শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের  ◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ০৪:৫৫ সকাল
আপডেট : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ০৪:৫৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় ও প্রয়োজনীয়তা

দিলাওয়ার আহমদ কাসেমী

সালাত বা নামাজ আল্লাহ তায়ালার মহান আদেশ এবং নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় রুকন বা স্তম্ভ। ঈমানের পরেই নামাজের স্তর। পাশাপাশি মহান আল্লাহর স্বীয় বান্দার প্রতি অশেষ অনুগ্রহ হলো, তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার বিনিময়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সওয়াব দান করবেন। এ যে, মানুষের জন্য একটি মহা প্রতিদান। যাতে মানুষ এ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে স্বাচ্ছন্দে গ্রহণ করে, এ কে অধিক মনে না করে এবং তা পড়তে কোনো ধরনের শিথিলতা ও অলসতাকে প্রশ্রয় না দেয়।
জামাতে নামাজ মুসলমানদের মধ্য সাম্য, আনুগত্য, একতা ও প্রকৃত ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়। জামাতে নামাজ ছোট-বড়, ধনী- গরীব, রাজা-প্রজা সবাই এক কাতারে দাঁড়ায়। এর দ্বারা অন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রয়েছে মুসলমানদের ঈমানের পরিপক্কতা ও অলসদের উৎসাহ প্রদানের উপকরণ। তাই জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার বেশ তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম কর, জাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারী সঙ্গে রুকু কর।’ (সুরা বাকারা:৪৩) অর্থাৎ তোমরা মুসল্লিদের সঙ্গে জামাতে নামাজ পড়ো। একা পড়ো না। (তাফসিরে জালালায়ন, বায়জাবি) কোরআন মাজিদে যুদ্ধ ও ভীষণ ভয়ের সময় জামাতে নামাজ পড়ার নির্দেশ এসেছে, যা ওয়াজিব হওয়ার প্রমাণ।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর তুমি যখন তাদের মধ্যে অবস্থান করবে ও তাদের সঙ্গে সালাত আদায় করবে তখন তাদের একদল তোমার সঙ্গে যেন দাঁড়ায় এবং তারা যেন সশস্ত্র থাকেন । তাদের সিজদা করা হলে তারা যেন তোমার পেছনে অবস্থান করে। আর অপর একদল যারা সালাতে শরিক হয় নাই তারা তোমার সঙ্গে যেন সালাতে শরিক হয় এবং তারা যেন সতর্ক ও সশস্ত্র থাকে।’ (সুরা নিসা: ১০২)

নবীজি (সা.) জামাত তরককারীদের ব্যাপারে কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমার ইচ্ছে হয়, মুয়াজ্জিনকে নির্দেশ দিই, সে সালাতের ইকামত বলে আর একজনকে আদেশ করি নামাজ পড়াবে অত:পর আমি একটি অগ্নিকু- নিয়ে বের হই এবং যারা নামাজে উপস্থিত হয়নি তাদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দিই।’ (বুখারি: ৬১৭)

অন্য এক হাদিসে বলেন, ‘কোনো জনপদ বা উপত্যকায় তিনজন লোক বিদ্যমান অথচ সেখানে জামাতে নামাজ পড়া হয় না। তখন তো তাদের ওপর শয়তান প্রভাব বিস্তার করবে। সুতরাং তোমরা অবশ্যই জামাতে নামাজ পড়বে। কেননা বাঘ সাধারণত পাল হতে বিছিন্ন ভেড়াটাকেই আক্রমন করে।’ (আবু দাউদ: ৮৩৮)
হাদিসের ভাষায়, ‘যে ব্যক্তি আজান শোনার পরও নামাজে উপস্থিত হলো না। তার (ঘরে) নামাজ আদায় হবে না। তবে হ্যাঁ, ওযর থাকলে ভিন্ন কথা।’ (ইবনে মাজাহ: ৭৮৫) নবী করিম (সা.) বলেন, ‘মুনাফিকের জন্য এশা ও ফজরের সালাত যতটুকু ভারি অন্য কোন নামাজ তত ভারি নয়। তারা যদি এদুই নামাজের সওয়াব সম্পর্কে জানতো, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে (অর্থাৎ খুব বেশি কষ্ট করে) হলেও তারা এ দুই নামাজে উপস্থিত হতো। (বুখারি: ৫৮০) তিনি আরো বলেন, ‘সেই ব্যক্তির ওপর আল্লাহর অভিশাপ, যে আজান শুনেও জামাতে হাজির হয় না। (মাজমাউজ-জাওয়াইদ) বিশিষ্ট সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, (রাযি.) বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে দেখেছি, জামাতে হাজির হওয়া থেকে একমাত্র পরিচিত মুনাফিক ছাড়া অন্য কেউ অনুপস্থিত থাকতো না। এমনকি কোন কোন লোককে দেখা যেত দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তাকে নিয়ে আসা হত। তারপর তাকে নামাজের কাতারে দাঁড় করানো হত। (মুসলিম: ১০৪৬) আবু দরদা (রাযি.) বলেন, আল্লাহর শপথ, উম্মতে মুহাম্মদির জন্য জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া থেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু আছে বলে আমার জানা নেই।’ (বুখারি)

পরনিন্দা থেকে বেঁচে থাকার ৪ উপায়
আবুল কাশেম ইয়াছিন

পরনিন্দা বলা হয় ‘কারো পেছনে তার এমন দোষের কথা উল্লেখ করা, যা সে গোপন রেখেছে অথবা যার উল্লেখ সে অপছন্দ করে।’ (মু’জামুল ওয়াসিত) পরনিন্দার সবচেয়ে উত্তম ও বাস্তবসম্মত সংজ্ঞা আমরা রাসূল (সা.) এর নিম্মোক্ত হাদিস থেকে পেতে পারি। সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘গীবত (পরনিন্দা) কাকে বলে, তোমরা জান কি?’ সাহাবিগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি (সা.) বললেন, ‘তোমার কোনো ভাই (দীনি) সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তা-ই গীবত বা পরনিন্দা।’

সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যে দোষের কথা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের থাকে তবে তুমি অবশ্যই তার গীবত করলে। আর তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছ।’ (মুসলিম) সুতরাং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, কোনো ভাইয়ের এমন দোষের কথা বলা গীবত, যা সে অপছন্দ করে। অর্থাৎ কারো দোষারোপ করা, পরচর্চা করা, কুৎসা রটনা করা, পিছে সমালোচনা করা ইত্যাদি। ইসলামি শরিয়তে গীবত বা পরনিন্দা হারাম ও কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন “ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়।” (সূরা হুমাজাহ-১) রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন- “পরনিন্দা ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক গুনাহ। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, এটা কিভাবে? তিনি বললেন, ব্যক্তি ব্যভিচার করার পর তওবা করলে তার গোনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু গীবত বা পরনিন্দা যে করে তার গোনাহ আক্রান্ত প্রতিপক্ষের ক্ষমা না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।”

পরনিন্দা থেকে বেঁচে থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই আসুন, পরনিন্দা থেকে বেঁচে থাকার ৪ টি উপায় জেনে নিই। ১. অপরের কল্যাণ কামনা করা। কেননা, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘দীন হচ্ছে কল্যাণ কামনা করা।’ ২. আত্মত্যাগ। অর্থাৎ যেকোনো প্রয়োজনে অপর ভাইকে অগ্রাধিকার দেয়া। যেমন আল্লাহ সূরা হাশরের ৯ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘তারা নিজের ওপর অন্যদের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেয়, যদিও তারা অনটনের মধ্যে থাকে।’ ৩. অপরের অপরাধকে ক্ষমা করে দেয়া। ৪. মহৎ ব্যক্তিদের জীবনী বেশি বেশি করে অধ্যয়ন করা। পরনিন্দা একটি জঘন্য পাপাচার। এ থেকে সবাইকে সতর্কতার সাথে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহপাক আমাদের গীবত (পরনিন্দা) করা ও শোনা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়