শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৪৯ সকাল
আপডেট : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ০৯:৪৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিচার চলছে ঢিমেতালে

ডেস্ক রিপোর্ট : সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল ১৩ বছর আগে। এসব ঘটনায় হওয়া ১৫৯টি মামলার মধ্যে বিচারিক আদালতে রায় হয়েছে ১১৬টির। সাক্ষীর অভাবে বাকি মামালাগুলোর বিচারকাজ চলছে ঢিমেতালে। বারবার সমন দিয়েও সাক্ষীদের হাজির করা যাচ্ছে না। আইনজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা আরও সুরক্ষিত করতে হলেও চাঞ্চল্যকর এসব মামলার বিচার দ্রুত শেষ করা উচিত। বিচারে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আর কেউ এমন অপরাধে জড়াতে সাহস পাবে না।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলার (মুন্সীগঞ্জ বাদে) ৪৫০টি স্থানে সিরিজ বোমা হামলার মাধ্যমে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা প্রকাশ্যে অবস্থান জানান দেয়। ওই হামলায় দুজন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এরপর বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তার পরও নামে-বেনামে বারবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে নানা জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০০৫ সালে জেএমবির ওই ঘটনায় দেশের ৬৩ জেলায় ১৬২টি মামলা হয়। ৩টি খারিজ হওয়ায় অবশিষ্ট থাকে ১৫৯টি মামলা। এতে আসামি করা হয় ১ হাজার ১০৬ জনকে। এসব মামলার মধ্যে ১৪৯টিতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। আর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে ১০ মামলায়। এখন পর্যন্ত ২৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৩৩৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। আর খালাস পেয়েছে ৩৪৯ আসামি। রায় হয়েছে ১১৬টি মামলার। আর বর্তমানে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৪৩।

জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি উঠে গেছে। এখন যে কোনো অপরাধেরই বিচার হয়। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্টে সারা দেশে যে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল, ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর বিচার চলমান রয়েছে। দ্রুতই এসব মামলার বিচার শেষ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এসব মামলা মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা আইন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, অনেক মামলায় সাক্ষীদের না পাওয়ার কারণে মামলা শেষ করতে সময় বেশি লেগে যাচ্ছে। বেশির ভাগ সাক্ষীর ঠিকানাও পরিবর্তন করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করে আসছে। তার পরও জঙ্গিদের যাতে কঠোর সাজা হয় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা সেভাবেই মামলা পরিচালনা করছেন।

পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, মামলার কার্যক্রম শেষ না হওয়াতে পুলিশের কোনো ব্যর্থতা নেই। কারণ এ ক্ষেত্রে আদালতের কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া অনুসারে আদালতের কিছু তথ্য-উপাত্ত চাওয়া-পাওয়া রয়েছে। মূলত এসবের জন্য মামলাগুলো নিষ্পত্তি হতে একটু সময় লাগছে।

পুলিশসূত্র জানায়, ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার পর জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, খালেদ সাইফুল্লাহ, আবদুল আউয়াল, হাফেজ মাহমুদসহ প্রায় সাড়ে সাত শ জঙ্গি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা মামলায় জেএমবি-প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ সাতজনের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই, খালেদ সাইফুল্লাহ, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হাসান আল মামুনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। চাঞ্চল্যকর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের মানুষ একটা ভীতির মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। দেশে ঠিক কী হতে যাচ্ছে কেউ বুঝে উঠতে পারছিল না। এরপর জঙ্গিরা দেশে আরও বেশকিছু অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। তবে বর্তমান সরকার জঙ্গিদের কঠোরভাবে দমন করেছে।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার বলেন, দেশের মানুষকে যেন আর কেউ ভয় না দেখাতে পারে, এজন্যই সিরিজ বোমা হামলার ঘটনার মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। এতে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা আরও বেশি সুরক্ষিত হবে। পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন ছাড়া মামলার কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই এ ক্ষেত্রে পুলিশকে আরও তৎপর হতে হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়