অনুমোদন পায় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহ মাখদুম ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়। ৩ জুন বরিশালের ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি এবং রাজধানারী মহাখালীতে কার্যক্রমের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটিকে।

সব মিলিয়ে দেশে ১০৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ৯৫টিতে। অথচ ক্যাম্পাস পরিচালনার অন্যতম শর্ত স্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে মাত্র ২০টির। এছাড়া স্থায়ী ক্যাম্পাস অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে আরও ছয় থেকে আটটি বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে সঠিক নিয়ম মেনেই আবেদন করেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু অনুমোদন দেওয়ার পর দেখা যায়, তাদের বেশির ভাগই অনিয়ম করে। তবে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম মেনে চলার চেষ্টাও করছে।

অনুমোদন প্রক্রিয়া বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সচিব বেলায়েত হোসেন তালুকদার বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ মেনে কোনও উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করলে তা যাচাই-বাছাই করে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে সাময়িক অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সাময়িক অনুমোদন পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সঠিক নিয়মে না চললে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘যেসব বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম মানে না সেখানে শিক্ষার মান নিশ্চিত হচ্ছে, সেটা বলা যাবে না। মান ঠিক রাখতেই সঠিক নিয়মে চলা উচিত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমত, ইউজিসি কোনও বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। অনুমোদন দেয় সরকার। এছাড়া আইনে বলা হয়েছে, শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করা যাবে না। এটা একটি সেবা প্রতিষ্ঠান। সেবার মানসিকতা নিয়ে যারা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে চায় তাদেরই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে এগিয়ে আসার আহ্বান করা হয়।’

মান নিশ্চিত করা সম্ভব না হওয়ার পরও একের পর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘দেশে এখনও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজনের তাগিদেই নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। তবে অনুমোদনের আগে বোঝা যায় না তারা নিয়ম মেনে চলবে না। অনিয়ম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থাও নিচ্ছি। আর সবাই তো অনিয়ম করছে না।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার মান নিশ্চিত করার প্রশ্নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিয়ম। ফলে আমরা চেষ্টা করছি নিয়ম না মানা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কীভাবে নিয়মের মধ্যে আনা যায়। আগের তুলনায় বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ভালো অবস্থানেও রয়েছে, নিয়ম মেনে চলছে। নতুন যাদের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে তারাও যে নিয়ম মানবে না, তা অনুমোদনের আগেই বলা যাবে না।’ সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়