ডেস্ক রিপোর্ট : সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে আদালতের মতামত চেয়েছে সরকার। গত রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের মাধ্যমে এ মতামত চাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ সফিউল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তাঁরা কোটা প্রায় তুলে দেওয়ার সুপারিশ করবেন। তবে রায় থাকার কারণে মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে আদালতের মতামত চাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আদালতের মতামত পাওয়া গেলেই তাঁরা তাঁদের প্রতিবেদন সরকারপ্রধানের হাতে তুলে দেবেন। মুক্তিযোদ্ধা
কোটা ছাড়া বাকি কোটার বিষয়ে তাঁরা সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। এখন অপেক্ষা আদালতের মতামতের।
যে মামলার রায়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তা মানা বাধ্যতামূলক কি না জানতে চাওয়া হলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মামলাটি সরাসরি পিএসসির নিয়োগসংক্রান্ত নয়। অন্য একটি মামলার রায়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই এই পর্যবেক্ষণ পাশ কাটানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে কেউ এর দায়িত্ব নিচ্ছে না। তাই আদালতের মতামত নেওয়াটাই শ্রেয় মনে করা হচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, আদালত মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের নির্দেশ দিলেও অনেক ক্ষেত্রেই সরকার তা সংরক্ষণ করেনি। বিভিন্ন বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধা কোটার প্রার্থী না পাওয়া যাওয়ায় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে মেধাতালিকার শীর্ষে থাকা প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মানতে হলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ না হলে তা শূন্য রাখা দরকার ছিল।
এদিকে সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ৩১ আগস্টের মধ্যে কোটাসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ফের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২ জুলাই কোটাব্যবস্থা পর্যালোচনা করে তা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সুপারিশ দিতে মন্ত্রিপরিষদসচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব, অর্থসচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ের সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব। এই কমিটির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। ৮ জুলাই প্রথম সভা করে কমিটি। পরে কমিটির মেয়াদ আরো ৯০ কার্যদিবস বাড়ানো হয়।
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ৫৫ শতাংশ নিয়োগ হয় কোটায়। বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধার ভিত্তিতে। বিসিএসসহ প্রথম শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০, জেলা কোটা ১০, নারী কোটা ১০ এবং উপজাতি কোটা ৫ শতাংশ। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতেও আছে বিভিন্ন ধরনের কোটা। কালের কণ্ঠ
আপনার মতামত লিখুন :