ডেস্ক রিপোর্ট : টানা দুই ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠে এসেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ মেয়েরা। এবার তাদের লক্ষ্য ফাইনাল। আজ থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭টায় স্বাগতিক ভুটানের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এর আগে বিকাল ৪টায় প্রথম সেমিফাইনালে ভারত লড়বে নেপালের বিপক্ষে। সেমিফাইনালে জয়ীরা আগামী ১৮ আগস্ট ফাইনালে মুখোমুখি হবে।
স্বাগতিক ভুটানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সতর্ক বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। গ্রুপপর্বে নেপালের বিপক্ষে ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয়ের পর সেই সতর্কতা আরও বেড়ে গেছে। কারণ যে নেপালকে গত আসরে ৬-০ তে পরাজিত করেছিল, সেই দলের বিপক্ষে এবার ৩-০ গোলের ব্যবধানে জিতেছে মারিয়ারা। গত আসরে অবশ্য ভুটানকেও হারিয়েছিল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। সেবার ব্যবধান ছিল ৩-০ গোলের। এরপরও স্বাগতিকদের নিয়ে বাড়তি সতর্কতা লাল-সবুজদের।
এর কারণও যথেষ্ট। স্বাগতিক হওয়ার বাড়তি সুবিধা তো থাকছেই, এরপর নিজেদের পরিচিত টার্ফ, ঘরের দর্শকদের সামনে খেলবে ভুটানের মেয়েরা। এত সব প্রতিকূলতা পেছনে ফেলে ম্যাচ বের করে আনতে হবে মারিয়া বাহিনীকে। এ জন্য অবশ্য প্রস্তুত রয়েছে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ভুটান ম্যাচের আগে দুই দিন টানা অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছে বাংলার কিশোরীরা। অনুশীলনে ভুটানের শক্তিশালী এবং দুর্বল দিকগুলো নিয়ে দলকে নিদের্শনা দিয়ে রেখেছেন ছোটন। এখন মাঠে নেমে কোচের পরিকল্পনা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারেন মারিয়া- সেটাই দেখার।
টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪-০ গোলে জয়ের পর, নেপালকে হারায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে। টানা দুই জয়ে দলের আত্মবিশ্বাসের পালে লেগেছে রঙিন হাওয়া। অনুশীলনের ফাঁকে খুনসুটি করতে দেখা গেছে মেয়েদের। তবে আনন্দের ফাঁকে নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে দারুণ সচেতন ছোটন শিষ্যরা। তাদের এখন একটাই লক্ষ্য, ভুটানকে হারিয়ে ফাইনাল খেলা।
দলের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও সমুজ্জ্বল মারিয়া বাহিনী। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ৪ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছেন বাংলাদেশের শামসুন্নাহার এবং ভারতের সিল্কি দেবী। তিনটি করে গোল করেছেন বাংলাদেশের তহুর খাতুন, সাজেদা খাতুন এবং ভুটানের সোনম লামহো। আজ ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে শামসুন্নাহার, তহুরা, সাজেদাদের পায়ের দিকে যে চেয়ে থাকবে দল।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের এটি দ্বিতীয় আসর। গত বছর ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথমটি। চার জাতির ওই আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। এবার অবশ্য দলের সংখ্যা দুটি বেড়েছে। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এবার খেলছে। তবে এই দুটি দল গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে। টুর্নামেন্টের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে আরেকটি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল হলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না! কারণ এই দুই দলই পরিষ্কারভাবে ফেভারিট।
টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আগে দীর্ঘ অনুশীলন করেছে বাংলার মেয়েরা। সেই পরিশ্রমের স্বাক্ষর ইতোমধ্যে গ্রুপপর্বের দুই ম্যাচে রেখেছেন মারিয়ারা। এখন সেমিফাইনালে রাখার পালা। টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আগে বাংলাদেশ কোচ ছোটন বলেছিলেন, শিরোপা জেতাই আমাদের লক্ষ্য। তবে ম্যাচ বাই ম্যাচ পরিকল্পনা করে এগুতে চাই। ছোটন নিজের লক্ষ্যের প্রতি অটল-অবিচল। ধাপে ধাপেই দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এখন দলকে ফাইনালে তুলে আনতে পারেন কিনাÑসেটাই দেখার বিষয়।
সূত্র : দৈনিক আমাদের সময়
আপনার মতামত লিখুন :