ডেস্ক রিপোর্ট: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪১টি এনজিওর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এসব এনজিওর তৎপরতার ওপর আপত্তি দিয়ে এনজিও ব্যুরোতে চিঠি পাঠানো হয়। তবে কী কারণে এই আপত্তি, সে বিষয়ে ব্যুরোকে কিছু জানানো হয়নি।
রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশি তহবিল পাওয়া এনজিওগুলো বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনজিও ব্যুরোর কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নয়টি খাতে এসব অর্থায়ন হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে- খাদ্য, স্যানিটারি ল্যাট্রিন, বাথরুম, নলকূপ স্থাপন, আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, কম্বল বা কাপড় বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও গৃহস্থালি দ্রব্যাদি বিতরণ। তবে নিষিদ্ধ ঘোষিত এনজিওগুলো এখন আর এসব কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছে না।
এ প্রসঙ্গে এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক কেএম আব্দুস সালাম বলেন, ৪১টি এনজিওর কার্যক্রমে আপত্তি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদেরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এ আপত্তি দেওয়া হয়। তবে চিঠিতে আপত্তির কারণ জানানো হয়নি। সে পরিপ্রেক্ষিতে এসব এনজিওকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য কোনো তহবিল ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তবে দেশের অন্যান্য জায়গায় তারা স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারছে।
এনজিও নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া বিদেশি অনুদান বন্ধ করা যায় কি-না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এতে আইনগত কোনো বাধা নেই। তারা অন্য জায়গায় কাজ চালাতে পারবে। নিষিদ্ধ ঘোষিত এনজিওগুলোর মধ্যে রয়েছে-
ফ্রেন্ডশিপ, এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ, আল মারকাজুল ইসলাম, স্মল কাইন্ডনেস বাংলাদেশ, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, গ্রামীণ কল্যাণ, অগ্রযাত্রা, নেটওয়ার্ক ফর ইউনিভার্সাল সার্ভিসেস অ্যান্ড রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট, আল্লামা আবুল খায়ের ফাউন্ডেশন, ঘরনী, ইউনাইটেড সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট, পালস, মুক্তি, বুরো-বাংলাদেশ, এসএআর, আসিয়াব, এসিএলএবি, এসডব্লিউএবি, ন্যাকম, এফডিএসআর, জমজম বাংলাদেশ, আমান, ওব্যাট হেলপার্স, হেল্প কক্সবাজার, শাহবাগ জামেয়া মাদানিয়া কাসিমুল উলুম অরফানেজ, ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট ফর সোশ্যাল অ্যান্ড হিউম্যান অ্যাফেয়ার্স, লিডার্স, লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, অ্যাসোসিয়েশন অব জোনাল অ্যাপ্রোচ ডেভেলপমেন্ট, হিউম্যান এইড অ্যান্ড রিলিফ অর্গানাইজেশন, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিশ, হোপ ফাউন্ডেশন, ক্যাপ আনামুর, টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ইনকরপোরেশন, গরীব, এতিম ট্রাস্ট ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিষিদ্ধ ঘোষিত একাধিক এনজিওর কর্মকতারা এ প্রতিবেদককে বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই তাদের তহবিল ছাড় করা হচ্ছে না। কী কারণে কাজ চালাতে পারব না, তাও বলা হয়নি। এতে একদিকে বিদেশি তহবিল আসছে না, অন্যদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংশ্নিষ্ট কাজে জড়িত ব্যক্তিরা হঠাৎ কর্মহীন হয়েছেন। তারা বলেন, এনজিওগুলোর অপরাধ ও তার ভিত্তিতে প্রাপ্য শাস্তি বিষয়ে আইনের ১৪ ও ১৫ ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। তাদের কী অপরাধ, সেটা কিন্তু জানা যাচ্ছে না।
এর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিষিদ্ধ একাধিক এনজিওর ভিন্ন নামে সক্রিয় হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব এনজিওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
সূত্র: সমকাল
আপনার মতামত লিখুন :